নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) উদ্যোগটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। ঘরোয়া লিগ বা টুর্নামেন্টে যে বোলারদের বোলিং অ্যাকশন সন্দেহজনক মনে করা হয়, তাঁদের অ্যাকশন ত্রুটিমুক্ত করতে পরীক্ষা নেয় বোলিং রিভিউ কমিটি। নিজের বোলিং অ্যাকশন সংশোধন করে রিভিউ কমিটির ছাড়পত্র নিয়ে ফের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান ‘অভিযুক্ত’ বোলার। কিন্তু সঞ্জীত সাহার ঘটনটা ব্যতিক্রম। ডানহাতি এই অফ স্পিনার পড়েছে এক চক্রপাকে। তাঁর বোলিং অ্যাকশন সন্দেহবিদ্ধ হয়, তিনি বিসিবির কাছে পরীক্ষা দেন, ছাড়পত্র পেয়ে খেলতে গেলেই আবারও সন্দেহের মধ্যে পড়েন। এভাবেই চলছে...
গত দুই বছরে একটি বৃত্তের মধ্যে আটকে গেছেন সঞ্জীত। মাঠে আম্পায়াররা তাঁর বোলিং অ্যাকশন সন্দেহজনক হিসেবে রিপোর্ট করবেন। তিনি রিভিউ কমিটির কাছে পরীক্ষা দেবেন। সে পরীক্ষায় উত্তর্ঢু হয়ে আবারও খেলার সুযোগ পাবেন। এবং ফের তাঁর বোলিং অ্যাকশন সন্দেহজনক হিসেবে চিহ্নিত হবে! ২১ বছর বয়সী এই তরুণ স্পিনারের বোলিং অ্যাকশন প্রথম আম্পায়ারদের অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে আসে দেশের মাঠে হওয়া ২০১৬ যুব বিশ্বকাপে। দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়ে সেই টুর্নামেন্ট শেষ করতে পারেননি সঞ্জীত । অ্যাকশন বদলে আইসিসির গবেষণাগারে পরীক্ষা দিয়ে উত্তর্ঢু হয়ে তিনি অবশ্য কমাসের মধ্যেই খেলায় ফেরেন।
ফিরেও সেই একই পরিণতি। গত দুই বছরে ঘরোয়া ক্রিকেটে দুবার তাঁকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে রিভিউ কমিটির কাছে। দুবারই বিসিবির ছাড়পত্র পেয়ে ফের খেলার সুযোগ পেয়েছেন। সঞ্জীত সবশেষ খেলেছেন বিপিএলে, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে। আবারও তাঁর বোলিং অ্যাকশনকে ‘সন্দেহজনক’ বলেছেন আম্পায়াররা। আবারও তাঁকে পরীক্ষা দিতে হবে রিভিউ কমিটির কাছে। বারবার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সঞ্জীত মানসিকভাবে বিপর্যস্তই হয়ে পড়েছেন, ‘আমি বারবার রিভিউ কমিটির কাছে পরীক্ষা দিচ্ছি, ছাড়পত্র পাচ্ছি। কিন্তু ম্যাচ খেলতে গেলেই আম্পায়াররা আপত্তি জানাচ্ছেন। অনেকে বলেছেন রিভিউ কমিটির কাছে আমি যেভাবে পরীক্ষা দিই, ম্যাচে না কি সেভাবে বোলিং করি না। ম্যাচের চাপে অনেক সময় অ্যাকশনে ত্রুটি হয়ে যায়। কিন্তু আমার বোলিং ভিডিও দেখেই তো ছাড়পত্র দিচ্ছে। রিভিউ কমিটির কাছে অ্যাকশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই খেলার অনুমতি পাই। তবুও খালি চোখে কেন সন্দেহজনক মনে হয় বুঝতে পারছি না!’
ম্যাচে একজন বোলারের বোলিং অ্যাকশন যদি বারবার ত্রুটিপূর্ণ হয়, তিনি কীভাবে বিসিবির বোলিং রিভিউ কমিটির ছাড়পত্র পান? রিভিউ কমিটি তো খালি চোখে পরীক্ষা নেয় না, উন্নত প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েই অ্যাকশন পর্যবেক্ষণ করা হয়। বিসিবির রিভিউ কমিটির সঙ্গে যুক্ত ও ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন ম্যানেজার নাসির উদ্দিন আহমেদ সঞ্জীতের বারবার সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশন নিয়ে বললেন, ‘আম্পায়াররা যদি সন্দেহজনক মনে করে তাহলে তো কিছু বলার নেই। ও এখানে অ্যাকশন বদলে ছাড়পত্র পায়। আবার ম্যাচে হয়তো কখনো কখনো আগের অ্যাকশনে ফিরে যায়। হতে পারে সেই বলগুলো আম্পায়ারদের সন্দেহজনক মনে হয়। ওর ম্যাচের বলগুলো আবার দেখতে হবে।’ সঞ্জীতের অবশ্য দাবি, যুব বিশ্বকাপে রিপোর্টেড হওয়ার পর তিনি যে অ্যাকশন বদলেছেন, সেই অ্যাকশনেই ধারাবাহিক বোলিং করে যাচ্ছেন, ‘সব জায়গায় আমি একই অ্যাকশনে বোলিং করি। আমার বোলিংয়ের ভিডিও মিলিয়ে দেখলেও বোঝা যাবে।’
সঞ্জীতের মতো অবশ্য আলিস আল ইসলামের অভিজ্ঞতা পুরোপুরি এক না হলেও কিছুটা মিল আছে। তিনি প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলার সময় অভিযুক্ত হয়েছিলেন। তবুও বিপিএল খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বিপিএলে আবির্ভাবেই বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ফেলেছিলেন ঢাকা ডায়নামাইটসের অফ স্পিনার আলিস। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অন্য বাস্তবতার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। ওই ম্যাচের প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্স ম্যাচ শেষেই আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলেছিল, আলিসের অ্যাকশনে সমস্যা আছে, বিশেষ করে তাঁর দুসরার অ্যাকশন সন্দেহজনক। আম্পায়ারদের রিপোর্ট অনুযায়ী ঢাকার এই বোলারের প্রতিটি ডেলিভারির অ্যাকশনই ছিল সন্দেহজনক।
বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটসের আলিস, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের সঞ্জীতের সঙ্গে রংপুর রাইডার্সের ডানহাতি অফ স্পিনার নাহিদুল ইসলাম এবং সিলেট সিক্সার্সের তৌহিদ হৃদয়ের বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছে বিসিবি। পরে সেই অভিযোগ পর্যালোচনা করে এই চার বোলারের অ্যাকশনে ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে বিসিবির অ্যাকশন রিভিউ কমিটি। পরীক্ষা দিয়ে বোলিং অ্যাকশন শোধরানোর আগ পর্যন্ত এই চার বোলার বোলিং করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে বিসিবি। ত্রুটিপূর্ণ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে অভিযুক্ত এই চার বোলারের বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা নেওয়া হবে এই সপ্তাহে। পরীক্ষা শেষে চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হবে কার অ্যাকশন কতটা শুদ্ধ। পরীক্ষায় যাদের অ্যাকশন ত্রুটিপূর্ণ ধরা পড়বে, তাঁদের আনা হবে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে।
এবার কি আছে সঞ্জীত-আলিসদের ভাগ্যে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।