বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পাবনার চর কোমরপুর পদ্মা নদী কোলে ঘাপটি মেরে থাকা বিরল প্রজাতির সেই কুমিরটি অবশেষে জেলেরাই ধরে ফেলেছেন। তাদের জালে আটকে গেছে বহুল আলোচিত বর্ষার সময় ভারতের গঙ্গা নদী বেয়ে পদ্মা নদী পথে পাবনার কোমরপুর চরের পদ্মাকোলে আসা কুমিরটি । ৩ মাস আগে কুমিরটি একটি জেলে নৌকায় আক্রমণ করলে বিষয়টি জানা জানি হয়ে যায়। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের লোকজন আসেন। তারা বলেছিলেন, কুমিরটি যেখানে আছে, এটি উপযুক্ত স্থান, প্রচুর মাছও আছে এই খালে উত্যক্ত না করে এই খালেই কুমিরটি থাক। এলাকাবাসী বলেন, ‘ডাঙ্গায় বাঘ আর জলে কুমির নিয়ে বাস করা যায় না।’ এলাকার লোকজন নদীতে গোসল, বাসন-মাজা, কাপড় কাঁচা ছেড়ে দেন। জেলেরা মাছ ধরতে এই স্থানে আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন এলাকাবাসীর মনোভাব উপলব্দি করেন এবং কুমিরটি ধরার জন্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণকে অবহিত করেন। ডিসেম্বর মাসে রাজশাহী থেকে কুমির ধরতে একটি টিম আসেন। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের , পাবনার ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ও স্থানীয় জেলেরা সার্বিক সহযোগিতা দেন। কিন্তু কুমির ধরা দলটি কুমিরটিকে আর খুঁজে না পেয়ে ফিরে যান।
এলাকাবাসীর মধ্যে থেকে যায় কুমির আতংক। আত্মগোপনে চলে যাওয়া কুমির ফের মাথা তোলে। বিগত ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচনে ভোট ক্যাম্পেইনে গিয়ে কুমিরটি আবার দেখতে পান জাপা প্রার্থী আব্দুল কদর খান। তিনি পাবনা প্রেসক্লাবে এসে বিষয়টি জানান। দৈনিক ইনকিলাবসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সেই কুমির মাথা তুলেছে এই খবর প্রচারিত হয়। অবশেষে বন্যসংরক্ষণ দপ্তরের লোকজন নয়, সাহসী জেলেরাই জালে আটকে ফেলেন গত মঙ্গলবার কুমিরটিকে। প্রায় ৭-৮ ফুট লম্বা কুমির দাঁত দিয়ে জাল কাটার চেষ্টা করে। টেনে তোলা হয় পাড়ে। ভাড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো আবু সাঈদ
‘কুমির ধরা পরার পর পাবনা জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগকে জানান।’ মঙ্গলবার রাতে বন বিভাগের উইং বন্যপ্রাণী রক্ষা দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং কুমিরটি সংরক্ষণ করে মঙ্গলবার রাতে নিয়ে যান। এখন তারা বলেছেন, এই কুমিরটি আগের সেই কুমির কিনা সেটা নিশ্চিত নন।
এই এলাকার মৎস্যজীবী জেলে আবদুল হালিম এবং অপর জেলেরা জানান তাঁরা কুমিরের ভয়ে পদ্মা নদীর এই স্থানে মাছ ধরতে যাচ্ছিলেন না। মঙ্গলবার চর কোমপুর থেকে ৩ -৪ কিলো মিটার দূরে ভাড়ারা ইউনিয়নে পদ্মা কোলে মাছ ধরার জন্য নদীতে জাল ছড়িয়ে দিলে খুব ওজনের একটা কিছু জালে আটকে যায়। ধীরে ধীরে ১৫-২০ জনের জেলে দল জাল টেনে কাছে আনতেই ফুঁসে ওঠে কুমির। জাল কেটে বের হওয়ার চেষ্টা করে। নদী পাড়ে কুমিরটিকে তুলে জালে আটকে রাখা হয়। ভাড়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেব বিষয়টি প্রশাসনকে জানান। মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী থেকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দল ঘটনাস্থলে আসেন এবং জীবিত অবস্থায় কুমিরটি নিয়ে যান। বন কর্মকর্তাদের মতে, এটি ৫০ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বিরল প্রজাতির কুমির।
"উদ্ধারকৃত কুমিরটি চরকোমরপুরে দেখা পাওয়া সেই কুমিরটি কিনা এ নিয়ে এখনও তারা নিশ্চিত নন।’’ পরে চর কোমরপুরে আবার কুমির ধরার অভিযান চালানো হবে। এরপর নিশ্চিত হওয়া যাবে, চর কোমর পুরের সেই কুমিরটি ইতোপূর্বে অভিযানের সময় আত্মগোপন করে দূরে সরে থাকা সেই কুমিরটি কিনা। এখন প্রশ্ন হলো, জেলেরা অনেক সাহস করে কুমিরটি ধরেছেন। এরপরও থেকে যাচ্ছে কুমির আতংক । তারা বলছেন, দেখা যাক কুমির পারে নাকি জেলেরা। প্রয়োজনে কোমরপুর চরের ঐ স্থানে তারা আট-ঘাট বেঁধে যাবেন।কারণ এর আগে তাদের একটি জেলে নৌকায় ঐ কুমিরটি আক্রমণ করেছিল। তবে জেলেদের ধারণা , এটি সেই পূর্বের কুমিরটি হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।