নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে নিজের করে নিয়েছেন সম্ভাব্য প্রায় সব রেকর্ড। সর্বোচ্চ রান, সেঞ্চুরি কিংবা জুটিতে সেরা- সর্বত্রই ছড়ি ঘুরিয়েছেন আপন মহিমায়। সেই তামিম ইকবালই এবারের বিপিএলে যেন বাক্সবন্দী। সেভাবে জ্বলে উঠছিল না ব্যাট। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি তো বটেই, সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়েও এই বিপিএলেই চট্টগ্রামে দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তামিম ছুঁয়েছেন ৫ হাজার রান। তারপরও আক্ষেপ ছিল, ভালো শুরুটা প্রায় সময়ই বড় করতে পারছিলেন না বাঁহাতি এই ওপেনার।
গতকালের আগ পর্যন্ত খেলা ১৩ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৭৫ যেন অনেকটাই ম্লান এই বিদ্ধংসী ব্যাটসমানের পাশে। অবশেষে সফল হলেন ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে নিজের ‘প্রথম’ ফাইনালে এসে। দাপুটে ব্যাটিংয়ে করলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের রেকর্ডে নিজেকেই ছাড়িয়ে গেলেন তামিম। গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৬১ বলে ১১ ছক্কা আর ১০ চারে ১৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ড্যাশিং এই ওপেনার।
ব্যাটিংয়ের পর ফিল্ডিংয়েও তামিম কাল কেমন ছিলেন তা না বললে তামিমবন্দনা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। লং অন থেকে দৌড়ে এসে সাকিব আল হাসান ও কিরণ পোলার্ডের যে ক্যাচ দুটি নিলেন তা ছিল সত্যিই অবিশ্বাস্য।
২০১৩ সালে বিজয় দিবস ক্রিকেটে বিসিবি একাদশের হয়ে মোহামেডানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। সেই ম্যাচে করা তার ১৩০ রান এতো দিন ছিল টি-টোয়েন্টি বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ। নিজের রেকর্ডই নতুন করে গড়লেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে তামিম ছুঁয়েছিলেন তিন অঙ্ক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টিতে সেটাই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের একমাত্র সেঞ্চুরি।
তামিমের শুরুটা ছিল মন্থর। খেলছিলেন দেখেশুনে। প্রথম ২০ বলে করেন ২৪ রান। কাজী অনিকের বলে কিপার নুরুল হাসান সোহানের হাতে জীবন পাওয়ার পর বদলে যায় খেলার ধরন। চড়াও হন বোলারদের ওপর। রান আসে বানের স্রোতের মতো।
৩১ বলে ছুঁয়ে ফেলেন ফিফটি। ৫০ বলে যান তিন অঙ্কে। অর্থাৎ পরের পঞ্চাশ আসে মাত্র ১৯ বলে। তামিম ঝড় থামেনি এরপরেও। বোলারদের তুলাধুনো করে দলকে নিয়ে যান দুইশ রানের কাছে। কুমিল্লা ৩ উইকেটে করে ১৯৯ রান।
মাঠ ছাড়ার সময় ৬১ বলের ইনিংসটির পাশে জ¦লজ¦লে ১০টি চার ও ১১টি ছক্কা। দু’বার অল্পের জন্য পান জীবন, থিতু হওয়ার পর তামিম খেলতে থাকেন একের পর এক শট। এ দিন যা চেয়েছেন, সবই যেন করতে পেরেছেন তামিম। এমনকি ব্যাটের কানায় লাগা বলগুলিও গুলির বেগে ছুটেছে বাউন্ডারিতে। আরেকপাশের ব্যাটসম্যান তখন কেবল দর্শক। দ্বিতীয় উইকেটে ৮৯ রানের জুটিতে এনামুলের রান ছিল ৩০ বলে ২৪। চতুর্থ উইকেটে ৪৫ বলে ১০০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ইমরুলের রান ২১ বলে ১৭। গোটা ইনিংস ছিল যেন তামিম-শো। সাকিবের ১০ বলে ৩০ রান নিয়েছেন তামিম, রাসেলের ১৫ বলে ৩২। এবারের আসরের অন্যতম সেরা বোলার রুবেলের ১৩ বলে নিয়েছেন ৩৭ রান!
শাহরিয়ার নাফিস, মোহাম্মদ আশরাফুল ও সাব্বির রহমানের পর বাংলাদেশের চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে বিপিএলে সেঞ্চুরি করলেন তামিম। সাব্বিরের ১২২ ছিল এতোদিন বিপিএলে স্থানীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেই রান ছাড়িয়ে একটুর জন্য ধরতে পারেননি ক্রিস গেইলকে। গত আসরের ফাইনালে ঢাকার বিপক্ষেই রংপুর রাইডার্সের ওপেনার গেইল খেলেন অপরাজিত ১৪৬ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস। সেটাই বিপিএলের সর্বোচ্চ।
এক নজরে বিপিএল ২০১৮/১৯
চ্যাম্পিয়ন : : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
রানার্স আপ : ঢাকা ডায়নামাইটস
ম্যান অব দ্য ফাইনাল : তামিম ইকবাল (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)
ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট : সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস)
বিপিএলের সেরা ৫
ব্যাটসম্যান
ম্যাচ ইনিংস রান সর্বোচ্চ গড় ১০০/৫০
রুশো (রংপুর) ১৪ ১৩ ৫৫৮ ১০০* ৬৯.৭৫ ১/৫
তামিম (কুমিল্লা) ১৪ ১৪ ৪৬৭ ১৪১* ৩৮.৯১ ১/২
মুশফিক (চট্টগ্রাম) ১৩ ১৩ ৪২৬ ৭৫ ৩৫.৫০ ০/৩
পোরান (সিলেট) ১১ ১১ ৩৭৯ ৭৬* ৪৭.৩৭ ০/৩
ইভান্স (রাজশাহী) ১১ ১১ ৩৩৯ ১০৪* ৩৭.৬৬ ১/২
বোলার
ম্যাচ ইনিংস উইকেট সেরা গড় ৪/৫
সাকিব (ঢাকা) ১৫ ১৫ ২৩ ৪/১৬ ১৭.৬৫ ১/০
তাসকিন (সিলেট) ১২ ১২ ২২ ৪/২৮ ১৪.৪৫ ২/০
মাশরাফি (রংপুর) ১৪ ১৪ ২২ ৪/১১ ১৭.৫৯ ১/০
রুবেল (ঢাকা) ১৫ ১৫ ২২ ৪.২৩ ১৮.৫০ ২/০
সাইফউদ্দিন (কুমিল্লা) ১৩ ১৩ ২০ ৪/২২ ১৭.৮০ ১/০
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।