পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রায় পৌনে চার শতাধিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে ১০ একর মূল্যবান ভ‚মি উম্মুক্ত করার মধ্যদিয়ে গতকাল শুক্রবার কর্ণফুলী নদী রক্ষায় প্রথম পর্যায়ের অভিযান প্রাথমিকভাবে শেষ করা হয়েছে। টানা পাঁচ দিনের সাঁড়াশি অভিযানে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ নদীতীরে উম্মুক্ত করা হয়েছে ছোট-বড় পাঁচটি খালের মুখ। এ পর্যন্ত ৩৮০টি স্থাপনা উচ্ছেদ হয়েছে। জেলা প্রশাসন বহুতল ভবনসহ ২৩০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে। নিজেদের উদ্যোগে আরও ১৫০ স্থাপনা সরিয়ে নেয় দখলদারেরা। তবে পতেঙ্গায় কর্ণফুলীর মোহনা থেকে কালুরঘাট রেলসেতু পর্যন্ত এখনও অক্ষত দুই হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা।
নগরীর সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত এলাকায় আজ শনিবার থেকে গুঁড়িয়ে দেওয়া ভবনের জঞ্জাল পরিস্কারের কাজ শুরু হবে। একই সাথে যেকটি ভবন আংশিক ভাঙ্গা হয়েছে সেগুলোও সরিয়ে নেয়া হবে। সীমানা পিলার ও তার কাটার বেড়া দিয়ে উদ্ধারকৃত জমি নিজেদের দখলে নেওয়ার পরই ওই অংশের উচ্ছেদ অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করবে চট্টগ্রাম জেলা প্রসাশন।
গতকাল ছুটির দিনেও দিনভর অভিযান চলে। উচ্ছেদ করা হয় তিনটি চারতলা গুদাম, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনসহ ছোট-বড় বেশ কয়েকটি স্থাপনা। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি লবণের কারখানা ও বস্তিঘর। সকাল থেকে শতাধিক শ্রমিক উচ্ছেদ অভিযানে নামে। ছিল র্যাব-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের দুই শতাধিক সদস্য। জেলা প্রশাসনের দুই ম্যাজিস্টেটের নেতৃত্বে অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয় সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, চট্টগ্রাম বন্দরসহ ১০টি সংস্থার প্রতিনিধিরা। বিকেলে সরেজমিন দেখা যায় লংবুম এস্কভেটরের গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে আনুমাঝির ঘাট সংলগ্ন একটি চারতলা ভবন। ভবনটিতে গুদাম ও বাণিজ্যিক অফিস ছিল। কর্ণফুলীর তীরেই ভবনটি গড়ে তোলা হয়। ওই ভবনের পাশে একটি তিনতলা মসজিদ। তার পাশে আরও দুটি চারতলা ভবন। এই দুটিও গুদাম ও বাণিজ্যিক ভবন।
এসব ভবনের মালিক আব্দুল নুর চৌধুরী। পাশেই তার বাড়ি, তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় বসে ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য দেখছিলেন। তার বাড়ির সামনেই পশ্চিম মাদারবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি। সেটিও অবৈধ বলে জানান স্থানীয়রা। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান মুক্ত নির্দেশ দিচ্ছেন আর এস্কভেটর চালক ভবন ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন। মসজিদটি অক্ষত রেখে দুই পাশের তিনটি ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুক্ত বলেন, আপাতত মসজিদটি রাখা হচ্ছে পরে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। ওই এলাকায় আরও কয়েকটি ভবন এখন অক্ষত এব্যাপারে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এসব ভবনও ভাঙ্গা হবে। আদালতের কাছে অবৈধ স্থাপনার যে তালিকা দেওয়া হয়েছে তার কোনটি অক্ষত থাকবে না। গতকাল খালেকের জোরা (খাল) থেকে শুরু করে বাংলাবাজার ও রশিদ বিল্ডিং এলাকা পর্যন্ত উচ্ছেদ করা হয়। ছোট স্থাপনাগুলো দখলদাররাই সরিয়ে নেয়। জেলা প্রশাসনের লোকজন ভবনগুলে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়।
গতকাল ৬০টিসহ পাঁচ দিনে ২৩০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে জানিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বলেন, এরমধ্য দিয়ে প্রথম পর্যায়ের উচ্ছেদ অভিযানের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। অভিযান চলাকালে আরও কয়েকশ স্থাপনা দখলদাররা সরিয়ে নিয়েছেন। উচ্ছেদের ফলে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকার নদীতীরে ১০ একর জমি উদ্ধার হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তাহমিলুর রহমান বলেন, সোমবার থেকে শুরু হওয়া অভিযানে পাঁচটি খালের প্রবেশপথ অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। এসব খাল দখল হতে হতে নালায় পরিণত হয়েছিল। এজন্য পানিবদ্ধতা হত। উচ্ছেদের পর খালগুলোকে যদি পুরনো আকৃতিতে ফেরানো যায়, পানিবদ্ধতাও কমে যাবে। আনু মাঝির ঘাটের আশপাশের এলাকায় নদীর পাড়ে নগরীর সদরঘাট থানার পশ্চিম মাদারবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি ও একটি মসজিদ আছে। সেগুলোর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আজ থেকে জঞ্জাল সরানোর কাজ শুরু হবে। পুরো এলাকা জঞ্জালমুক্ত করে জমি জেলা প্রশাসনের দখলে নেয়ার পর প্রথম পর্বের উচ্ছেদ অভিযান শেষ হবে। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে বারিক বিল্ডিং থেকে পতেঙ্গায় কর্ণফুলীর মোহনা এবং শেষে চাক্তাই থেকে কালুরঘাট রেলসেতু পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চলবে। জেলা প্রসাশনের জরিপ অনুযায়ী কর্ণফুলীর মোহনা থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত এলাকায় প্রায় আড়াই সহ¯্রাধিক অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এসব স্থাপনা উচ্ছেদ হলে ২ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা মূল্যের ১৫৮ একর জমি দখলমুক্ত হবে।
এদিকে ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভ‚মি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় জেলা প্রশাসন। এরপর আরও কয়েকবার অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভ‚মি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিলেও সাড়া মেলেনি। সর্বশেষ অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে ভ‚মিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।