মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
উত্তরপূর্ব ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য আসাম। এখানে জনসংখ্যাগত বৈচিত্র্যও প্রচুর। অনেক জাতি, উপজাতি ও জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি নাগরিকত্ব বিল নিয়ে সেখানে আন্দোলন ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ত্রুটিপূর্ণ এই বিলের কারণে সেখানে সৃষ্টি হয়েছে নতুন এক জাতিগোষ্ঠী। যাদেরকে বলা হচ্ছে ‘অসমীয় বাঙ্গালী’, বর্তমানে তারা পরিচয় সংকটের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
এমনই এক ‘অসমীয় বাঙ্গালী’ হচ্ছে হিন্দু বাঙ্গালী তরুণ বাবলু নন্দীর পরিবার। তিনি বলেন, এই নতুন জাতিগোষ্ঠীর সৃষ্টির পেছনে দায়ি কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। এই বিলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে পারি জমানো সংখ্যালঘুদের সহজে নাগরিকত্ব প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নন্দি বলছেন, আমরা শুধু বাঙ্গালী নই, অসমীয় বাঙ্গালী।
বেশিরভাগ ভারতীয়ের কাছে ‘অসমীয় বাঙ্গালী’ বিভ্রান্তিকর পরিভাষা মনে হতে পারে। অসমীয় ও বাঙ্গালী দুটি আলাদা জাতিগোষ্ঠী। তাদের ভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা ও বংশধারা রয়েছে। আরো উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আসামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী মূলত উপজাতি, কিন্তু বাঙ্গালিরা তা নয়। এমনকি এসব উপজাতির জীবযাত্রাও পুরোপুরি আলাদা। এদের কিছু কথিত সমতলভ‚মির উপজাতি গোষ্ঠী রয়েছে, যেমন বোড়োরা। অন্যরা পাহাড়ি উপজাতি যেমন, দিমাসা, কারণ এদের বাস দক্ষিণের পার্বত্য এলাকায়। নন্দীর উচ্চারিত ‘অসমীয় বাঙ্গালী’ শব্দটি আবার ওই দুই সম্প্রদায় থেকে পুরোপুরি আলাদা। এর মানে হলো সে একই সঙ্গে অসমীয় ও বাঙ্গালী।
এতে বোঝা যায়, নন্দীরা সেখানে অধিবাসী নয়, অভিবাসী হিসেবে গণ্য হচ্ছেন। যাদের আগমন ঘটেছে সীমান্তের ওপর থেকে বহু দশক ধরে। যাদেরকে স্থানীয় অসমীয়রা মনে করে সম্পদে ভাগ বসানোর জন্য আসা লোকজন হিসেবে। যাদেরকে স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি হুমকি বলে মনে করা হয়।
আসামের বাঙ্গালী হিন্দুদের মধ্যে বিজেপি’র নাগরিকত্ব বিলের পক্ষে সমর্থন থাকলেও অনেক বাঙ্গালী অধ্যুষিত গ্রাম তা মনে করে না। নন্দী বলেন, আমাদের কাছে এনআরসি’তে অন্তর্ভুক্তি গুরুত্বপূর্ণ। নাগরিকত্ব বিল দিয়ে আমরা কি করবো? বাংলাদেশে আমাদের কোন আত্মীয় নেই যে তাদেরকে এখানে আনার জন্য বিলটিকে আমাদের সমর্থন দিতে হবে।
রাজীব গান্ধীর আমলে ১৯৮৫ সালে আসাম চুক্তি সইয়ের সময়েই নাগরিকত্ব নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিলো। যারা প্রমাণ করতে পারবে যে তাদের পূর্বপুরুষ ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে আসামে ছিলো তারা বৈধ নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবে। আর না পারলে অবৈধ বিদেশী হিসেবে বহিস্কার করা হবে। নন্দী বলেন যে, হাজার হাজার মুসলিম ও হিন্দু বাঙ্গালী আসামের আদি বাসিন্দা হওয়ার পরও নাগরিকত্ব তালিকায় নাম তুলতে পারেনি। কারণ তাদের কাছে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগের কোন রেকর্ড নেই।
এক প্রবীণ গ্রামবাসী মিনেশ রঞ্জন ত্রিবেদি বলেন, প্রত্যন্ত এলাকার ২০০-র বেশি বাড়ির ৭০% এনআরসি’র বাইরে রয়ে গেছে। তিনি বলেন, ভারত স্বাধীন হওয়ার পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে আমরা এখানে চলে আসি। জওহরলাল নেহেরু আমাদের স্বাগত জানিয়েছেন।
কিন্তু এই ঐতিহাসিক দাবি নিয়ে আসামের আদিবাসীদের মন গলানো যাবে না। এই রাজ্যে ১৯৬০’র দশকে হিন্দু বাঙ্গালীরা বাংলাকে আসামের সরকারি ভাষা করার দাবিতে আন্দোলন করেছে। কিন্তু এর পাল্টা বিক্ষোভে দাবিটি নস্যাৎ হয়ে যায়। দ্বিতীয়টি ছিলো ১৯৮০’র দশকে ছয় বছরব্যাপী গণ আন্দোলন। ওই আন্দোলনের জেরে আসাম চুক্তি সই হয়। সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।