পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণের একদিন পরেই রাজধানী ঢাকার গাউছুল আজম কমপ্লেক্সে হয়ে গেল আলেমদের মহামিলনমেলা। সেখানে সরকারের অন্যতম নীতি-নির্ধারক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ অতিথিরাও নৈতিক সমাজ গঠনে আলেম-মাশায়েখদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। দেশের মাদরাসা শিক্ষকদের একমাত্র অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনসহ জমিয়াত নেতৃবৃন্দ এবং দেশের বরেণ্য আলেম, পীর-মাশায়েখ, ইসলামী পন্ডিতগণ এ আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন।
তারা বলেছেন, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃত্বে দেশে লাখো আলেম, মাশায়েখ নৈতিক সমাজ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন। দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত দেশগঠনে আলেম, মাশায়েখদের অতীতের মতো পাশে পাবে সরকার। শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত আলেমদের ওই মিলনমেলার ঢেউ বার আউলিয়ার পুণ্যভ‚মি চট্টগ্রামেও আছড়ে পড়েছে। গতকাল রোববার দিনভর বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে আলেম-ওলামাসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আলোচনা ছিল ঢাকার ওই মিলনমেলাকে ঘিরে। আলেম-মাশায়েখগণ বলছেন, একটি সফল সমাবেশ এবং সেখানে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের দেয়া বক্তব্যে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ দারুণ উজ্জীবিত। ওই মিলনমেলায় দেশ পরিচালনায় আলেম-ওলামা তথা গণমানুষের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের দেয়া বক্তব্যে দারুণ উচ্ছ্বসিত তারা।
মিলনমেলায় বক্তব্য রাখেন নতুন সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ধর্ম মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি সংসদ সদস্য বি এইচ হারুন। তারা সবাই তাদের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এ দেশের আলেম-ওলামা তথা জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের ব্যানারে ওইদিন সেখানে যারা সমবেত হয়েছিলেন তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পীর, মাশায়েখ, ইসলামী পন্ডিত ও সমাজে প্রভাবশালী এবং প্রতিষ্ঠিত। জ্ঞানী-গুনী ও ইসলামী চিন্তাবিদদের এমন সম্মেলনে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা কি বক্তব্য রাখবেন তা নিয়েও ব্যাপক আগ্রহ ছিল সবার মাঝে। দৈনিক ইনকিলাবসহ জাতীয় দৈনিকের অনলাইন সংস্করণ ও অনলাইন পোর্টাল ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহূর্তে মিলনমেলার বিস্তারিত বিবরণ জেনে যায় সাধারণ মানুষ। সর্বত্রই এখনও চলছে ওই সমাবেশের নানা দিক নিয়ে নানামুখী আলোচনা।
বিশেষ করে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের বক্তব্যকে সময়োপযোগী বলছেন সংশ্লিষ্টরা। ইনকিলাব সম্পাদক বলেছেন, গণমাধ্যমের চেয়ে এদেশে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে প্রতিটি মসজিদ। আর আলেম সমাজ এ জনমত গঠনের কারিগর। দেশের ৮ কোটি মানুষ সপ্তাহে একদিন অন্তত এক ঘণ্টা আলেমদের সংস্পর্শে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী যে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন সেটি তৈরিতে আলেমগণ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে পারেন।
মিলনমেলায় দেয়া অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বক্তব্য সর্বত্রই প্রশংসিত হচ্ছে। তিনি মহানগরীর পথ অনুসরণ করে ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ করার যে অঙ্গীকার করেছেন তাতে আশাবাদী সাধারণ মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলেমদের সাথে সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রাখেন। জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃত্বে সারাদেশে পীর-মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরামদের যে বিশাল নেটওয়ার্ক সেটির সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। আর এ প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি, মাদকমুক্ত একটি নৈতিক সমাজ ও দেশগঠনে প্রধানমন্ত্রীর যে প্রত্যাশা সেটি পূরণে তিনি আলেম সমাজকে পাশে পাবেন বলে মনে করছেন এখানকার আলেম-ওলামাগণ।
এশিয়াখ্যাত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া (কামিল) মাদরাসার প্রিন্সিপাল এ অঞ্চলের বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মোহাম্মদ অছিয়র রহমান বলেন, এদেশের সব মাদরাসা ও দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি মাদক ও অনৈতিকতা বিরোধী নতুন প্রজন্ম তৈরি করছে। নৈতিক সমাজ গঠনে মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকরা ভ‚মিকা রাখছে। দেশের প্রতিটি মসজিদ ও খানকায় ইমাম ও খতিবগণ এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। সরকার দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত দেশ গড়ার যে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তা শরীয়ত সম্মত। বাংলাদেশের মাদরাসা শিক্ষকদের সংগঠন জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃত্বে সরকারের এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা দৃঢ় প্রতীজ্ঞ। তিনি আশাবাদী, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক তথা আলেম-ওলামাগণ সরকারের পাশে থেকে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে আরও বেশি ভূমিকা রাখবে।
মাদরাসা শিক্ষকদের নেতা জমিয়াতুল মোদার্রেছীন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা কাযী আবুল বয়ান হাশেমী বলেন, অর্থমন্ত্রীসহ মন্ত্রী-এমপিদের সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিল মূলত দেশের প্রখ্যাত আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ ও ইসলামী চিন্তাবিদদের মহা মিলনমেলায় পরিণত হয়। সফল এ সম্মেলনে আলেম-মাশায়েখগণ দারুণ উজ্জীবিত। প্রধানমন্ত্রী নৈতিক সমাজ গঠনের যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন মিলনমেলায় এসে তার প্রতিধ্বনি করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ অতিথিরা। আর জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সুযোগ্য সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন সরকারের সে প্রত্যাশা পূরণে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, জমিয়াত সভাপতির নেতৃত্বে সারাদেশের আলেম-মাশায়েখগণ দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করে আসছে। সরকারের যে অঙ্গীকার সেটি বাস্তবায়নে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন তথা এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ সরকারের পাশেই থাকবে। জমিয়াত সভাপতি ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের নেতৃত্বে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ মাদরাসা শিক্ষকদের সকল সুযোগ-সুবিধা আদায় করে এনেছেন। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের নীতি-নির্ধারকদের তার সুসম্পর্কের কারণে। আগামী দিনে এ সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং জমিয়াতুল মোদার্রেছীন সরকারের পাশেই থাকবে।
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ছিপাতলী গাউছিয়া মূঈনীয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল ও চট্টগ্রাম জেলা জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবুল ফরাহ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন এদেশের লাখ লাখ মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষককে সাথে নিয়ে একটি নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন। এ সংগঠনের সাথে আছে দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখসহ সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মানুষ। সমাজ পরিবর্তনে আলেমদের ভ‚মিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী নৈতিক সমাজ বিনির্মাণের যে অঙ্গীকার করেছেন সে অঙ্গীকার পূরণে আমরা ঐক্যবদ্ধ। জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের নীতি-নির্ধারকদের ভূমিকা অত্যন্ত আন্তরিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী দিনে এ ভূমিকা আরও সুদৃঢ় হওয়ার ভিত্তি রচনা হয়েছে গাউছুল আজম কমপ্লেক্সের ওই মিলনমেলায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।