নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিপিএলের ডামাডোলে নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য বাংলাদেশ দল ঘোষনা করেছে বিসিবি। আর তাতে নিষেধাজ্ঞায় থাকা সাব্বির রহমানের অন্তর্ভুক্তি জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্নের। যার উত্তর মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে ক্রীড়াবোদ্ধা থেকে শুরু করে সাধারণ সমর্থকরাও। অখেলোয়াড়সূলভ আচরণের দায়ে একই বছর দুবার সাজাপ্রাপ্ত একজন ক্রিকেটারকে শাস্তি কমিয়ে কি করে দলে নেয়া হয়? ফেসবুকসহ নানান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও চলছে এর কারণ অনুসন্ধান, চুলচেরা বিশ্লেষণ। আর তাতে নতুন করে দেখা দিয়েছে বিপত্তি। সাব্বিরকে দলে নেয়ার কারণ হিসেবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীণ নান্নুর একটি বক্তব্যই উস্কে দিয়েছে এই বিতর্ক। আর সেই মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার পাল্টা মন্তব্যই এই নতুন শঙ্কটের আগুণে করেছে ঘিয়ের কাজ।
শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় গত ১ সেপ্টেম্বর ৬ মাসের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন সাব্বির। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার কথা ফেব্রæয়ারির শেষে। নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে ১৩ ফেব্রæয়ারি। তাকে দলে রাখা মানে তাই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কমানো। কিন্তু মেয়াদ কমানোর ঘোষণা তো বিসিবি এখনও দেয়নি! প্রধান নির্বাচক জানান, বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে না জানালেও নির্বাচকদের জানিয়ে দিয়েছে দল নির্বাচনের আগে।
নিষেধাজ্ঞা এক মাস কমানো হলো। নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে রাখাও হলো। দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের পর প্রশ্ন উঠল সাব্বিরকে নিয়ে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানালেন, অধিনায়ক প্রবলভাবে দলে চেয়েছেন এই ব্যাটসম্যানকে, নির্বাচক কমিটিও তাতে একমত হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা কমানো হলেও প্রশ্ন থাকে। ফর্ম দিয়ে কি দলে জায়গা প্রাপ্য সাব্বিরের? সবশেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলেছেন গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। তিন ম্যাচে করেছিলেন ২৭ রান। ফিফটি নেই সবশেষ খেলা ১৪ ওয়ানডে ইনিংসে। এর উত্তরে প্রধান নির্বাচক সেদিন বলেছিলেন, ‘সাব্বিরের পারফরম্যান্স... আমি পরিস্কার করে দেই। এটা সম্পূর্ণ আমাদের অধিনায়কের পছন্দ। ও খুব জোরালোভাবে আমাদেরকে দাবি জানিয়েছে। অমরা দু’জন (নান্নু ও অপর নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন) এটার সঙ্গে একাত্ত¡তা প্রকাশ করেছি মাত্র।’ কি ছিল মাশরাফির যুক্তি সেটিও পরিস্কার করেছেন নান্নু, ‘ও (মাশরাফি) এমন একজনকে চাচ্ছে, যে সাত-আট নম্বরে নেমে পেস অ্যাটাক সামলাতে পারবে। ইংল্যান্ডের কন্ডিশন, বিশ^কাপের পরিকল্পনা করেই নিউজিল্যান্ড সফরে ওকে নেয়া হয়েছে।’
প্রধান নির্বাচকের এই মন্তব্যের জেরেই ক্রিকেটপাড়ায় নতুন করে শুরু হয়েছে নতুন উত্তাপ। এর দু’দিন পর গতকাল একটি অনলাইন নিউজ এজেন্সিকেয় দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেছেন মাশরাফি। যখনই উঠেছে জোরালো দাবির কথা, অধিনায়কের সোজাসাপ্টা উত্তর ছিল এরকম, ‘জোরালো দাবি জানানোর এখতিয়ার কি আমার আছে? আমি কি নির্বাচক কমিটির অংশ? আমার কাছে মত চাওয়া হয়েছে, নিজের মত দিয়েছি। মতের পক্ষে ক্রিকেটীয় যুক্তি দিয়েছি। কাউকে দলে নেয়া না নেয়া তো নির্বাচকদের ব্যাপার। আমার যুক্তি হয়তো তাদের কাছে জোরালো মনে হয়েছে। যৌক্তিক মনে হয়েছে। তাদের যদি পাল্টা যুক্তি থাকতো, কিংবা আমার যুক্তির সঙ্গে একমত না হতেন, তাহলে নিশ্চয়ই অন্য কিছুই দেখা যেত। কোনো ক্রিকেটারকে নিয়ে অধিনায়কের মত জানতে চাওয়া হয়, মতামত দেই। আর যখন কোনো মতামত দেব, যুক্তিও তো দেখাতে হবে পক্ষে। সেটাও করি। কখনও তারা আমার মত রাখেন, কখনও রাখেন না। সাব্বিরকে নিতেই হবে, এটা তো আমি বলিনি। স্রেফ মতের পক্ষে যুক্তি দিয়েছি।’
সাব্বিরের পক্ষে কেন মত দিয়েছিলেন? প্রধান নির্বাচক সংবাদ সম্মেলনে যখন অধিনায়কের দাবির কথা বলেছেন, আপনার যুক্তিও কি সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করা যায়? এমন প্রশ্নের জবাবও প্রস্তুত দেশসেরা এই অধিনায়কের কাছে, ‘কোনো সমস্যা নেই, কারণ নিজের যুক্তি আমার কাছে পরিষ্কার। দেখুন, ১৫ জনের দলের ১৪ জন কোচ-নির্বাচকেরা ঠিক করেই রেখেছিলেন (জাতীয় কোচও নির্বাচক কমিটির অংশ)। ১৫ নম্বর সদস্য নিয়ে তার আমার মত জানতে চেয়েছেন। আমাকে কয়েকটি অপশন দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্য থেকে কাকে নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে আমার অভিমত চেয়েছেন। ইমরুল, মোসাদ্দেক, রনি (আবু হায়দার), অপু (নাজমুল), নাকি সাব্বির। তামিমের সঙ্গে ওপেন করার মতো লিটন ও সৌম্য আছে। স্পিনে সাকিব ও মিরাজের সঙ্গে বাড়তি নাঈম আছে। আরেকজন স্পিনার (অপু) নিউজিল্যান্ডে খুব জরুরি নয়। পেস বোলিংয়ে আমার সঙ্গে মুস্তাফিজ, রুবেল ও সাইফ আছে। ১৬ জনের স্কোয়াড হলে হয়তো আরেকজন পেসার রাখা যেত। মিডল অর্ডারে সাকিব-মুশফিকদের তো বিকল্প নেই। কেবল ছয়-সাতেই বিকল্প কাউকে দরকার হতে পারে। সেখানে এই তালিকা থেকে আমার সামনে অপশন ছিল মোসাদ্দেক ও সাব্বির।
মোসাদ্দেক বিপিএলে কালকের (পরশুর) ম্যাচের আগ পর্যন্ত সেভাবে টাচে ছিল না। তাছাড়া সাত নম্বর ওর উপযুক্ত জায়গা কিনা, এটি নিয়ে তো আপনারাই কত প্রশ্ন তুলেছেন। সেই প্রশ্ন যৌক্তিকও। এখন সাব্বির ছাড়া বিকল্প কে ছিল? এমনকি কোচও তো আমার যুক্তি শোনার পর ভাবার জন্য সময় নিয়েছেন। ২৪ ঘন্টা ভেবেছেন। তার পর হয়তো তারও অন্যদের মতো মনে হয়েয়ে যুক্তি ঠিক। দল নির্বাচন কিন্তু একটি প্রসেস। আমাদের দেশে খুব সহজেই বলে দেওয়া হয় অমুক কেন, তমুক কেন। কিন্তু বিকল্প কে, সেটা অনেকেই ভাবেন না। আমি আমার যুক্তি বলেছি। কিছুই চাপিয়ে দেইনি। সেই অধিকার আমার নেই। আমার মতই তো শেষ কথা নয়। আমি এটাও বলেছিলাম যে, “আমার কথা বললাম, বাকিটা আপনারা যা মনে করেন”।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।