মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
১৯৩৩ সাল হাইনরিখ হফমান নামে এক জার্মান চিত্রগ্রাহকের তোলা একটি ছবি মার্কিন সংস্থা আলেকজান্ডার ফটোগ্রাফ নিলামে তুলছিল। ছবিতে একটা বাচ্চা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আছেন একজন মাঝবয়সি পুরুষ। দু’জনের মুখেই হাসি। কিন্তু ভাল করে দেখলে চমকে উঠবে যে কেউ। হাসিমুখের মানুষটি হচ্ছে অ্যাডলফ হিটলার। নিষ্ঠুর, স্বৈরাচারী, নাৎসি বাহিনীর ‘ফুয়েরার’। সেই নির্মম মানুষটা এমন করে হাসতে পারে!
চমকের এখানেই শেষ নয়। যে মেয়েটির সঙ্গে হাসি মুখে ছবি তুলেছেন হিটলার, সেই রোসা বেরনাইল নিয়েনাউ ছিল ইহুদি। তার পরিচিতি ছিল ‘ফুয়েরারের কন্য’ হিসেবে, হিটলারও তাকে ‘সুইটহার্ট’ বলে ডাকতেন। ৬০ লক্ষ ইহুদিকে হত্যা করা হয়েছিল যার নির্দেশে, সেই হিটলারের সঙ্গে এই ইহুদি কন্যার বন্ধুত্ব প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। হিটলার ও রোসার স্বাক্ষর সম্বলিত ছবিটি বিক্রি হয়েছে সাড়ে এগার হাজার ডলারে, বাংলাদেশী মূল্যমানে যা প্রায় দশ লক্ষ টাকা।
প্রচারের খাতিরে অনেক সময়েই বাচ্চাদের সঙ্গে ছবি তুলতেন হিটলার। কিন্তু এই ছবিটা তো নিছক ছবি নয়। কারণ মেয়েটি ইহুদি জেনেও তার সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখেছিলেন হিটলার। এখানেই ছবি দু’টির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বলে মনে করছেন গবেষকেরা। কী করে এই দু’জন অসম বয়সি, অসম মনোভাবের মানুষের মধ্যে এত গভীর বন্ধুত্ব হয়েছিল, সেই গল্প বলা রয়েছে নিলাম সংস্থার ওয়েবসাইটেই।
১৯৩৩ সালের ২০ এপ্রিল। সে দিন হিটলারের জন্মদিন। আল্প্স পর্বতমালার কোলে ওবেরসাল্সবের্গে হিটলারের বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। তাদের মধ্যেই রয়েছে রোসা। সঙ্গে তার মা। ঘুরে ঘুরে অনেকের সঙ্গেই কথা বলছেন হিটলার। রোসার সঙ্গেও। ছোট্ট মেয়েটি হিটলারকে জানাল, সেদিন তারও জন্মদিন। শুনে নাকি দারুণ মজা পেয়েছিলেন হিটলার। রোসা আর তার মাকে ডেকে নিয়েছিলেন বাড়ির ভেতরে। বাড়ির লাগোয়া লনেই রোসার সঙ্গে এই ছবি দু’টি তোলেন হিটলার। পরে সাক্ষর করে পাঠিয়ে দেন রোসার মায়ের কাছে। ছবির উপরে অ্যাডলফ লিখেছিলেন, ‘আমার প্রিয় রোসা’। নীচে লিখে দেন, ‘মিউনিখ, ১৬ জুন ১৯৩৩’। সেই ছবি দু’টি পেয়ে রোসা আবার নিজের ‘স্বাক্ষর’ যোগ করে, ছবির চারপাশে এঁকে দেয় সূর্যমুখী ফুল।
রোসার মা ইহুদি। নাৎসিদের চোখে তাই সেও ইহুদি। এই খবর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই পেয়ে যান হিটলার। তবু বন্ধুত্ব ছিন্ন করেননি। বছর পাঁচেক ধরে মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন তিনি। তত দিনে নাৎসি বাহিনীর অন্য শীর্ষ কর্তারা বলতে শুরু করেছেন, এক ইহুদি মেয়ের সঙ্গে হিটলারের বন্ধুত্ব চলে না। ১৯৩৮ সালে মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করে দেন অ্যাডলফ। মেয়েটির মাকেও নাৎসি বাহিনীর পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, কোনও ভাবেই তিনি যেন হিটলারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা না করেন।
পরের বছর শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ছয় বছর পরে যখন থামে, তখন হিটলার বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন ৬০ লক্ষ ইহুদি। তাদের মধ্যে রোসা না থাকলেও বেশি দিন বাঁচেনি মেয়েটি। হিটলারের সঙ্গে দেখা হওয়ার ঠিক এক দশক পরে, মিউনিখের এক হাসপাতালে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় হিটলারের ‘সুইটহার্ট’। সূত্র: সিএনএন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।