পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২৩ এপ্রিল ইভা ব্রাউন তার পিতামাতার জন্য কফি এবং টিনজাত খাবারের উপহার পাঠিয়ে তার বোন গ্রেটলকে পত্র লেখেন এবং তার সোনার ও হীরার ঘড়ি, ছবির অ্যালবাম এবং তার প্রেমপত্রগুলো নষ্ট করার নির্দেশনা দেন। এক সপ্তাহের মধ্যে বার্লিনের টেলিফোন লাইনগুলো অকেজো হয়ে যায়, তারবিহীন সংযোগকারী বেলুন থেকে সংক্ষিপ্ত রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে বাঙ্কার এবং বাইরের বিশ্বের মধ্যে একমাত্র যোগাযোগ হতো। নগরীর রাস্তাগুলোতে রাশিয়ার আর্টিলারি ফায়ার থেকে ভারী বোমা হামলা চলতে থাকে।
দেশীয় নাগরিকরা যারা পালাতে সক্ষম হয়নি, তাদের বেজমেন্টে এবং মোমবাতি জ্বালানো সাবওয়ে টানেলে আশ্রয় নেয়া ছাড়া উপায় ছিল না। হাসপাতালগুলো উপচে পড়েছিল, সরবরাহের অভাব ছিল, রোগ এবং ক্ষুদ্র অপরাধ বেড়ে যাচ্ছিল এবং মাংস পাবার একমাত্র উৎস ছিল মৃত ঘোড়া থেকে কেটে আনা। মদের বোতলের জন্য দোকান এবং ব্যক্তিগত আবাসগুলোতে লুটপাট চালানো হত। কিছু লোক প্রাত্যহিক নারকীয়তা থেকে বাঁচতে স্যাটার্নালিয়ান অরজিস বা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।
২৮ এপ্রিল রাত ৯টায় রয়টার্সের বরাত দিয়ে হিটলারে কাছে বিবিসির একটি খবর পৌঁছে যে, সুইডিশ ক‚টনীতিক কাউন্ট ফোলকে বের্নাডটের মধ্যস্থতায় রাইখ ফিউরার-এসএস হেইনরিখ হিমলার মিত্রদের কাছে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব নিয়ে যোগাযোগ করেছেন। এটি নাকচ করা হয়েছিল। কিন্তু হিটলারের রাগ হয়েছিল যে, হিমলার তাকে পিতৃভূমির একজন বিশ্বাসঘাতক হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য হিটলার বার্লিনে তার প্রতিনিধি হেরম্যান ফিগেলিনকে নির্দেশ দেন হিমলারকে ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে হত্যার। সত্যটি হ’ল, ফিগেলিন গ্রেটল ব্রাউনকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাই হিটলারের শ্যালক প্রত্যাশিতভাবেই অন্যথা করেননি।
জেনারেল হান্স ক্রেবস এবং বোরম্যান তাদের কমান্ডারদের সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে চ‚ড়ান্ত চাপ দেয়ার জন্য যথাক্রমে ফিল্ড মার্শাল উইলহেলম কাইটেল এবং অ্যাডমিরাল কার্ল ডোনিত্স’র কাছে মরিয়া হয়ে চ‚ড়ান্ত আবেদন করেছিলেন। তবে বাস্তবে সব শেষ হয়ে গিয়েছিল।
২৯ এপ্রিল দিনের প্রথম প্রহরগুলোতে তার প্রিয় অ্যালসেশন কুকুর বøন্ডিকে বিষ প্রয়োগ করেন এবং তার সচিবগণ, যারা অনুগত হাসির পিছনে তাদের ক্রমবর্ধমান আতঙ্ক চেপে রেখেছিল, তাদের হাতে তিনি সায়ানাইড বড়ি তুলে দেন। এরপর হিটলার সহকর্মীদের সাক্ষী রেখে ব্রাউনকে একটি নাগরিক অনুষ্ঠানে বিয়ে করেন এবং বিমর্ষ চিত্তে বিয়ে উপলক্ষে শ্যাম্পেন পান করেন। তারপর স্বৈরশাসক তার শেষ ইচ্ছা এবং অনুমতিপত্রটি প্রকাশ করেন।
হিটলার দিনের বাকি সময় তার কাজগুলিকে যথাযথভাবে সম্পন্ন করেন। তার কাগজপত্র ধ্বংস করার নির্দেশনা দেন এবং তার প্রতিনিধিদের হ্যান্ডশেক করে বিদায় জানান এবং সেসময় যে সান্ত¡না বাক্যই তার মনে আসছিল তাই বিড়বিড় করে আওড়াতে থাকেন। তার অন্যতম সচিব গ্রেট্রুডে ইয়ঙে হিটলারের অশ্রু চোখ স্মরণ করে বলেন, ‘তারা মনে হচ্ছিল বাঙ্কারের দেয়াল ছাড়িয়ে অনেক দূরে চেয়ে আছে।’
ইতিহাসবিদ উইলিয়াম এল শারার বর্ণনা করেছেন যে, স্বৈরশাসক বিছানায় যাওয়ার পর একটি কৌত‚হলোদ্দীপক ঘটনা ঘটে। বাঙ্কারে যে অসহনীয় উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল তা উধাও হয়ে যায় এবং বেশ কয়েকজন ক্যান্টিনে নাচতে চলে যান। অদ্ভূত দলটি শিগগিরই এতটাই কোলাহলমুখর হয়ে ওঠে যে, ফিউরারের আবাসস্থল থেকে আরো শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ পাঠানো হয়।
জীবনীবিদ হান্স-অটো মাইসনার বলেছেন, একজন বিমর্ষ হিটলার পৃথিবীতে তার শেষ সকালে ধূসর রঙের ওভারকোট থেকে নাৎসি পার্টির স্বর্ণের পদবি চিহ্ন খুলে নিয়ে কাঁপা হাতে পার্টির বেসরকারি প্রথম ফার্স্ট লেডি ম্যাগদা গোয়েবল্স’র ল্যাপেলে আটকে দেন। এটা ছিল ৩য় রাইখের দ্বারা কোনো মহিলাকে দেয়া সর্বকালের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি।
অ্যাডল্ফ এবং ইভা হিটলারের লাশ সেদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় আবিষ্কার করা হয়েছিল। জোসেফ গোয়েবেলস, বোর্মান, হিটলারের সহযোগী অটো গুনশে এবং তার খানসামা হেইঞ্জ লিংঙের লাশের সাথে রক্তাক্ত সোফায় পড়েছিল।
পরের এই দৃশ্যটি দেখে তিনি হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন যে, হিটলার যখন প্রাণঘাতী বন্দুকের গুলিতে সামনের দিকে ছিটকে এসেছিলেন, সেই ধাক্কায় স্থানচ্যুত হওয়া ড্রেসডেনের ফুলদানিটি মাইসনার টিউলিপস এবং ড্যাফোডিল দিয়ে পুনরায় সজ্জিত করেছিলেন এবং পাশের টেবিলে সেটিকে তার যথাযথ জায়গায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। হিটলারের প্রিয় শিল্পকর্ম ফ্রেডেরিক দ্য গ্রেট অফ প্রুশিয়ার তখন ঘটনাস্থলে ঝলমল করছে।
তাদের লাশগুলো বাদামি সেনা কম্বলগুলিতে দ্রুত আবৃত করা হয়েছিল। তারপর হিটলারের উইলের নির্দেশ মোতাবেক সেগুলোকে পেট্রল ভিজিয়ে চ্যান্সেলারির নালাতে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এটা সেই একই চ্যান্সেলারি যেখানে হিটলার ২ সপ্তাহ আগে বালক সৈন্যদের অভ্যর্থনা দিয়েছিলেন। তিনি তার দাহের প্রত্যাশা করে গুনশেকে বলেছিলেন, ‘আমি কোনো রাশিয়ান মোমের কাজের প্রদর্শনী হতে চাই না।’
ডনিটজ এবং গোয়েবল্স যথাক্রমে হিটলারের উত্তসূরী হিসেবে রাষ্ট্র প্রধান এবং চ্যান্সেলর হিসাবে পদস্থ হন। এর মাত্র একদিন পর গোয়েবল্স এবং তার স্ত্রী তাদের সন্তানদের মারণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে চিরনিদ্রায় শায়িত করেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, মাগদা নিজেই শিশুদের বিষাক্ত ইনজেকশন ফুটিয়েছিলেন। এমন একটি ঠান্ডা মাথার কাজ তিনি অন্তত এক মাস আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলেন বলে মনে হয়।
আনজা ক্লাবুন্ডের ১৯৯৯ এর জীবনী অনুসারে, মাগদা তার ১ম বিয়ের ননদকে গোপনে লিখেছিলেন, ‘আমরা জার্মান জনগণের কাছ থেকে অমানুষিক জিনিস দাবি করেছি, অন্যান্য জাতির সাথে নির্দয়তার সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করেছি। এর জন্য বিজয়ীরা তাদের পুরো প্রতিশোধ গ্রহণ করবে। আমরা কাপুরুষ এটা আমরা তাদের ভাবতে দিতে পারি না।’
‘আমরা বাচ্চাদের আমাদের সাথে নিয়ে যাব, তারা ভীষণ ভাল, আসছে বিশ্বের জন্য তারা বেশিই চমৎকার। আগামী দিনগুলিতে জোসেফকে জার্মানিতে জন্মানো অন্যতম সেরা অপরাধী হিসাবে গণ্য করা হবে।’ ‘তার বাচ্চারা প্রতিদিন তা শুনবে, লোকেরা তাদের উপর অত্যাচার করবে, তাদের ঘৃণা করবে এবং লাঞ্ছিত করবে।’ (সমাপ্ত)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।