Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

| প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে পিকআপের চাপায় দুই কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলটির বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটলো। নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের এই ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় সংশ্লিষ্ট এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে এবং দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এলাকায় সেই থেকে থমথমে অবস্থায় বিরাজ করছে। যে কোনো মুহূর্ত আবারো সংঘর্ষ হতে পারে বলে এলাকাবাসী আশংকা করছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওইদিনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও এযাবৎ কাউকে গ্রেফতার করেনি। এ নিয়ে কোনো মামলাও হয়নি। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব এই ঘটনায় কিছুটা হলেও বিব্রত ও উদ্বিগ্ন। আওয়ামী লীগে অভ্যন্তরীণ কোন্দল কমবেশি সারাদেশেই আছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেই কোন্দল আরো প্রকট হয়ে দেখা দিতে পারে। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচনের প্রক্রিয়া এখনো শুরুই হয়নি। কেবল আওয়ামী লীগেই মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেলেও অন্য দলগুলোর মধ্যে তা দেখা দেয়নি। বিশেষ করে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি এখনো নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা যখন মিছিল সহকারে মনোয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন তখন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঘরেও থাকতে পারছেন না। তারা মামলা ও গ্রেফতারের আতংকে দৌঁড়ের ওপর আছেন। এখনো বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা হচ্ছে। গ্রেফতার অভিযান চলছে। অথচ নির্বাচন কমিশন নির্বিকার। নির্বাচনের প্রক্রিয়া পুরোদমে শুরু হলে এবং সেই প্রক্রিয়ায় বিএনপি ও তার জোট শরীকরা শামিল হলে দেশের পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা সংযোজিত হবে।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত আইনশৃংখলা পরিস্থিত সমুন্নত রাখা এবং নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ হওয়ার ওপর অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নির্ভর করছে। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, এ সময়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দল ও জোটের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ-কোন্দল বৃদ্ধি পায়। প্রতিদ্ব›দ্বী দল ও জোটের পরস্পরের মধ্যে বিবাদ ও উত্তেজনা তুঙ্গে উঠে। এমতাবস্থায় সংঘাত-সংঘর্ষ দেখা দেয়া কিংবা তার আশংকা বিদ্যমান থাকে। অন্যদিকে এ সময় অস্ত্রের মহড়া চলে। সন্ত্রাসীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। অপরাধীচক্রগুলো তাদের তৎপরতা বাড়িয়ে দেয়। বলার অপেক্ষা রাখেনা, এখন দেশের মধ্যে বিপুল সংখ্যায় অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। সেই সব অস্ত্র সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত হওয়ার আশংকা রয়েছে। অতীতে এ আশংকা সত্য হতে দেখা গেছে। দেশের সামগ্রিক আইনশৃংখলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, ছিনতাই, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, তুলে নেয়া, গুম, খুন, তথাকথিত বন্দুক, যুদ্ধ ইত্যাদি মানুষের জানমালের নিরাপত্তার ওপর মারাত্মক হুমকি হিসাবে বিরাজ করছে। নাগরিক নিরাপত্তা চলতে যা বুঝায়, তার কোনোরূপ নিশ্চয়তা নেই। পথে-ঘাটে, মাঠে-জঙ্গলে অজ্ঞাত যুবকদের লাশ জনমনে ব্যাপক আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। পারিবারিক ও সামাজিক বিরোধে খুন-গুমের ঘটনা ক্রমবর্ধমান। উঠতি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সাম্প্রতিককালে রাজধানী ও তার আশেপাশে ভাড়ায় মাইক্রোবাসে যাত্রী তুঙ্গে তাদের সবকিছু লুটে নেয়ার ঘটনা বেড়েছে। এমনকি সংঘবদ্ধ এ দুস্কৃতীচক্র যাত্রী হত্যা করতেও দ্বিধা করছেনা। বাস চালক ও বাস শ্রমিকরা বেপরোয়া। নিত্য দুর্ঘটনা ছাড়াও তারা বাস থেকে যাত্রী ফেলে দিচ্ছে এবং হত্যা পর্যন্ত করছে। গত শুক্রবার ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে এমনই এক ঘটনা ঘটেছে। বাস শ্রমিকরা বাস থেকে বাবাকে ফেলে দিয়ে মেয়ে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। এরকম একটা অরাজক পরিস্থিতি আইনশৃংখলার সুষ্ঠুতা ও স্বাভাবিকতার প্রমাণ বহণ করেনা।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে, নির্বাচনের সময়কালে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির ভয়ংকর অবনতি ঘটতে পারে। তার আলামত এখনই পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আরো বাড়ছে। ভোটারদের মধ্যে একটাই প্রশ্ন : নির্বিঘ্নে-নিরাপদে ভোট দিতে পারবো তো? নির্বাচন উপলক্ষে এর মধ্যেই আইনশৃংখলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনের কাছে চলে গেছে। এখন আইনশৃংখলা পরিস্থিতি যা কিছুই সৃষ্টি হোক না কেন, তার দায় নির্বাচন কমিশনের ওপরই বর্তাবে। নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়াসহ ভোট গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনকে আইনশৃংখলা সুরক্ষায় এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে নির্বাচনপর্ব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পাদিত হয়। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় শান্তিশৃংখলা যেমন রক্ষা করতে হবে তেমনি শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণও নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, বৈধ অস্ত্রের ব্যবহার সীমিতকরণ ও সন্ত্রাসী গ্রেফতারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী যাতে এ পদক্ষেপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে না পারে সেদিকে সতর্ক নজর রাখতে হবে। আইনশৃংখলা বাহিনীর ওপরই দেশের শান্তি-শৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত। নির্বাচন সম্পর্কিত বিশেষ দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে তাকে অর্পিত দায়িত্বও যথাযথভাবে পালন করতে হবে। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে দলপ্রীতি, গোষ্ঠীপ্রীতি বর্জন করতে হবে। অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী হয়ে কিছু করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আইনশৃংখলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেই এটা নিশ্চিত করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইনশৃঙ্খলা


আরও
আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->