Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে কন্যাকে হত্যা

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের সাপানিয়া গ্রামের মিষ্টি চেহরার শিশু সাবিহা আক্তার অথৈ (১১)কে তার পাষন্ড পিতাই হত্যা করেছে। পাওনাদারকে ঘায়েল করতে জ্ব§দাতা পিতাই পরিকল্পিতভাবে তাকে শ্বাসরোধ করে নিজ কণ্যাকে হত্যা করে। হত্যার পর প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নানান নাটক সাজানোর চেষ্টা করেছে ঘাতক বাবা গোলাম মোস্তফা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালকের দেওয়া তথ্যে ফাঁস হয়ে যায় আসল ঘটনা। হত্যাকান্ডের ১২ ঘণ্টার মধ্যে মহানগর পুলিশ গোলাম মোস্তফাকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নিজের কন্যাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে গোলাম মোস্তফা।
ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এমন কল্পকাহিনী বলে প্রতিপক্ষ স্থানীয় রাব্বী নামক একজনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল গোলাম মোস্তফা। মঙ্গলবার রাতে গোলাম মোস্তফাকে আটকের পর পুলিশের কাছে সে স্বীকার করেছে, তার কাছে ৮ লাখ টাকা পাবেন রাব্বী। ওই টাকা না দেওয়ার উদ্দেশ্যেই মেয়েকে হত্যার করে দায় চাপাতে চেয়েছিল রাব্বীর ওপর।
গতকাল (বুধবার) সাংবাদিক সম্মেলন করে এ ঘটনার বর্ণনাকালে পুলিশ কমিশনার মো. মোশারফ হোসেন আবেগাপ্লুত হয়ে মানুষের নৈতিকতার অবক্ষয় ও পাশাবিক আচরনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অথৈকে হত্যার অভিযোগ ওঠায় তার বাবা গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করা হয়। তারা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এর বেশী কিছু বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন বিএমপি কমিশনার। উপস্থিত সাংবাদিকদের পীড়াপিড়িতে এক পর্যায়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, গোলাম মোস্তফা মেয়েকে গলা টিপে হত্যা এবং প্রতিপক্ষ জনৈক পাওনারদারকে ফাঁসানোর পরিকল্পনার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। তবে আদালতে স্বীকারারোক্তী দেওয়ার আগে পুলিশ এসবের আর কোন বিবরণ প্রকাশ করবে না।
তবে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, উপবৃত্তির টাকা তোলার অজুহাতে মঙ্গলবার সকালে মেয়ে অথৈকে বিদ্যালয়ের পৌঁছে দিতে বাসা থেকে বের হন গোলাম মোস্তফা। তিনি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে মেয়েকে নিয়ে প্রথমে সদর রোড এবং পরে যান কর্মস্থল নথুল্লাবাদে সিটি করপোরেশনের পানির পাম্পে। সেখানে গলাটিপে হত্যার পর মেয়ের অসুস্থতার কথা বলে তাকে ইজিবাইকে তুলে বাড়ির দিকে রওনা হন। বিদ্যালয় সংলগ্ন লেবু বাগানের মধ্যে লাশ ফেলে রেখে আবার কর্মস্থলে ফিরে আসে গোলাম মোস্তফা। পরে স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানতে চান মেয়ে অথৈ বিদ্যালয় থেকে ফিরেছে কিনা। স্ত্রীর কাছ থেকে কন্যা অথৈ ফেরেনি জানতে পেরে মেয়েকে খুঁজতে স্ত্রীকে বিদ্যালয়ে যেতে বলেন। বিদ্যলয়ে খুঁজতে গিয়ে বিদ্যালয় সংলগ্ন লেবু বাগানের মধ্যে অথৈর লাশ দেখতে পান অথৈর মা।
অথৈর লাশ উদ্ধারের পরে পিতা-মাতা উভয়ই বলতে থাকেন বিদ্যালয়ে উপবৃত্তির টাকা আনতে গিয়ে তাদের মেয়েকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। স্থানীয় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক জানান, তিনি সকালে বাবা ও মেয়েকে সদর রোডে নামিয়ে দিয়েছিলেন। এরপরই সকলের সন্দেহের তীর যায় বাবা গোলাম মোস্তফার দিকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ