নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ভাইরাস জ্বরের কারণে অনুশীলনে প্রথম থেকে থাকতে পারেননি অনুশীলন ক্যাম্পে। এখনো সেরে ওঠেননি পুরোপুরি। তবে খেলার পথে সেটা যে বড় কোনো বাধা নয়, তা জানিয়ে দিলেন গতকাল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তো মেহেদী হাসান মিরাজ বড় ভরসাই, বিশেষ করে সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে। এশিয়া কাপের ফাইনালে যেমন নিয়েছিলেন, এবারও নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে পিছপা হবেন না বলেই জানিয়েছেন তুর্কী অলরাউন্ডার।
দুবাইয়ের সেই ফাইনালে তার ওপেন করাটা চমক বললেও কম বলা হয়। পরে জানা গেছে, ধারণাটা ছিল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার। ফাটকাটা কাজেও লেগেছিল, লিটন দাসের সঙ্গে মিরাজের শতরান পেরুনো ওপেনিং জুটিতেই বাংলাদেশ দেখছিল বড় স্বপ্ন। যদিও শেষ পর্যন্ত তা আর পূরণ হয়নি। তবে মিরাজ সেদিন যেমন করেছিলেন, সুযোগ পেলে এবারও চান চ্যালেঞ্জ নিতে, ‘আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। কঠিন অবস্থার চ্যালেঞ্জ আমি উপভোগ করি। আর পেছন থেকে যখন টিম ম্যানেজমেন্ট সাপোর্ট দেয়, আমাদের সিনিয়র প্লেয়ায়রা সমর্থন দেয়, সবাই যখন ব্যাক আপ করে, তখন নিজের আত্মবিশ্বাসটা অনেক বেড়ে যায়। ফাইনালের আগের রাতে যখন আমাকে বলা হয় ওপেন করতে হবে, তখন মাশরাফি ভাই, রিয়াদ ভাই বলেছিল-করতে পারবি, সমস্যা নাই। তখন নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসটা বাড়ল। তখন তারা আরও কিছু কথা বলেছিল, যা শুনে আমি আরও বেশি আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলাম।’
কদিন আগেও ওয়ানেডে দলে জায়গা অনিশ্চিত ছিল মিরাজের। বোলিংটা সেভাবে কার্যকর হচ্ছিল না। রান থামিয়ে রাখা কিংবা উইকেট নেওয়া কোনোটাই ঠিক মতো করতে পারছিলেন না। ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিস্ফোরক দুই ওপেনার ক্রিস গেইল ও এভিন লুইসকে বেঁধে রেখে দিলেন সামর্থ্যরে প্রমাণ। ছন্দটা ধরে রাখলেন এশিয়া কাপেও। বোলিংয়ের এই বদলে যাওয়ার পেছনের গল্পটা জানালেন মিরাজ, ‘আমার কাছে মনে হয়, আমি আগের চেয়ে এখন একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করছি। কিভাবে কি করতে হবে তা নিয়ে অন্যভাবে ভাবতে পারছি। মানসিকভাবে একটু শক্ত হয়েছি। আর বোলিংয়ে কিছু বৈচিত্র্য এনেছি, ওইগুলো হয়তো কাজে দিচ্ছে।’ বৈচিত্র্যটা কেমন সেটিরও একটু ধারণা দিলেন এই তরুণ অলরাউন্ডার, ‘বৈচিত্র্যে বলতে, আমি প্রায় সব সময় একই গতিতে বল করতাম। সিমের পজিশন থাকতো একই রকম। এখন সিমের পজিশনে পরিবর্তন এসেছে। আমি সিম গ্রিপ করতাম ৪৫ ডিগ্রিতে এখন বেশিরভাগ সময় ৯০ ডিগ্রিতে গ্রিপ করি। একটু মিক্স করে বল করছি। ক্রিজের ব্যবহার বাড়িয়েছি, ডেলিভারির জায়গাতে একটু পরিবর্তন করে বৈচিত্র্য এনেছি।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিয়ে ওয়ানডেতে বদলে গেছে মিরাজের বোলিং। এই সময়ে খুব একটা উইকেট পাননি তিনি। তবে দলের জন্য তার আঁটসাঁট বোলিং ছিল খুব কার্যকর। তরুণ এই অফ স্পিনার জানিয়েছেন, বোলিংয়ে বৈচিত্র্য বাড়ায় বেড়েছে তার আত্মবিশ্বাস। এখন ভাবতে পারছেন ভিন্নভাবে, সেটাই গড়ে দিয়েছে পার্থক্য। সবশেষ ৯ ম্যাচে মিরাজ নিয়েছেন ৭ উইকেট। ইকোনমি রেটটা ৫.০০। খুব একটা মনে ধরার মতো নয়। বেশিরভাগ ম্যাচে হাত ঘুরিয়েছেন নতুন বলে। উইকেট নেওয়ার চেয়ে ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখার দিকে ছিল তার মনোযোগ। পরে খেললেন আরো ৭ ম্যাচ। উইকেট সাকুল্যে ১৬টি। সবচেয়ে বড় কথা ওভারপ্রতি রান নিয়েছেন মাত্র ৩.৯০ করে। বর্তমান মার কাটারি ক্রিকেটে তার ইকোনমি রেটটা বেশ আকর্ষণীয়। টেস্টের উইকেট টেকিং বোলার কেন ওয়ানডেতে রান থামিয়ে রাখার দিকে মনোযোগী মিরাজ দিলেন তার ব্যাখ্যা, ‘ওয়ানডেতে আমি প্রথম দিকে যখন বোলিং করি, ওপেনাররা তখন দ্রæত রান তোলার চেষ্টায় থাকে। তখন আমার দায়িত্ব থাকে রান আটকে বোলিং করার। আমি যদি রান থামিয়ে রাখতে পারি তাহলে আমার যে বোলিং পার্টনার থাকবে, সে উইকেট বের করে নিতে পারবে। দিন শেষে কিন্তু দলের সাহায্য হচ্ছে। ওয়ানডেতে সবসময় রোলটা থাকে রান থামিয়ে রাখার। হয়তো আমি উইকেট পাচ্ছি না, আমার পার্টনার যে আছে, হয়তো মাশরাফি ভাই, মুস্তাফিজ, সাকিব ভাই বা রুবেল ভাই উইকেট বের করে নিবে। আমি রান থামিয়ে রাখতে পারলে প্রতিপক্ষ চাপে পড়বে, আর অন্য বোলাররা উইকেট পাবে। এটাই আমার চেষ্টা, এর মধ্যে যদি ভাগ্য ভালো থাকে তাহলে আমি উইকেট পেয়ে যাব।’
সাকিব না থাকায় ব্যাটিং সামর্থ্যরে আরও কিছু প্রমাণ মিরাজের কাছে চাইবে দল। মিরাজ অবশ্য সাকিবের সঙ্গে নিজের তুলনা চান না, ‘সাকিব ভাই বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। আমার এমন কোনো অনুভূতি আসে না। সাকিব ভাই যখন খেলেন, তখন চেষ্টা করি অলরাউন্ডার হিসেবে দলের জন্য ছোট ছোট অবদান রাখার। তিনি অনেক উঁচু মানের ক্রিকেটার। তিনি বাংলাদেশকে অনেক দিন সার্ভিস দিয়ে আসছেন। তিনি দীর্ঘদিন র্যাংকিংয়ের নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার ছিলেন। তার সাথে আসলে আমার তুলনা চলে না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।