Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডায়রিয়া থেকে আকস্মিক কিডনি বিকল

ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

একিউট কিডনি ইনজুরি বা আকস্মিক কিডনি বিকল বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তারমধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ ডায়রিয়া । হাসপাতালে প্রায় ডায়রিয়া থেকে আকস্মিক কিডনি বিকলের রোগী দেখতে পাওয়া যায় । সঠিক চিকিৎসা না হলে এ থেকে মৃত্যুও হতে পারে। অথচ একটু সচেতন হলেই ডায়রিয়া থেকে আকস্মিক কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা যায় ।
কিডনির বিভিন্ন কার্যকারিতা আছে । সেটা যদি হঠাৎ করেই নষ্ট হয়ে যায় অথবা কমে যায় তাকে একিউট কিডনি ইনজুরি বলে। একিউট কিডনি ইনজুরি ঘণ্টা থেকে শুরু করে কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হয় । আগে কিন্তু এর নাম ছিল কিডনি ফেইলিউর। কিন্তু বর্তমানে একে বলা হয় একিউট কিডনি ইনজুরি।
কিডনিতে প্রতিনিয়ত রক্ত পরিবাহিত হচ্ছে। এর জন্য একটা ভাল রক্তচাপের প্রয়োজন পড়ে। কোনো কারণে যদি এই রক্তচাপ কমে যায় তখন সমস্যা দেখা দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শরীরে যদি কোন কারণে পানিশূন্যতা হয় তখন এই সমস্যা হয়। আমাদের দেশের প্রচলিত কারণ ডায়রিয়া এবং বমি। ডায়রিয়া খুবই পরিচিত রোগ আমাদের এখানে । সুপেয় পানির ব্যবস্থা সব জায়গায় নেই। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী খাবারে ভেজাল দেয়। হোটেলেও পচা বাসী খাবার পরিবেশন করা হয়। এজন্য সারাবছর ডায়রিয়ার প্রচুর রোগী দেখা যায় । ডায়রিয়া হলে শরীরে পানিশূন্যতা হয়। রক্তচাপ কমে যায় । দেখা দেয় আকস্মিক কিডনি বিকল।
হঠাৎ কিডনি বিকল হলে যদি সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া যায়, তাহলে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় হয়ে যায় । কোন সমস্যা দেখা যায়না । তবে অনেকেরই একটা ভ্রান্ত ধারণা আছে আকস্মিক কিডনি বিকল হলেই ডায়ালাইসিস করতে হবে। এটি ভুল ধারণা । বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ডায়ালাইসিস লাগেনা। কাজেই আকস্মিক কিডনি বিকলের চিকিৎসায় প্রথমে যে কারণে সমস্যাটি হয়েছে, তার চিকিৎসা করতে হবে। কারণগুলোর চিকিৎসা করার পর কিছু সাহায্যকারী চিকিৎসা দিতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা ভালো হয়ে যায়।
ডায়রিয়া হওয়ার পর যদি দেখা যায় ছয় ঘণ্টার মধ্যেও প্রস্রাব হচ্ছে না বা হলেও অন্য দিনের তুলনায় খুবই কম তখনই ধারণা করতে হবে যে রোগী আকস্মিক কিডনি বিকলের দিকে চলে যাচ্ছে। তখনো অন্য কোনো উপসর্গ তেমন একটা দেখা যায় না। কিন্তু যখন এই প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায় তখন প্রস্রাবের মাধ্যমে যে বিষাক্ত পদার্থগুলো বেরিয়ে যায় তা রক্তের মধ্যে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন, পটাশিয়াম এগুলো শরীরে বেড়ে যায় । সে সময় রোগীর খাওয়ার রুচি কমে যায়, বমি বমি ভাব হয়। অস্বস্তিকর এক পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রচুর পানি পিপাসা পেতে পারে। তখন অনেক সময় রোগী বেশি করে পানি খায়। স্যালাইন বেশী করে দেয়া হয় কিছু ক্ষেত্রে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এরকম করা কখনই ঠিক নয়। এর ফলে শরীরে পানি জমে যেতে পারে। তখন হাত-মুখ-শরীর ফুলে যেতে পারে এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। ফলে রোগী অনেক সময় খারাপ দিকে চলে যায় । ডায়রিয়া থেকে আকস্মিক কিডনি বিকল খুব বেশী দেখা যায় । ডায়রিয়ার রোগীর যদি প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায় বা কমে যায় তবে অবশ্যই দ্রæত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। নাহলে বড় সমস্যা হতে পারে। আর ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে হলে পানি ও খাবারের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কিডনি

২৩ জানুয়ারি, ২০২৩
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
৩ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন