২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ডায়ালাইসিস কি, কেন এবং কিভাবে করা হয়?
ডায়ালাইসিস হচ্ছে কৃত্রিম উপায়ে, যন্ত্রের সাহায্যে রক্ত পরিশোধন বা রক্ত বিশুদ্ধ করার একটি কার্যকর চিকিৎসা প্রক্রিয়া। স্বাভাবিকভাবে “কিডনি” বা বৃক্ক সার্বক্ষণিকাবে শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে দিয়ে আমাদেরকে সুস্থ রাখে। তবে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি রোগীদের, কিডনির কার্যকারিতা অনেকটা কমে গেলে বা তা নষ্ট হয়ে গেলে, একসময়ে কিডনি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হতে পারে। ডায়ালাইসিস করলে কিডনি ভাল হয় না। তবে নিয়মিত ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে কিডনির অধিকাংশ প্রয়োজনীয় কাজ সারিয়ে নিয়ে অনেকটা ভাল থাকা যায়। এ প্রক্রিয়ায় ডায়ালাইসিস সেন্টারের বিশেষ তত্ত্বাবধানে, কৃত্রিম কিডনি বা ডায়ালাইজারের সাহায্যে রক্ত থেকে শরীরের বর্জ্য পদার্থ (ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন ইত্যাদি) ও অতিরিক্ত পানি অপসারণ করা হয়। ডায়ালাইসিসের ফলে সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও বাইকার্বনেটসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইলেক্ট্রোলাইটের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় থাকে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে শরীরের প্রয়োজনীয় লোহিত রক্তকণিকা প্রস্তুতের হরমোন ইরাইথ্রোপোয়েটিন তৈরী, হাড়ের ক্যারসিয়ামের ভারসাম্য রক্ষা ও শরীরের অনেকগুলি বাফার সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করাও কিডনির গুরুত্বপূর্ন কাজ। ডায়ালাইসিস করালেও এগুলোর কোনটা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না।
ডায়ালাইসিসকারীদের ভালো থাকা
অকেজো বা অথর্ব কিডনি নিয়ে ডায়ালাইসিসকারী রোগীরা অনেকটা সুস্থভাবে চলতে পারে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী নিয়মিত ডায়ালাইসিস করা (দিনে ৩-৪ ঘণ্টা করে সপ্তাহে ৩ দিন পর্যন্ত),পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, বাছবিচার করে খাদ্য খাওয়া ও নির্দেশ মতো পরিমিত পানি পান করা অবশ্যই দরকার। তাছাড়া রোগীকে ‘কিডনী রোগ’ ও ‘ডায়ালাইসিস’ সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন, আনন্দের মধ্যে সময় কাটানো, সম্ভব হলে চাকরি বা কাজকর্মে ব্যস্ত থাকা ও নিয়মিত হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি (২-৩ জন মিলে) করতে পারলে তার দুর্বলতা কমে এবং শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়।
পরিশেষে
ডায়ালাইসিস একটি ব্যয়বহুল চিকিৎসা প্রক্রিয়া। একবার ডায়ালাইসিস শুরু করলে সাধারণত জীবনভর তা চালিয়ে যেতে হয়। এর একটি সেশনও মিস করা যায় না। শ্বাস-প্রশ্বাসের মত এটি একটি অতি প্রয়োজনীয় ব্যাপার। নিয়মিতভাবে ডায়ালাইসিসের খরচ যোগাতে গিয়ে অনেককে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়। অনেকে আবার সংসার খরচের পাশাপাশি তার ব্যয়সংকুলানের কথা চিন্তা করে ডায়ালাইসিসই করে না বা শুরু করার কিছুদিন পর তা বন্ধ করে দেয় এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। সরকারি অনুদান বা ভর্তুকি ও বিত্তবানদের সাহায্য-সহযোগিতা পেলে, অনেকের পক্ষে নিয়মিতভাবে ডায়ালাইসিস চালিয়ে যাওয়া অনেকটা সহজ হয়, আরও কিছুদিন তারা সুস্থভাবে বেঁচে থেকে পৃথিবীর আনন্দ উপভোগ ও স্রষ্টার গুণগান গাইতে পারে। কার্ডিয়াক পেসমেকারের মত শরীরে বহনযোগ্য ডায়ালাইজার তৈরির ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা অনেকদূর এগিয়েছেন। এটি সম্ভব হলে অনেকেই বিশেষভাবে উপকৃত হতে পারেন, তাদের হয়রানি ও পরনির্ভরশীলতাও অনেকটা কমে যাবে।
ডাঃ নাসির উদ্দিন মাহমুদ
মেডিসিন ও স্নায়ুরোগে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত
মোবাইল: ০১৯৮০৪৮৫০০৭,
ইমেইল: [email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।