পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বকেয়া টাকা আদায়ে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যানডোরের সঙ্গে সরকারের জটিলতা যেন কাটছেই না। গতবছর রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় কিডনি অ্যান্ড ইউরোলজি ইনস্টিটিউট হাসপাতাল (নিকডু) ও স¤প্রতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করে দিয়েছিল ডায়ালাইসিস সেবা। এবারও একই পথে হাটছে বেসরকারি কোম্পানিটি। ভর্তুকি মূল্যে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস সেবদানের বকেয়া টাকা আদায়ে জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে গত দুইদিন ৬ ঘণ্টা করে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ রাখে স্যানডোর। নির্ধারিত সময়ে ডায়ালাইসিস নিতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো রোববার সকালে পূর্বনির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী রোগীরা সেন্টারে আসেন। কিন্তু স্যানডোরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রি-এজন্ট তথা কাঁচামাল সঙ্কটের কারণে কিছুটা সময় লাগছে। অপেক্ষা করতে হবে। এতে করে দুশ্চিন্তায় পড়েন ডায়ালাইসিস নিতে আসা রোগীরা। পড়েন ভোগান্তিতে। পরে রোগীদের কথা বিবেচনা করে দুপুর দুইটার দিকে পুনরায় সেবা চালু করে প্রতিষ্ঠানটি।
কিডনি ইনস্টিটিউটে স্থাপিত স্যানডোরের ব্যবস্থাপক মো. নিয়াজ খান বলেন, আমরা সরকারি-বেসরকারি অংশিদারীত্বের ভিত্তিতে (পিপিপি) ভর্তুকি মূল্যে রোগীদের সেবা দিচ্ছি। বিনিময়ে সরকারের বছরে দুই কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ করার কথা। ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত টাকা পেলেও ২০২০ সাল থেকে অনিয়মিত দিচ্ছে। সরকারের কাছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা বকেয়া পড়ছে। তবে সেন্টার বন্ধ থাকছেনা। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংকটে শিফটি পিছিয়ে যাচ্ছে। রোগীরা সাময়িক ভোগান্তিতে পড়ছেন। তিনি বলেন, গত বছরও এমন সংকটে স্যানডোর ডায়ালাইসিস বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়। তখন রোগীরা রাস্তায় নেমে আসে। এবারও বেশ কিছুদিন ধরে কাঁচামালের সঙ্কট হচ্ছে। হাসপাতাল পরিচালক ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে পাওনা টাকার জন্য একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন আমাদের লোক মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখনো সাড়া পাচ্ছি না। টাকা না পেলে আগামীকালও (আজ সোমবার) দু-একটি শিফট বন্ধ থাকতে পারে।
তবে হাসপাতালের কর্মকর্তারা বলেন, কিছু টাকা বকেয়া থাকলেও এভাবে সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া ঠিক হচ্ছে না স্যানডোরের। সরকার তো টাকা দিয়েই এসেছে। হয়তো একটু সময় লাগছে, কিন্তু দেবে। হাসপাতাল সূত্র আরও জানায়, ডায়ালাইসিসের রি-এজেন্ট (কাঁচামাল) সঙ্কট হওয়ায় গত শনিবার সকাল আটটার প্রথম শিফটের ডায়ালাইসিস ৬ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। এ সময় স্যানডোর কর্তৃপক্ষ রোগী ও স্বজনদের সমস্যার কথা জানায়। গতকাল রোববারও সকাল ৮টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিতে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ ছিল। এতে সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়।
নীলফামারী থেকে হাসপাতালটিতে ডায়ালাইসিস নিতে আসা মুহাম্মদ খোরশেদ কামাল বলেন, আমি গত দুইবছর ধরে এখানে ডায়ালাইসিস নেই। প্রতি সপ্তাহে দুটি ডায়ালাইসিস নিতে হয়। ডায়ালাইসিসের তারিখ ও সময় পূর্ব নির্ধারিত থাকে। সেই অনুযায়ী রোববার সকাল ৮টায় আমাকে সময় দেয়া ছিল। সকাল সাড়ে সাতটায় এখানে আসি। তবে সরঞ্জাম নেই জানিয়ে অপেক্ষা করতে বলা হয়। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে ডায়ালাইসিসের প্রস্তুতি শুরু হয়। সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে ডায়ালাইসিস শেষ হয়। মিরপুর থেকে আসা আরেক ডায়ালাইসিস রোগী আবুল কালাম আজাদ (৫০) স্বজনেরাও কাছে একই অভিযোগ করেন।
নাম না প্রকাশের শর্তে আরেক রোগীর স্বাজন জানান, প্রথম শিফটি সকাল ৮টায় শুরুর কথা থাকলেও তারা সাড়ে সাতটায় চলে আসেন। আজও ঠিক সময়ে এসেছিলেন, কিন্তু রি-এজেন্ট নাই জানিয়ে দুপুর দেড়টায় ডায়ালাইসিস শুরু করে। এত লম্বা সময় অপেক্ষা করাটা তাদের জন্য খুব কষ্টকর। এরমধ্যে আবার ডায়ালাইসিস হবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা ছিল। তিনি বলেন, এর আগেও অনেকবার এমনটা হয়েছে। রোগীরা এসে দেখেছে ডায়ালাইসিস বন্ধ। পরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও ডায়ালাইসিস না নিয়ে ফেরত যেতে হয়েছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. আক্তারুজ্জামানের কাছে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
উল্লেখ্য, দেশের একমাত্র কিডনি রোগ বিশেষায়িত হাসপাতালটিতে সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যানডোর প্রতিদিন তিন শিফটে চার ঘণ্টা করে প্রায় ৪০০ জনকে ডায়ালাইসিস সেবা দেয়। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সেন্টারটি চালু থাকে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সাল থেকে স্যানডোর ডায়ালাইসিস সেবা দিয়ে আসছে। সেন্টারে মোট ৫৯টি মেশিন রয়েছে। ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে একেকজন রোগী রক্ত পরিশোধন করতে প্রস্তুতিসহ চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।