Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে প্রকট পরিবেশগত সমস্যা

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

বর্ষায় বৃষ্টির অভাবে এবার দক্ষিণাঞ্চলে পরিবেশগত সমস্যা প্রকট। বৃষ্টির অভাবে আমন আবাদের পেছনে রয়েছে খাদ্য উদ্বৃত্ত দক্ষিণের ৬ জেলা। অথচ আমনই এখনো দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল। গতকাল আমন রোপনের ‘খরিপ-২ মৌসুম’ শেষ হয়ে গেছে। দক্ষিণাঞ্চলে আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার ৯০%-এর বেশী অর্জিত হয়নি। বিগত রবি মওশুমে এ অঞ্চলে বোরোর আবাদ ছিল লক্ষমাত্রার চেয়ে ২৮% বেশী। একইভাবে এবার বর্ষা মওসুমজুড়ে কাক্সিক্ষত বৃষ্টির অভাবে দেশের উপক‚লসহ অভ্যন্তরীন নদ-নদীতে ইলিশের বিচরণ সা¤প্রতিককালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে হ্রাস পাওয়ায় জেলে, মোকামের মহাজনদেরও চরম দুর্দিন চলছে। বাজারে সরবরাহ ঘাটতিও ব্যাপক। ফলে দামও আকাশচুম্বি। গতমাসে স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৪৫% কম বৃষ্টিপাতের পরে চলতি মাসে তা আরো নিচে রয়েছে এখনো। ভাদ্রের অমাবস্যায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ থেকে সৃষ্ট নিম্নচাপ কিছু বৃষ্টি হয়। ফলে চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে বরিশালে বৃষ্টি হয়েছে ৫০ মিলিমিটারেরও কম।
সদ্য সমাপ্ত খরিপ-২ মৌসুমে সারাদেশে ৫৩ লাখ হেক্টর আমন আবাদ লক্ষ্যমাত্রার প্রায় শতভাগ অর্জিত হলেও বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলায় তা ৯০ ভাগের বেশী অর্জিত হয়নি। এবার দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে আমন আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ ১২ হাজার হেক্টরের প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর পেছনে রয়েছে। ডিএই’র দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, আবাদ মৌসুম শেষ হলেও অপেক্ষাকৃত নিচু অঞ্চল বিধায় দক্ষিণাঞ্চলে আরো অন্তত এক সপ্তাহ আমন রোপন অব্যাহত থাকবে। তবে এ সময়ে ঘাটতি ৭০ হাজার হেক্টরে আবাদ সম্পন্ন হবে কিনা এবং লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত হবে কিনা সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
এদিকে এবার বর্ষা মওসুমে কাঙ্খিত বৃষ্টির অভাবে দেশের অভ্যন্তরীন নদ-নদীতে ইলিশের বিচরন যথেষ্ঠ হ্রাস পায়। ফলে বাজারে ইলিশের ব্যাপক ঘাটতির সাথে দামও সাধারনের ধরাছোয়ার বাইরে। ভাদ্রের অমাবস্যার সময় হালকা থেকে মাঝারী বৃষ্টিপাতের ফলে কিছু ইলিশ উপক‚ল হয়ে অভ্যন্তরীন নদ-নদীতে প্রবেশ করলেও বৃষ্টি বিদায়ের সাথে ইলিশের বিচরনও অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। গত ১ জুলাই থেকে জাটকা আহরনে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও উপক‚লীয় নদ-নদীতে ইলিশের আর দেখা মেলেনি।
এ ব্যাপারে পাটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়র মৎস অনুষদের ডীন প্রফেসর মো. আলী জানিয়েছেন, মূলত বৃষ্টির অভাবই এবার অভ্যন্তরীন নদ-নদীতে ইলিশের বিচরণ বাঁধাগ্রস্ত করছে। ফলে আহরনও হ্রাস পেয়েছে। তার মতে, বর্ষা মৌসুমে ভারি বৃষ্টি থেকে মওসুমের আগে-পড়ে ইলশেগুড়ি বৃষ্টির অভাব এবার প্রকট। ফলে সাগর থেকে উজানে অভ্যন্তরীন নদ-নদীতে এবার ইলিশও এসেছে কম। তার মতে, অভিপ্রয়ানী মাছÑ ইলিশ শ্রোতের বিপরীতে দৈনিক প্রায় ৭২ কিলোমিটার পর্যন্ত ছুটে চলতে সক্ষম। অপরদিক অশান্ত মওশুমের কারনে এ সময় উপকূলভাগে জেলেরা মাছ শিকারে নামতে পারছে না। ফলে চলতি মৌসুমে দেশে ইলিশের সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দক্ষিণাঞ্চল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ