Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উজানের ঢলে দক্ষিণাঞ্চলের অসংখ্য ঘরবাড়ী ও ফসলি জমি পানির তলায়

প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : অমাবস্যার ভরা কোটাল কেটে গেলেও ফুঁসে ওঠা সাগর উজান থেকে ধেয়ে আসা ঢলের পানি গ্রহণ না করার পাশাপাশি মওসুমী বায়ু উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারী থেকে প্রবল অবস্থায় থাকায়, মাঝারী থেকে ভারী বর্ষণে দেশের বিশাল উপকূলীয় এলাকার ঘরবাড়ী ও ফসলি জমি এখনো পানির তলায়। পায়রাসহ দেশের সবক’টি সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উজানের ঢলের পানিতে সাগরমুখী সবগুলো নদ-নদীই দু’কূল ছাপিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খোদ বরিশাল মহানগরীর অনেক রাস্তাই গত কয়েকদিন ধরে প্লাবিত হচ্ছে। পটুয়াখালী ও বরগুনা শহরেও জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে। মেঘনা ও ভাটি মেঘনায় প্রবল স্রোতে রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের নৌযোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মক ঝুঁকির কবলে। এমনকি পদ্মার প্রবল স্রোতে দৌলতদিয়া ঘাটে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে যানবাহন পারাপার চরম বিপর্যয়ের কবলে। প্রবল স্রোতের কারণে মাওয়া সেক্টরেও ফেরি পারাপারে অতিরিক্ত সময় লাগছে। গতকাল কয়েক দফায় দৌলতদিয়া ঘাটে ভাঙন সৃষ্টি হয়। পারাপারে বিঘœ ঘটায় গতকাল দেশের প্রধান দুটি ফেরি সেক্টরে সহস্রাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল।
জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে দক্ষিণাঞ্চলে বিপুল পরিমাণ বীজতলা ও রোপা আমন গত কয়েকদিন ধরে প্লাবিত হওয়ায় কৃষকদের দুশ্চিন্তাও ক্রমশ বাড়ছে। আগামী দিন তিনেকের মধ্যে পানি সরে না গেলে প্লাবিত বীজতলা ও রোপা ধান আর রক্ষা পাবেনা বলে মাঠ পর্যায়ের কৃষিবিদগণ জানিয়েছেন। আগামী ৪৮ ঘন্টায়ও গোটা উপকূল জুড়ে বৃষ্টিপাতে বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকার কথা বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
তবে অমাবস্যার ভরা কোটাল কেটে গেলেও গতকাল থেকে মাঝারী ও ভারী বর্ষণে পরিস্থিতির উন্নতি ব্যাহত হচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগের মতে মওসুমী বায়ুর বর্ধিতাংশের অক্ষ ভারতের রাজস্থান, মধ্য-প্রদেশ, উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারী থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা মেঘমালা দক্ষিণাঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টি ঝরাচ্ছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বরিশাল ও খুলনাসহ সমগ্র উপকূলীয় এলাকা এবং দেশের প্রায় সর্বত্রই অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। সে সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনার কথাও বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা সহ অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত পরিস্থিতির উন্নতিসহ ফুঁসে ওঠা সাগর কিছুটা শান্ত হলে আগামী দিন তিনেক পরে বর্তমান প্লাবন পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছেন পানি বিশেষজ্ঞগণ। বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর ও ঝলকাঠী জেলার বিস্তীর্ণ ফসলী জমি এখনো এখনো পানির তলায়। এসব জেলায় নদী ভাঙন পরিস্থিতিও ভয়াবহ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উজানের ঢলে দক্ষিণাঞ্চলের অসংখ্য ঘরবাড়ী ও ফসলি জমি পানির তলায়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ