নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে দুটো বছর। ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচের দায়িত্ব নেবার পর যে আশা নিয়ে এসেছিলেন, তার কতটুকু পূর্ণ করতে পারলেন কোর্টনি ওয়ালশ? নিজের প্রাপ্তির জায়গায় কতটুকুই-বা তুষ্ট ক্যারিবীয়ান কিংবদন্তি? এমনই হাজার প্রশ্নের ঝাঁপি নিয়ে মিরপুরে হাজির সংবাদকর্মীরা, গতকাল শেরে বাংলায় উত্তরের ঝাপি খুলে বসেছিলেন ‘পিতার’ আসনে থাকা এই কোচ। একই সঙ্গে শোনালেন হতাশা আর আশার কথা।
ভালো তরুণ পেসার উঠে আসছে না বলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে হাহাকার অনেক দিনের। এমনকি, তরুণ পেসাররা শিখতে আগ্রহী নন, এমন অভিযোগও শোনা যাচ্ছিল এতদিন। তবে এরসঙ্গে একমত হলেন না ওয়ালশ। দায়িত্ব শেষের আগে কয়েকজন পোক্ত পেসার রেখে যাওয়ার আশা দেখছেন কোচ, ‘দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা টেস্ট ক্রিকেট খুব বেশি পাই না। এই যুগে সফরে গেলেও চারদিনের ম্যাচ খুব বেশি পাওয়া যায় না। আমার মনে হয়, কিছু উন্নতি হয়েছে। বেশ কজন ভালো তরুণ পেসার উঠে আসছে। আগেও বলেছি, আমার দায়িত্ব শেষে বাংলাদেশের পেস বোলারদের আমি অনেক উন্নতি করতে দেখতে চাই। দায়িত্ব শেষের আগে কয়েকজন পোক্ত পেসার রেখে যেতে চাই।’
সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে পেস বান্ধব উইকেট পেয়েও সাদা পোশাকে মলিন ছিলেন পেসাররা। এই সফর হতাশার ওয়ালশের কাছেও, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে সবশেষ সফরে যতটা প্রভাব বিস্তার করা উচিত ছিল, আমরা ততটা পারিনি, হতাশ হয়েছি। আশা করি, সামনের সময়গুলোতে দল নির্বাচন থেকে শুরু করে সবকিছু ঠিকঠাক হবে। আমি এখনও আশাবাদী।’
দল নির্বাচনের প্রসঙ্গ যেভাবে তুললেন নিজে থেকেই, সেটি জন্ম দিল কৌতুহলের। ওয়ালশ সেই কৌতুহল মেটালেন নিজের মন্তব্যের বিস্তারিত ব্যখ্যা দিয়ে। তরুণদের সুযোগ না দেওয়া নিয়ে তার আক্ষেপটা ফুটে উঠল স্পষ্ট হয়ে, ‘কাজ এখনও এগিয়ে চলছে। বেশ কজন তরুণ ক্রিকেটার উঠে আসছে। কিন্তু দলে না নেওয়া হলে তো বোঝা যাবে না তারা কেমন! আমার মনে হয়, এদিকটায় আমাদের আরেকটু বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত। আমার মনে হয়, আমরা তরুণদের সুযোগ দিতে একটু বেশিই ভয় পাই। কিন্তু আমরা যদি ওদের শুধু অপেক্ষায় রাখি এবং খেলার সুযোগ না দেই, তাহলে তো লাভ নেই। যত খেলবে ওরা, তত শিখবে। খেললেই অভিজ্ঞতা বাড়বে। ওরা প্রস্তুত নয় বলে যদি সুযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে তো ওরা কখনোই প্রস্তুত হবে না!’
ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজার নিবেদন নিয়ে অনেক প্রশংসা। তার অনুশীলন, তার চেষ্টা তরুণদের মধ্যে অভাব দেখেন অনেকে। তরুণদের মধ্যে ভিন্ন কিছু করার ক্ষুধা আছে কিনা তা নিয়েও চাউর আছে প্রশ্ন। তবে এসবের সঙ্গে একমত নন ওয়ালশ্, ‘আমি বলব না ক্ষুধা নেই। আমার মনে হয় ওদের যথেষ্ট ধারাবাহিক ভাবে সুযোগ দেওয়া হয়নি। তরুণদের যথেষ্ট সুযোগ দিতে হবে। একটি-দুটি ম্যাচ খেলিয়েই বাদ দেওয়া যাবে না। পারফরম্যান্স ভালো-খারাপ হবেই। কিন্তু একটু খারাপ করলেই সবাই বাদ দিতে উঠে পড়ে লাগে। এসবে লাভ বেশি হবে না। কেউ খারাপ করলে শোধরানোর সুযোগ দেওয়া উচিত। যে তরুণ ক্রিকেটারদের আমি দেখেছি, ওরা যথেষ্ট আগ্রহী, শিখতে চায়, পারফর্ম করতে চায়। ওদেরকে সুযোগটা দিতে হবে।’
দায়িত্ব নেওয়ার আগে দূর থেকে দেখেছেন উড়–ক্কু মুস্তাফিজুর রহমানকে। তবে বাংরাদেশের এসে দেখেছেন চোটের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকার চেষ্টায় ব্যস্ত কাটার মাস্টার। ২০১৬ সালে কাঁধের অস্ত্রোপচারের পর আগের সেই ভয়ঙ্কর চেহারায় আর দেখা যায়নি এই গতি তারকাকে। এর পরও অবশ্য উইকেট নিয়েছেন, দলের জয়ে বড় অবদান রেখেছেন বেশ কবারই। তবে আগের চেহারায় ফিরে যেতে পারেননি এখনও। বারবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চোট। মুস্তাফিজ অবশ্য লড়াই করে চলেছেন। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিলেন চোট থেকে ফিরে। সেই সফরে তিন ওয়ানডেতে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট, তিন টি-টোয়েন্টিতে আটটি।
আসন্ন এশিয়া কাপেও তাই ভয়ঙ্কর মুস্তাফিজকে দেখার আশায় বুক বাঁধছেন ওয়ালশ, ‘ও ভালোভাবেই এগোচ্ছে। অবশ্যই যে জায়গাটায় থাকা উচিত, এখনও সেখানে যেতে পারেনি। আমার মনে হয়, এই সফরটি মুস্তাফিজের জন্য খুব ভালো হতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে সে ভালো করেছে। ইনজুরিগুলো যদি দূরে থাকে, সে কেবল আরও ভালোই হবে। কারণ সে স্পেশাল প্রতিভা, তার স্কিলও স্পেশাল। ফিট মুস্তাফিজকে পাওয়া মানে বোলিং আক্রমণে বাড়তি ধার। সে জানে তাকে কি করতে হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।