Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পরিবার বিচ্ছিন্ন করার জন্য সু চি দায়ী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

রাখাইনের সহিংসতা নিয়ে খবর প্রকাশ করায় মিয়ানমারে দন্ডিত রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের স্ত্রীরা দেশটির বেসামরিক নেত্রী অং সান সু চিকে নিয়ে প্রকাশ্যে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। নিজেদের পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য সু চিকে দায়ী করেন তারা। প্রতিবেদক ওয়া লোনের স্ত্রী প্যান ই মোন বলেন, যখন আমি ইংরেজি বুঝতাম না, তখন অং সান সু চি বক্তব্য দিতেন। আমি সবসময় তাদের বক্তব্য শুনতাম। কারণ আমি জানতাম, দেশের নেত্রী কথা বলছেন। ইয়াঙ্গুনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি তাকে ভালোবাসতাম। তাকে খুবই সম্মান করতাম। কিন্তু তিনি বলেছেন, আমার স্বামী প্রতিবেদক না। কারণ তারা দেশের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছেন। তার জবাবে আমি বিপর্যস্ত বোধ করছি। জাপানিজ স¤প্রচার মাধ্যম এনএইচকে-কে গত জুনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সু চি বলেছেন, রাষ্ট্রীয় গোপনীয় লঙ্ঘনের দায়ে দুই প্রতিবেদককে আটক করা হয়েছে। প্যান ই মোন বলেন, আমাদের দেশের নেত্রী মামলাটি সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত নন। আমাদের দুই পরিবারই তাকে খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু যাকে এত শ্রদ্ধা করতাম, তিনি যখন আমাদের ভুলভাবে তুলে ধরেন, তখন আমরা খুবই অনুশোচনা বোধ করি। তিনি বলেন, দুই মাস আগে জন্ম নেয়া আমাদের কন্যা তার বাবার আদর পাচ্ছে না। যখন আমার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়, তখন আমি ভেবেছিলাম, সন্তান প্রসবের আগেই তিনি ছাড়া পাবেন। কিন্তু আমার সন্তান ভূমিষ্ঠ হলেও স্বামী মুক্তি পায়নি। আমার জোরালো বিশ্বাস ছিল, আমার কন্যা তার কারামুক্ত বাবাকে দ্রুতই দেখতে পাবে। কিন্তু কারাদন্দের শাস্তি ঘোষণার পর আমার সব আশা ধুলোয় মিশে গেছে। রাখাইনের সেনা অভিযানের সময় ইনদিন গ্রামে ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যা করে লাশ পুঁতে ফেলার একটি ঘটনা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছিলেন সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) ও কিয়াও সো ও (২৮)। বরাবরই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আসা এ দুই সাংবাদিক মামলার বিচারের সময় আদালতকে বলেছিলেন, গত ১২ ডিসেম্বর ইয়াঙ্গুনের এক রেস্তোরাঁয় দাওয়াত দিয়ে নিয়ে দুই পুলিশ সদস্য তাদের হাতে কিছু মোড়ানো কাগজ ধরিয়ে দেন এবং তার পর পরই সেখান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পশ্চিমা কূটনীতিবিদের কেউ কেউ এবং অধিকার সংগঠনগুলো দুই সাংবাদিকের এ বিচারকে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়ায় থাকা মিয়ানমারের জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে দেখছিলেন। সাজার রায় আসার পর থেকেই দুই সাংবাদিকের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন তারা। দুই সাংবাদিকের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ওয়া লোন ও কিয়াও সো নির্দোষ, তাদের মুক্তি দিয়ে স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ দেয়া হোক। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হেলি বলেছেন, রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে জেলে পাঠানো হয়েছে সত্য বলার অপরাধে। তাদের মুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র আরও সোচ্চার ভূমিকা নেবে। গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কয়েক ডজন নিরাপত্তাচৌকিতে হামলার জবাবে সেনাবাহিনী ওই নির্মম দমন অভিযান শুরু করে। জাতিসংঘ বলছে, সেনাবাহিনীর ওই অভিযানে এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। রাখাইনে সেনাবাহিনীর ওই দমন-পীড়নের মুখে গত বছর আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। এ ঘটনাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেখা হচ্ছে দক্ষিণ এ অঞ্চলের সবচেয়ে দ্রæত বেড়ে ওঠা শরণার্থী সংকট হিসেবে। গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরিবার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ