কলেজ ছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের (উত্ত্যক্ত করার) প্রতিবাদ করায় সাভারে বখাটেদের ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র নৃশংসভাবে খুন হয়েছে। এঘটনায় জড়িত সন্দেহে আসাদুল নামে এক বখাটেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এহত্যাকান্ডের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহত মারুফ খাঁন (২১) সাভার পৌর এলাকার নামাগেন্ডা মহল্লার আতাউর রহমান খানের ছেলে। মারুফ চলতি বছর ঢাকার মিরপুর কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
ঈদের আগের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাভার পৌর এলাকার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গেন্ডা বাসস্ট্যান্ডের পাশে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। পরে মুমূর্ষু মারুফকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মারুফ ছিল সবার ছোট ও আদরের। ঈদের দিন বুধবার ময়না তদন্ত শেষে নামাজের জানাজার পর রাতে আশুলিয়া থানার শিমুলিয়া ইউনিয়নের মুনসুরবাগ পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে ঘটনার দিন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) বুলবুল আহমেদ জানায়, ঈদের আগের দিন রাজাবাড়ি এলাকায় এক তরুণীকে (ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী) মঞ্জু, শুভ ও শ্যামলসহ কয়েকজন ইভটিজিং (উত্ত্যক্ত) করলে মারুফ এর প্রতিবাদ করেন। পরে গেন্ডা এলাকায় মারুফকে একা পেয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় বখাটেরা। পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার শারিরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। সাভারের উলাইলে কুরবানির পশুর হাট থেকে বের হয়ে বখাটেরা এ ঘটনা ঘটায় বলে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা প্রামিকভাবে জানতে পেরেছেন।
পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে নিহতের বড়ভাই বাদি হয়ে তালবাগ ও টিয়াবাড়ি মহল্লার মঞ্জু, শ্যামল, প্লাবন, মমিন, শামীম, রইছ, আসাদুল, মুক্তাদির, ইমরানের নাম উল্লেখ করে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি পুলিশ ছাড়াও গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র‌্যাব ছায়া তদন্ত করছে। ইতোমধ্যে সিসিটিভি ফুটেজও পুলিশ হাতে পেয়েছে।
মামলার বাদি লুৎফর রহমান খান মানিক দাবি করেন, মামলার আসামিরা হেলমেট পরে মোটরসাইকেল নিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের তারা নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। ঘটনাাস্থলে পুলিশের সিসিটিভি রয়েছে। ভিডিও ফুটেজে পুরো ঘটনা স্পস্ট। ঘাতকদের বেশ কয়েকজন মদদ দিচ্ছে বলেও মানিক দাবি করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অপূর্ব দাস বলেন, গ্রেফতারকৃত আসাদুলের আগামী সোমবার রিমান্ড শুনানি হবে। তবে মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে সাভারের ব্যাংক কলোনি মহল্লায় এক স্কুলছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় একই গ্রুপ (মঞ্জু গ্রুপ) অ্যাসেড স্কুলের তিন শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম করলে থানায় মামলা হয়। এরপরও তারা স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের ইভটিজিং করেই আসছে।