নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
প্রথমেই আসবে উদ্বোধনী প্রসঙ্গ। তামিমের উদ্বোধনী সঙ্গী আসলে কে? এই প্রশ্নের উত্তর গত কয়েক বছর ধরেই খোঁজার চেষ্টা করছে বিসিবি। কিন্তু উত্তর মেলেনি। বর্তমানে তামিমের সঙ্গী এনামুল হক। ছয় বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া এই ক্রিকেটার নতুনভাবে দলে ফিরেছিলেন অনেকগুলো প্রতিশ্রæতি দিয়ে। কিন্তু গত সাত ম্যাচের একটিতেও তার প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। এসময় সাকুল্যে তার রান ৮৮। দলপতি মাশরাফি নিজে আশা করেছিলেন, এটা হবে এনামুলের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর সিরিজ। কিন্তু তিন ম্যাচে ৩৩ রান করে আবারো হতাশ করেন এনামুল।
এর আগে এনামুলের জায়গায় প্রমাণের অতিরঞ্চিত সুযোগ পেয়েছেন সৌম্য সরকার। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ। এরই মাঝে লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস ছিলেন আসা-যাওয়ার মাধ্যে। লিটন প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও পারফর্মান্সের বিচারে ইমরুলকে কেন বার বার ছুড়ে ফেলা হয়েছে এর শক্ত এবং যুক্তিসংগত কারণ কারো জানা নেই। ওয়ানডেতে ইমরুলের শেষ কয়েকটি ম্যাচের দিকে তাকালে কিন্তু অনেক প্রশ্ন মনে জাগতে পারে। এক্ষেত্রে প্রথম প্রশ্নটা হলো, এনামুল ও সৌম্যের মত কি ইমরুলকে প্রমাণের যথেষ্ঠ সুযোগ দেয়া হয়েছে? শেষ ১৪ ম্যাচে প্রায় ৪৩ গড়ে ৫৯৯ রান করেও ইমরুল কেন দলের বাইরে? ধীর ব্যাটিংয়ের একটা অভিযোগ অবশ্য ইমরুলের প্রতি আছে। এরপরও কি তিনি সৌম্য, লিটন ও এনামুলের চেয়ে ভালো বিকল্প নন?
অবস্থা বিচারে মনে হয় না এরপরও ইমরুলের দিকে নজর দিবেন নির্বাচকরা। তাদের আতসী কাচের নিচে থাকবেন আগামীকাল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজের দিকে। যেখানে ভালো করে আবার তামিমের সঙ্গী হওয়ার সুযোগ পানে লিটন ও সৌম্য।
দ্বিতীয় প্রশ্নে অবশ্যই আসবে ফিনিশিংয়ের বিষয়টি। এই দায়ীত্ব নেবেন কে? সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এই দুর্বলতা বাংলাদেশকে আরো একবার দেখিয়ে দিয়েছে চোখে আঙুল দিয়ে। মাহমুদউল্লাহ হয়ত হতে পারেন এর ভালো সমাধান। বিশেষ করে ইনিংসের শেষ পাঁচ ওভারে। এই সিরিজেও এসময়ে তার ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট ছিল ২২৪.২৯। ওয়ানডে ও টি-২০তে এই ভুমিকায় নিজেকে প্রমান করেছেন মাহমুদউল্লাহ।
সিরিজে মাহমুদউল্লাহর পরে ব্যাট করেছেন সাব্বির রহমান ও মোসাদ্দেক হোসেন। তারাই ছিলেন মূলত ফিনিশারের ভূমিকায়। দুজনেই ছিলেন চরমভাবে ব্যর্থ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ ছিল এর আদর্শ উদাহরণ। সাব্বির যখন ক্রিজে নামেন তখন জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ২৮ বলে ৩৯। যে পরিস্থিতির বিবেচনায় সাব্বিরকে দলে নেওয়া তার সঙ্গে যা পুরোপুরি মানানসই। প্রত্যাশা ছিল এদিন নিশ্চয় হতাশ করবেন না ডানবাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু ব্যর্থতার ধারাবাহীকতা বজায় রেখে এদিনও সাব্বির আউট হন দৃষ্টিকটুভাবে ফুলটস বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে। ওয়ানডেতে টানা ১৪ ইনিংস কোন ফিফটি নেই তার ব্যাটে। সব সংস্করণ মিলে শেষ ৩০ ইনিংসে ফিফটি মাত্র দুটি!
মোসাদ্দেক অবশ্য বোলিংয়ে কিছুটা ব্যাকআপ দেন। তবে তার কাছে দলের আসল চাওয়া তো ব্যাটিং-ই। বিশেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি যে কাজটি অবলীলায় করেন সেই ফিনিসিংটা। কিন্তু তিনিও কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছেন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে যখন তিনি উইকেটে এলেন জয়ের জন্য তখন চায় ৫ বলে ৮ রান। এই অবস্থায় প্রথম দুই বলে কোন রানই নিতে পারেননি। বাংলাদেশও ম্যাচ হারে ৩ রানে। সব সংস্করণ মিলে তার ব্যাটেও ফিফটি নেই ১৬ ইনিংস। বাধ্য হয়ে তাই সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ৩৯তম ওভারে হাতে ব্যাট তুলে নেন মাশরাফি।
এমতাবস্থায় সমাধানের খোঁজে মোসাদ্দেককে প্রমোশোন দিয়ে উপরে ও মাহমুদউল্লাহকে নীচে নামিয়ে দেখা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে শেষে দ্রæত রান তোলার আসল দায়ীত্বটা পড়বে মাহমুদউল্লাহ উপর। পরিষ্কারভাবেই সাব্বিরের এখন বিশ্রাম দরকার। এমন ভুমিকায় বিকল্প হতে পারেন আরিফুল হকও। তাছাড়া পেস বোলিংটাও জানা আরিফুলের। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পেস কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখে আরিফুলকে এখন থেকে প্রস্তুত করা যেতে পারে।
এই সিরিজে ¯øগ ওভারের সমস্যায় খুব বেশি পড়তে হয়নি বাংলাদেশকে। তবুও ¯øগ ওভারে খরুচে বোলিংয়ের সমস্যা বাংলাদেশের বেশ পুরোনো। যদিও এই ভুমিকায় নিজেকে ভালোভাবেই প্রমাণ করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। গত তিন বছরে ওয়ানডের ¯øগ ওভারের দ্বিতীয় মিতব্যায়ী বোলার মুস্তাফিজ (৬.০৬)। ওভার প্রতি ৬ রান দিয়ে এই তালিকায় সবার উপরে রশিদ খান। এখন প্রশ্ন হলো, ¯øাগ ওভারে মুস্তাফিজকে সঙ্গ দেবে কে?
রুবেল হোসেন সিরিজে শেষ পাঁচ ওভারে রান দিয়েছেন ১০.৪০ গড়ে (গত দুই বছরে যে গড় ৭.৮৯)। মুস্তাফিজের চেয়ে যা ওভারপ্রতি ৪.৬৬ বেশি। মাশরাফি ও সাকিব বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলার। এই সিরিজে তারা ¯øগ ওভারে বল করেছেন মাত্র ২ ওভার। খরুচে হলেও এসময় উইকেট নেয়ার সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। এখন তিনি দলের বাইরে।
বোলিংয়ের প্রসঙ্গ আসলে আরো একটি প্রশ্ন কিন্তু চলে আসবে। তা হলো, মিরাজ কি দীর্ঘমেয়াদী নতুন বলের বোলার?
খুব বেশি উইকেট নিতে না পারলেও সিরিজের সফল বোলারদের একজন মেহেদী হাসান মিরাজ। পেস, লেন্থ, ভেরিয়েশন দিয়ে ব্যাটসম্যানদের ভালোই ধন্দে ফেলেছেন এই ডানহাতি অফ স্পিনার। প্রথম পাওয়ার প্লেতে গেইল-লুইসদের মত বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানদের সামনে রান দিয়েছেন মাত্র ৩.৭৩ গড়ে। একই ভূমিকায় তাকে দেখা যেতে পারে এশিয়া কাপ এবং ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও। কিন্তু ফেব্রæয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের পেস কন্ডিশনে? ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপেই বা নতুন বলে মাশরাফির সঙ্গী হবেন কে? মিরাজ?
সাকুল্য বিবেচনায় আরো বড় প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে নির্বাচকমÐলিদের। তা হলোÑ দলের বেঞ্চ কতটা শক্তিশালী? ক্রীড়াঙ্গণে একটা কথার প্রচলন আছে, যে দলের বেঞ্চ যত বেশি শক্তিশালী সেই দল তত বেশি শক্তিশালী। এক্ষেত্রে প্রশ্ন এসেই যায়Ñ তামিম, মুশফিক, সাকিব, মাশরাফি ও মাহমুদউল্লাহর বিকল্প কি এখনো আবিষ্কার করতে পেরেছেন বির্নাচকরা?
আগামী ১০ মাসে বাংলাদেশের সামনে অনেকগুলো ম্যাচ। রয়েছে ২০১৯ বিশ্ব্কাপও। উপরোক্ত জায়গা গুলোতে তাই উন্নতির বিকল্প নেই। বিশেষ করে টেস্ট ও ওয়ানডে ওপেনারের খোঁজ পাওয়াটা সবচেয়ে বেশি জরুরী। এক্ষেত্রে তামিমের সঙ্গী হতে পারেন তরুণ ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। যদিও ওয়ানডেতে এখনো তার অভিষেক হয়নি।
বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সঙ্গে বর্তমান আয়ারল্যান্ড সফরে শান্ত। এই সফর থেকে হয়ত অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবেন নির্বাচকরা। দীর্ঘদিন ধরে ওয়ানডে থেকে নির্বাসিত মুমিনুল হকের উপর বাড়তি নজরের কথা আগেই বলেছেন বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। একই সফরে নিজেদের প্রমাণ করে জাতীয় দলের বার্তা দেয়ার সুযোগ মিজানুর রজমান, সাইফ হাসান, আল আমিন ও আফিফ হোসেনদের মত ব্যাটসম্যানদের সামনেও। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পেস কন্ডিশনের বিবেচনায় নজরে থাকবেন তাসকিন আহমেদ ও সাইফউদ্দিনরাও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।