শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
বাংলা কথা সাহিত্যের জগতে হুমায়ূন আহমেদ একজন বলিষ্ঠ ও সুদক্ষ কথা সাহিত্যিক। কথা সাহিত্যে হুমায়ূন আহমেদ সবচেয়ে বেশি পাঠকপ্রিয়তায় অবস্থানরত একজন পরিশ্রমী কলম সৈনিক ছিলেন। হুমায়ূন আহমেদ এর কথা সাহিত্যে আমরা মুগ্ধ এবং বিমোহিত ছিলাম, আছি। এই কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এর অগণিত গুণগ্রাহী বাংলা সাহিত্যে রয়েছেন। শুধু কথা সাহিত্যে নয়। গান, নাটক, উপন্যাস, রম্যরচনা, চলচ্চিত্র এবং গল্পে এক সার্থক লেখক ছিলেন তিনি। পাঠকপ্রিয়তায় শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতীসহ সকল বয়সের কাছে তিনি ছিলেন সমান জনপ্রিয় একজন লেখক। সুপরিচিত এই হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্যের নন্দিত প্রতিভায় এক বহুমাত্রিক লেখক হিসেবে খুব সহজেই অনুমেয় হয়ে আছেন আমাদের পাঠক হৃদয়ে। বাংলা সাহিত্যকর্মে দেশে-বিদেশের পাঠকপ্রিয়তায় শীর্ষে উঠে এসেছেন। পাঠকপ্রিয়তার শ্রেষ্ঠ এই গুণী কথা শিল্পী ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কুতুবপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করে ছিলেন। পাঠকপ্রিয়তায় হুমায়ূন আহমেদ এর গ্রন্থগুলো আকাশচুম্বী সাফল্যতায় বাংলা সাহিত্যেকে এনে দিয়েছিল এক নতুন জোয়ার। হুমায়ূন আহমেদ এর গ্রন্থ প্রকাশের জন্য বছরের পর বছর হুমায়ূন আহমেদ এর পিছনে ঘুরঘুর করে ঘুরতেন প্রকাশকরা। সাফল্যের সোপানে বহুমাত্রিক লেখক হয়ে উঠায় তিনি উচ্চজাগানিয়া মানুষ এর বিশ্বাসের জগতে বিচরণ করতে সক্ষম হন। নিজ সাহিত্যকর্র্মে নিজ পরিচয় অর্জন করেছেন আমাদের কথা সাহিত্যের বিজ্ঞ কথা সাহিত্যিক পরিচয়ে। বাংলা সাহিত্যকর্মে উচ্ছ¡সিত প্রশংসার চিত্রায়নে তিনি ছিলেন সুপ্রশংসিত। মানুষের শৈল্পিক আনন্দের বাচনভঙ্গি কিংবা মানুষের শৈল্পিক রুচিশীলতার অঙ্গ সৌষ্টবে মিষ্টি-মধুর চেহারার হাসিখুশি মেজাজের এক সুন্দর স্বভাব ছিলো হুমায়ূন আহমেদ এর। হুমায়ূন আহমেদ এর নাটক দর্শকের মনে আনন্দের জোয়ার এনে দিতো। দর্শক হৃদয়ে আবেগে ভাবের রঙিন রঙ ছড়াতো আনন্দের ঢেউ তোলে। তাঁর গান এবং গান সংগ্রহে ছিলো আদর্শিক আধ্যাত্মিকতার দর্শনতত্বে অন্তর্নিহিত একটি জগতের ভিন্নতায় আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া যেমনÑ ‘মরিলে কান্দিস না আমার দায়’। হুমায়ূন আহমেদ এর চিন্তা, চেতনায় নন্দিত চর্চার বহিঃপ্রকাশ ছিলো। বাংলা সাহিত্যে এক সময় প্রকাশকরা লেখকদেরকে গ্রন্থ প্রকাশ করে কোনো টাকা দিতেন না। প্রকাশকদের এই নীতির বিরুদ্ধে হুমায়ূন আহমেদ পেরেছেন আমাদেরকে, দেখিয়ে যেতে, শিখিয়ে যেতে প্রকাশকরা টাকা নিয়ে লেখকের পিছনে বছরের পর বছর কিভাবে ঘুরতে পারেন। এমন এক বিশাল বিপ্লবী পরিবর্তন তিনি নিয়ে আসলেন লেখকদের জীবনে ভালোবাসার আধুনিকতায় হয়ে উঠলো চেতনার বিশ্বাসী জগৎ। অধ্যাপনার মধ্য দিয়ে জীবনের কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যামেস্টির অধ্যাপক ছিলেন তিনি প্রথমে থেকেই। কিন্তু; হুমায়ূন আহমেদ এই অধ্যাপনার চাকরি ছেড়ে ছিলেন লেখালেখিকে নিজ পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে। একদিকে বই লেখা আরেকদিকে ছিলেন নাটক, চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়ে ব্যস্ত এক সাহিত্যের কারিগর। লেখালেখিতে নিজের জীবনের ব্যস্ততায় নিজেকে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছিলেন। বাংলা সাহিত্যে নন্দিত নরকে হুমায়ূন আহমেদ এর এক বিখ্যাত উপন্যাস ছিলো। হুমায়ূন আহমেদ এর এই নন্দিত নরকে উপন্যাসটি ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশ পেয়েছিলো। এই উপন্যাসটির মাধ্যমে জনপ্রিয়তার শীর্ষ আসনের তুমুল বেগ আসতে থাকে আর পিছনে থাকাননি- শুধু সামনেই চলতে থাকেন। এভাবে লিখতে থাকেন তিনি তুমুল থেকে তুমুল বেগের উপন্যাসগুলো। শঙ্খনীল কারাগার, আগুনের পরশমণি জাদুকরী দর্শক ও পাঠকপ্রিয়তায় উঠে এলেন। বলা যায় তারপরও থামেননি, আরো প্রবল হয়ে উঠলেন যেনো প্রবলের কর্মক্ষমে বিজয়ী কলম যোদ্ধা হয়ে। যশোহা বৃক্ষের দেশে, এলেবেলে, মজার ভূত, তোমার ভালোবাসা, মিসির আলী এবং হিমুর মতো যুগ উত্তীর্ণ উপন্যাস ও গল্পগুলো আজ বাংলা সাহিত্যে কালজয়ী। এলেবেলে একটি বিখ্যাত হাসির গ্রন্থ, মজার ভূত লেখকের খুব চমৎকার একটি শিশুতোষ গ্রন্থ, তোমার ভালোবাসা বিখ্যাত একটি সায়েন্স ফিকশন গ্রন্থ। শঙ্খনীল কারাগার গ্রন্থটি পাঠক পড়লে মনে করবেন তিনি ছিলেন একজন কবি, আমার মনে হয় আসলেই এটি একটি কবিতা। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন কবিতার লাইন থেকে বেশ কিছু গ্রন্থের নাম দিয়েছিলেন মনে পড়ছে শ্যামল ছায়া, সে আসে ধীরে, তুমি আমায় ডেকে ছিলে, ছুটির নিমন্ত্রণে, সে দিন চৈত্র মাস নামগুলো থেকে বুঝা যায় কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ভালোবাসতেন, পছন্দ করতেন, পাঠ করতেন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ লিখলেন বিখ্যাত একটি উপন্যাস জোছনা ও জননীর গল্প। আমাদের এই জাদুকরী জনপ্রিয় লেখক ২০১২ খ্রিস্টাব্দ ১৯ জুলাই আমাদের রেখে না ফেরার দেশে চলে যান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।