পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের প্রচার প্রচারণার হাওয়া জোরে শোরে বইতে শুরু করেছে। যদিও এরমধ্যে উত্তাপ ছাড়িয়েছে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ প্রার্থীর একে অপরের বিরুদ্ধে আচরন বিধি ভঙ্গের অভিযোগ। দলবেধে চলছে প্রচারপত্র বিতরণ। রাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে রয়েছেন পাঁচজন। আওয়ামী লীগের খায়রুজ্জামান লিটন, বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, ইসলামী আন্দোলনের শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় পাটির হাবিবুর রহমান আর গণসংহতি আন্দোলনের মুরাদ মোর্শেদ। এদের মধ্যে প্রচারণার মাঠে খায়রুজ্জামান লিটনের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সর্বত্র তার ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। অন্য প্রার্থীদের পোস্টার ব্যানার তেমন নজরে আসছেনা। বিএনপির বুলবুলের পোস্টার মাঝে মধ্যে চোখে পড়ছে। গণসংহতি আন্দোলনের মুরাদ মোর্শেদের কিছু পোস্টার দেখা যায়। অন্য দুজন হাবিবুর রহমান ও শফিকুল ইসলামের তা দেখা যায়নি। তবে হাবিবুর রহমান তার কাঠাল মার্কা নিয়ে সোসাল মিডিয়ায় ঝড় তোলার চেষ্টা করছেন। গণমঞ্চ ও গণসংহাতি আন্দোলন সমন্বিত মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদের নির্বাচনী প্রচারনা আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করেন জোনায়েদ সাকিসহ নেতৃবৃন্দ। সাহেব বাজার এলাকায় গণসংযোগকালে তারা বলেন মানুষ পরিবর্তন চায়। এই পরিবর্তন প্রত্যাশী জনগণ বর্তমান দুই বড় দলের প্রার্থীদের দূর্নীতি লুটপাটের নীতির বাইরে একটি দূর্নীতি মুক্ত সিটি কর্পোরেশন চায়। তাদের কাছ থেকে ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে গতকালও নগরী চষে ফেরেন দুই হেভিওয়েট প্রার্থী লিটন ও বুলবুল। বিকেলে নগরীর প্রানকেন্দ্র সাহেব বাজার এলাকায় খায়রুজ্জামান লিটন মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে প্রচারনা মিছিল করেন। অন্যদিকে সাবেক মেয়র বিএনপির জায়েন্ট নেতা মিজানুর রহমান মিনুকে সাথে নিয়ে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নগরীর পশ্চিমাঞ্চল দুই নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন।
লিটনের গণসংযোগ
নগরীর আরডিএ মার্কেট, কাপড়পট্টি ও স্বর্ণপট্টি এলাকায় গণসংযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত, মহাজোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। গতকাল সকাল তেকে দুপুর পর্যন্ত এ গণসংযোগ করেন। বিকেলে নগরীর শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে গণসংযোগ করেন। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীর অনেক উন্নয়ন করার আছে। নির্বাচিত হলে সবার পরামর্শ নিয়ে কাজ করা হবে। নগরীতে শিল্প-কারখানা গড়ে লক্ষাধিক ছেলে-মেয়ের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। এসিবি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রাজশাহীর সব ব্যবসায়ীদের স্বল্প সুধের ঋণের ব্যবস্থা করবো। নৌকা হচ্ছে স্বাধীনতার প্রতীক, নৌকা উন্নয়নের প্রতীক, রাজশাহীর উন্নয়নের জন্যে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করুন। নগরবাসীর কাঙ্খিত সব উন্নয়ন হবে।
বুলবুলের গণসংযোগ
বিএনপি ২০দলীয় জোটের মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল গতকাল সকাল থেকে ১৬নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু, মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলনসহ নেতৃবৃন্দ ও ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল আহম্মেদ।
এছাড়াও মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ নেতাকর্মীরা অত্র ওয়ার্ডের বিভিন্ন গলি ও বউ বাজারসহ বাড়িতে বাড়িতে যান এবং ধানের শীষের জন্য দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করেন। সমর্থকরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ধানের শীষের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকে। এলাকার প্রতিটি জনগণ বর্তমান সরকারের নির্যাতন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, বিচার বহির্ভূত হত্যা, খুন, গুম এবং বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজা প্রদানের প্রতিবাদে ধানের শীষে ভোট কামনা করেন। যত রকমের বাধা আসুক না কেন সকল বাধা অতিক্রম করে তারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন। গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিনু বলেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিএনপি মেয়র প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার, ও ফেস্টুন সরকার দলীয় প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা এবং অতি উৎসাহী পুলিশ সদস্যরা এখনো টাঙ্গাতে বাধা প্রদান করছে, আবার ছিড়ে ফেলে দিচ্ছে। এছাড়াও ১৬নং ওয়ার্ডে বুলবুলের ফেস্টুন ছিড়ে ডাস্টবিনে ফেলে রেখেছে। ওয়ার্ডে যেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ভোটারদের ধানের শীষে ভোট দিতে নিষেধ করছে। এমনকি ভোট কেন্দ্রে না যাওয়া জন্য ভয় দেখাচ্ছে। সেইসাথে ভোট কেন্দ্রে গেলেও নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা শুরু করেছে। তিনি আরো বলেন, রাজশাহী শান্তির শহর। কিন্তু এই সরকারী দলীয় প্রার্থী ও তাদের দোসরদের জন্য রাজশাহীর পরিবেশ ইতোমধ্যে গরম হতে শুরু করেছে। বিএনপি কখনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম করেনা। কারো পোস্টার ছিড়ে না, কারো জমি দখল করেনা, টেন্ডার বাজি করেনা, কমিশন খায়না। এগুলো সরকার দলের লোকজনের কাজ। তারা এই সকল কাজ করে টাকার পাহাড় গড়েছে।
জামায়াত নিয়ে শংকায়
রাসিক র্নিবাচনে জোটের অন্যতম শরীক জামায়াতে ইসলামীকে কোনভাবেই তার ধারে কাছে দেখা যাচ্ছেনা। এবার তারা প্রথমে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও কেন্দ্রীয় নির্দেশে মনোনয়নপত্র তুলেনি। আবার স্থানীয় ভাবে জোট প্রার্থীকে এখন পর্যন্ত সমর্থন জানায়নি। তাদের মেয়র প্রার্থী না থাকলেও ত্রিশ ওয়ার্ডে রয়েছে ষোলজন কাউন্সিলর প্রার্থী। এরমধ্যে চৌদ্দজন সাধারণ কাউন্সিলর আর দুইজন মহিলা সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর। এরা সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করছেন। বিএনপির ত্রিশটি ওয়ার্ডের মধ্যে একটিমাত্র ওয়ার্ডে তাদের প্রার্থী দেয়নি। কারন আগে থেকেই ত্রিশ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে জামায়াতের প্রার্থী। এখানে আব্দুল সামাদ কারাগার থেকে আবারো প্রার্থী হয়েছেন। বিগত পরিষদে বিএনপি জামায়াত জোটের কাউন্সিলরদের সংখ্যা বেশী ছিল।
বিএনপি সূত্র জানায় বিএনপি জামায়াত প্রার্থীরা যার যার মত কাজ করবে। তবে মেয়র পদে জোটকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিএনপি নেতা সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেন সময় মত জামায়াত জোটের পক্ষে মাঠে নামবে। তাছাড়া রাজশাহী অঞ্চল ধানের শীষের ঘাটি। মানুষ নির্বিঘে ভোট দেবার সুযোগ পেলে এবারো ব্যালট বিপ্লব ঘটবে। রাজশাহী অঞ্চল বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীদের ঘাটি। বিএনপির বেশ কজন সিনিয়র নেতার সাথে আলাপকালে তারা বলেন প্রত্যেক নির্বাচনের আগে জামায়াত এমন রাজনৈতিক দরকষাকষি করে। অতীতেও এমন করেছে। বনিবনা হওয়ায় মাঠে নেমেছে। এ প্রজম্মের কজন তরুণ নেতা বলেন জামায়াতের রাজনীতি সহজে বোঝা যায়না। এরা কখনো আওয়ামী লীগের কাঁধে চাপে আবার বিএনপির কাঁধে। দুদিক থেকে সুবিধা নিয়ে তারা সাংগঠনিক ভিত্তিক মজবুত করেছিল। এদের একটা শক্ত অবস্থান রয়েছে ভোটের রাজনীতিতে। দৃশ্যত তারা রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা হলেও ভেতরে ভেতরে সাংগঠনিকভাবে ভাল অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচনে এরা একটা ফ্যাক্টর। জামায়াতকে নিয়ে ২০ দলীয় জোটের যখন এমনি টান পোড়ন। তখন সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে জামায়াত নিয়ে আওয়ামীলীগও খুব স্বস্তিতে নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।