২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
আম বিশ্বের সেরা ফল। স্বাদে, গন্ধে আর পুষ্টিমান বিবেচনায় কোনো ফলই এর সমান নয়। তাইতো আমকে বলা হয় ‘ফলের রাজা’। জাতীয় গাছের নামকরণও এর দখলে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১০ খ্রিস্টাব্দে মন্ত্রীপরিষদের এক সভায় আমগাছকে জাতীয় বৃক্ষ হিসেবে ঘোষণা দেন। এ খেতাব দেয়া যুক্তিও আছে অনেক। যেমন: মুজিবনগর সরকার গঠন হয় মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার এক আম্রকাননে, মহান ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় বসে। আমাদের জাতীয় সংগীতেও আমের কথা উল্লেখ রয়েছে।
আমের আকার-আকৃতি হরেক রকমের। ছোট, বড়, মাঝারি। আবার গোলাকার, লম্বাটে চ্যাপ্টা, সরু। কচি অবস্থায় সব আম দেখতে সবুজ। কিন্তু পাকলে জাতের ভিন্নতায় রঙও হয় আলাদা। স্বাদে কোনোটি টক, হালকা টক। কোনোটি আবার মিষ্টি, অতিমিষ্টি, পানসেও হয়। আঁশযুক্ত, আঁশহীনও থাকে। একেকটির গন্ধ একেক ধরনের । কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থায় খাওয়া যায়। কাঁচা আমে ভিটামিন-সি এবং পাকা আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-এ।
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, এর প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা ফলে (আহারোপযোগী) আমিষ ১ গ্রাম, শর্করা ২০ গ্রাম, চর্বি ০ দশমিক ৭ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০ দশমিক ৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, লৌহ ১ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৮৩০০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন-বি১ ০ দশমিক ১০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি২ ০ দশমিক ০৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ৪১ মিলিগ্রাম এবং খাদ্যশক্তি রয়েছে ৯০ কিলোক্যালরি। আমের তৈরি জুস, মোরব্বা, জেলি, স্কোয়াশ খেতে খুবই সুস্বাদু। এছাড়া চাটনি, আচার, আমসত্ব, আমসি, আমচুর, কেচাপ এগুলো বেশ লোভনীয় খাবার। আম শুধু মজাদার ফলই নয়, এর ঔষধিগুণও আছে অনেক। আয়ুর্বেদি ও ইউনানী চিকিৎসায় আমকে বলা হয় টনিক, যা শরীরে শক্তি সৃষ্টি করে। আমে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা স্তন, কোলন ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। লিভার ও কিডনির জন্য হিতকর। অ্যাজমা, হিটস্ট্রোক ও স্কার্ভি রোগের জন্য বেশ উপকারি। পাকা আম ফোড়া প্রতিরোধক, রক্ত পরিষ্কারক; সে সাথে স্মৃতিশক্তিও বৃদ্ধি করে। প্রজননতন্ত্রকে করে শক্তিশালী। আমের সাথে দুধ মিশিয়ে খেলে বল এবং তেজ দু’টোই বাড়ে। আম রাতকানা প্রতিরোধি ফল। নিয়মিত খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। শরীরের ওজন কমায়। কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকায় অ্যানিমিয়া হতে বাঁধা দেয়। গর্ভবতী মহিলাদের ক্যালসিয়াম এবং লৌহের ঘাটতি পূরণে আম অনন্য। আম রক্তের কোলেস্টেরল কমায়। পরিপাকক্রিয়া সচল রাখে। শুষ্কতা দূর করে ত্বক রাখে মসৃণ-মোলায়েম। দাঁত ও নখকে করে মজবুত। চুল পড়া আর খুশকি রোধেও কাজ করে বেশ। পেট ভরে আম খেলে ঘুমজনিত সমস্যা দুর হয়। একটি কথা না বললেই নয়। যারা ডায়াবেটিস রোগি তাদের পাকা আম না খাওয়াই ভালো। তবে টক জাতীয় আম খাওয়া যাবে ইচ্ছে মতো।
আমের বিচিরও উপকারিতা আছে। রমণীদের চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে এর জুড়ি নেই। এজন্য আমের বিচির শাঁস শিলপাটায় বেটে নিতে হয়। এরপর কাচের বোতল ঢুকিয়ে পরিমাণমতো নারকেল তেল দিয়ে ভালোভাবে মেশাতে হবে। তিল, সরিষা কিংবা জলপাই তেলও দেয়া যাবে। এবার সপ্তাহখানিক রোদে রেখে নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে। তাহলে চুল হবে কালো, লম্বা ও পুরু। সবার দৃষ্টিনন্দন।
টেকনিক্যাল পার্টিসিপেন্ট, কৃষি তথ্য সার্ভিস ও পরিচালক,
কৃষি বিষয়ক আঞ্চলিক অনুষ্ঠান,
বাংলাদেশ বেতার, বরিশাল;
মোবাইল নম্বর: ০১৭১৫৪৫২০২৬
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।