নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শেষবার ইংল্যান্ড যখন বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অংশ নেয় ক্রোয়েশিয়ার তখন জন্মই হয়নি। পরের বছরই যুগোস্লোভিয়া থেকে স্বাধীন স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেয় ক্রোয়েশিয়া। এরপর নবীন দলটি বিশ্বকাপের শেষ চারে খেললেও সুযোগ হয়নি ইংল্যান্ডের। রাশিয়া বিশ্বকাপ এই দুই দলকে মিলিয়েছে সেমির সেই বিন্দুতে।
মস্কোর সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়া। ২০ বছর পর এই পর্বে খেলছে ক্রোয়েশিয়া, ২৮ বছর পর ইংল্যান্ড। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে হেরে স্বপ্নযাত্রা শেষ হয়েছিল ক্রোয়েটদের। ওটাই এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে ক্রোয়েটদের সবচেয়ে মধুর স্মৃতি। আজকের ম্যাচটা তাই দুই দলের ঐতিহাসিক বললেও অত্তুক্তি হবে না। বিশেষ করে ক্রোয়েশিয়ার জন্য। জিতলেই তাদের সামনে সুযোগ প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের ফাইনালে নাম লেখানোর। এর বত্যয় ঘটলে ৫২ বছরের অপেক্ষার অবসান হবে ইংলিশদের। এ পর্যন্ত একবারই ফাইনালে খেলেছে তারা। ঘরের মাঠে ১৯৬৬ সালে বিশ্বজয়ী হওয়ার সেই স্মৃতিই এখন পর্যন্ত তাদের কাছে সবচেয়ে মধুর হয়ে জমা আছে।
বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে দলকে গুছিয়ে নিতে অল্প সময় পেয়েছেন দুই দলের কোচই। তাছাড়া দল হিসেবেও এই পর্বে আসাটা ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের জন্যে যেমন বিষ্ময়ের তেমনি ক্রোয়েট কোচ জ্লাতকো দালিচ জন্যেও। দুই দলই অবশ্য ভালো ফুটবল উপহার দিয়েই এ পর্যন্ত এসেছে। বিশেষ করে ক্রোয়েশিয়ার এই সোনালী প্রজন্মকে নিয়ে দেশটির আশা অনেক। যদিও এই পর্যন্ত পৌঁছাতে ভাগ্যকেও পাশে পেয়েছে তারা। ডেনমার্ক ও স্বাগতিক রাশিয়ার বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই তারা জিতেছে পেনাল্টি শুট আউট ভাগ্যে। অন্যদিকে ইংল্যান্ড শেষ ষোলয় কলম্বিয়ার বিপক্ষে একই ভাগ্যে জয়লাভ করে। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে সুইডেনকে হারিয়ে তারা এই বার্তা দিয়ে রেখেছে- সাউথগেটের এই দল ছেষট্টিকে ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত।
স্বপ্ন যাত্রায় আজ ক্রোয়েশিয়ার বড় বাধা হতে পারেন হ্যারি কেইন। ছয় গোল করে ইংলিশ দলপতি গোল্ডেন বুট জয়ের দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে। তাকে আটকানোর ব্যাপারে অবশ্য আত্মবিশ্বাসী ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্স। তাদের যুক্তি ‘মেসিকে আটকে দিতে পারলে কেইনকে কেন নয়’। উল্লেখ্য, গ্রুপ পর্বের ম্যাচে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে হারায় ক্রোয়েশিয়া। এছাড়া শারিরীক অবসাদ দলটির ভাবনার কারণ হতে পারে। ছয় দিনের মধ্যে ২৪০ মিনিট মাঠ দাপিয়েছে তারা। তবে দালিচের প্রধান ভাবনা রক্ষণ নিয়ে। কনুইয়ের ইনজুরিতে দল থেকে ছিটকে গেছেন রাইট ব্যাক সিমে ভ্রাসেলকো। রাশিয়া ম্যাচে হ্যামস্ট্রিং চোটে পড়া গোলরক্ষক দানিয়েল সুবাসিচ আছেন পর্যবেক্ষণে। তাছাড়া দলে আটজন ভিন্ন গোল স্কোরার থাকলেও স্ট্রাইকারদের গোল না পাওয়াটা ভাবাতে পারে দালিচকে। ইংলিশ দলে এই চিন্তা নেই। পুরো ২৩ সদস্যকে নিয়েই গতকাল অনুশীলন করেছেন সাউথগেট। আগের ম্যাচে অনুপস্থিত জেমি ভার্ডি ছিলেন অনুশীলনে। হ্যামিস্ট্রিং চোট কাটিয়ে ফিরেছেন মিডফিল্ডার জর্ডান হেন্ডারসন।
১৯৯৮ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন দলটির বর্তমান ম্যানেজার স্ভেন বিলিচ। ২০০৬ থেকে ২০১২ পর্যন্ত দলের কোচও ছিলেন তিনি। নতুন ভূমিকায় ফিরে দলকে বেশ আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলেছেন তিনি। লুঝনিকির ফাইনাল মঞ্চে নাম লেখানোর ব্যাপারে দৃপ্রতিজ্ঞ তিনি, ‘গত চার-পাঁচ টুর্নামেন্ট ধরে ক্রোয়েশিয়া শুধু কেঁদেই যাচ্ছে, তারা অনেক ভুগেছে। এখন তারা পরিণত। সব ধরণের আবেগ সামলে সাহসের সঙ্গে তারা সবকিছু করতে প্রস্তুত।’ ৪৯ বছর বয়সী বলেন, ‘২০ বছর ধরে আমরা অপেক্ষা করছি। সত্যি বলতে, এটা অপনাকে বলতেই হবে দুই দলই আজ নিজেদের উজাড় করে দিতে প্রস্তুত। অবশ্যই পুরোটাই। এটা কঠিন একটা ম্যাচ হতে যাচ্ছে।’
অপরদিকে ধুলিমাখা স্মৃতিটা নবায়ন করতে চায় ইংল্যান্ড। দলের ম্যানচেস্টার সিটি ডিফেন্ডার কাইল ওয়ালকারের ভাষ্য তেমনি, ‘এটা এমন একটা সুযোগ যা ইংল্যান্ড আগে কখনো পায়নি, মনে হয় না ভবিষ্যতে আর এমন সুযোগ আসবে। ইতোমধ্যে আমরা নিজেদের চিনিয়েছি, বিশ্বাস করতে শিখিয়েছি এবং আমি মনে করি আজকের ম্যাচে এটাই ঘটতে যাচ্ছে। আমাকে স্বপ্ন দেখতেই হবে। বড় কোন স্বপ্ন।’
দু’দলের লড়াইটা হবে মূলত মাঝমাঠে। ক্রোয়েশিয়া দলে রয়েছেন বর্তমান বিশ্বের ভয়ঙ্কর দুই মিডফিল্ডার- রিয়াল মাদ্রিদে খেলা লুকা মড্রিচ এবং বার্সেলোনার ইভান রাকিটিচ। থ্রি লায়ন্সদের মাঝমাঠের কারিগর হেন্ডারসন। দেড় মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন মড্রিচ ও হেন্ডারসন। গত ২৬ মে কিয়েভে অনুষ্ঠিত উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের সেই ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছিলেন মড্রিচ। এবার হাসবেন কে? এর উত্তর পেতে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।