মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের সাবেক সেনা কর্মকর্তা এবং বিখ্যাত নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্নেল (অব.) গুরনাম সিং বলেছেন, হিন্দুত্ববাদ নিয়ে এই ভুল ধারণা রয়েছে যে এটা বহুবাদী এবং সহিষ্ণু একটি ধারণা। বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যেটা খুবই উদ্বেগের বিষয়, সেটা হলো বিগত বছরগুলোতে হিন্দু অসহিষ্ণুতা চরম আকার ধারণ করেছে। এটা শুরু কট্টরই হয়নি, সমাজের মধ্যে এটা স্বাভাবিক হিসাবে গ্রহণযোগ্যতাও পেতে শুরু করেছে।
ভারতীয় সমাজে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে কুসংস্কারের কথা সবাই জানেন। কিন্তু হিন্দু চরমপন্থীদের মানসিকতার বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খুব সামান্যই আলোচিত হয়। এই হিন্দুবাদীরা তাদের চিন্তাচেতনার বিপরীত যে কোন কিছু গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। এই চরমপন্থি মানসিকতার কারণে তারা এমনকি অন্যান্য হিন্দুদের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেছে, যারা তাদের মানসিকতার সাথে একমত নয়।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রতি অসহিষ্ণুতা
সা¤প্রতিক উদাহরণ হলো মিস প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। সাবেক মিস ইন্ডিয়া আমেরিকান টেলিভিশনে কর্মরত সর্বাধিক সম্মানিপ্রাপ্ত ভারতীয় অভিনেত্রী। ১ জুন কোয়ান্টিকো ধারাবাহিক সিরিয়ালের ‘ব্লাড অব রোমিও’ শিরোনামের একটি পর্ব প্রচারিত হয়। এতে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া নিউ ইয়র্কে কাশ্মীর সম্মেলনে একটা স্যাবোটাজ পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেন। এতে সন্ত্রাসীরা ছিল হিন্দু এবং তাদের গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিল। এর কারণেই তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।
চরমপন্থী হিন্দুরা তাকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। এমনকি ইউনিসেফের দূত হিসেবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখতে যাওয়ার কারণেও তার সমালোচনা হয়েছে। পরিস্থিতির এতটা অবনতি হয়েছিল যে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এবং এবিসি (অ্যামেরিকান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশান) উভয়কেই ‘ব্লাড অব রোমিও’র জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে হয়েছে।
বিজেপিও কি এতে জড়িত?
যেটা আরও উদ্বেগের, সেটা হলো বর্তমান ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সরকার এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। উল্টা আমরা দেখতে পাচ্ছি যে এই অসহিষ্ণুতাটাই রীতি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপির সদস্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংস্থারও (আরএসএস) একজন। বিজেপির প্যারেন্ট সংগঠন হিসেবে খ্যাত এই চরমপন্থী হিন্দু সংগঠনটি।
২০১৭ সালের আগস্টে ভারতের ৭০তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি গর্বিতভাবে দেশের অর্জনগুলো তুলে ধরেছিলেন এবং বলেছিলেন, “ধর্মের নামে সহিংসতা বরদাশত করা হবে না”। তবে মোদির দাবির সাথে বাস্তবতার পার্থক্য অনেক। বাস্তবে, মোদির ক্ষমতায় উত্থানের সাথে সাথে হিন্দু সহিংসতা সমান তালে বেড়েছে। সহিংসতা শুধু মুসলিম ও খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের সাথেই হয়নি। বরং যারাই হিন্দু চরমপন্থী ধারণার সাথে একমত হয়নি, তাদের বিরুদ্ধে এই সহিংসতা চলেছে। আরএসএস এবং হিন্দু বিশ্ব পরিষদের সমস্ত প্রচারণার মূলে রয়েছে হিন্দুবাদী ধারণা। ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আদর্শের মূলেই রয়েছে ভারতকে একটা হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার আকাক্সক্ষা।
হিন্দু চরমপন্থা এবং এর আঞ্চলিক প্রভাব
ভারত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এই দীর্ঘ সময়ে একবারও ভারতের হিন্দু চরমপন্থাকে দমনের জন্য একটি কথাও বলেনি যুক্তরাষ্ট্র। সন্দেহাতীতভাবে, এ ধরনের সন্ত্রাসবাদকে পৃথিবীর অন্য সব সন্ত্রাসবাদের মতো একইভাবে নিন্দা জানানো উচিত।
বর্তমান বিশ্বে আমরা প্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে সন্ত্রাসবাদের সাথে ইসলামকে যুক্ত করে দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে কোন যাচাই বাছাই না করে যারাই নিজেদের মুসলিম দাবি করে এসব কাজ করছে, তাদের সাথে আমরা মুসলিমদের মিশিয়ে ফেলছি। হিন্দু চরমপন্থীদের ভূমিকা আইসিসের মতোই সন্ত্রাসী সংগঠনের মতোই খারাপ ও নিন্দনীয়। যদি আপনি আঞ্চলিকতা ও বিভিন্ন পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেন, তাহলে হিন্দু চরমপন্থীদের অবস্থা আরও গুরুতর বলতে হবে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।