ভারতের প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোভিন্দ ও তার স্ত্রী সভিতা কোভিন্দ মূলত দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। ভারতে দলিত সম্প্রদায় সামাজিক ও ধর্মীয় অনেক ক্ষেত্রেই বৈষম্যের শিকার হয়। কিন্তু খোদ দেশের প্রেসিডেন্টকেও এই ধরণের বৈষম্যের শিকার হতে হবে, তা বোধ হয় কেউ ভাবেনি। কিন্তু সম্প্রতি এমন আশ্চর্য্যজনক ঘটনাই ঘটেছে। এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। খবরে বলা হয়েছে, উড়িষ্যার একটি মন্দিরে প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রীকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, কারণ তারা দলিত।
অবশ্য ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম এই খবরকে বানোয়াট বলেছে। তবে টাইমস অব ইন্ডিয়া ও নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এই সংবাদ প্রত্যাহার করেনি।
খবরে বলা হয়, ১৮ই মার্চ উড়িষ্যার জগন্নাথ মন্দিরে প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। এই ঘটনার তিন মাস পর পুরি জেলা প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, মন্দিরের পুজা মন্ডবে যাওয়ার পথে প্রেসিডেন্ট ও তার পতিœর প্রবেশপথ রোধ করেন কিছু পুরোহিত। ওই পুরোহিতের দল এমনকি ফার্স্টলেডিকে ধাক্কাও মারে।
এই পুরোহিতদের আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় জেলা কালেক্টর অরভিন্দ আগরওয়ালের কাছে কড়া চিঠি পাঠিয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবন। এরপর এ নিয়ে বৈঠকে বসেছে মন্দির কমিটি। এই ঘটনা কমিটির প্রধান প্রশাসক ও সরকারী কর্মকর্তা প্রদিপ্ত কুমার মহাপাত্র নিশ্চিত করেছেন।
খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রি যাতে নির্বিঘে পুজা সারতে পারেন সেজন্য ভোর ৬.৩৫ থেকে ৮.৪০ পর্যন্ত জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়। প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্টলেডির সঙ্গে মন্দিরের ভেতর তখন কয়েকজন সরকারী কর্মকর্তা ও পুরোহিত ছিলেন কেবল। তারপরও ওই ঘটনা ঘটে।
তবে এর আগে এই ঘটনা ভারতের সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। আর দলিত প্রেসিডেন্টকে মন্দিরে ঢুকতে না দেওয়ার খবরে ক্ষুদ্ধ হয়ে এক ব্যক্তি ওই মন্দিরের এক পুরোহিতকে আক্রমনও করে বসে।
নিউজ১৮ চ্যানেলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, শুধু কোভিন্দ নন, এর আগেও ভারতের বেশ কিছু মন্দিরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ইন্দিরা গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী এমনকি মহাত্মা গান্ধীকেও অনেক মন্দিরে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে ওই নিবন্ধে।
প্রসঙ্গত, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের চারটি বর্ণের বাইরের মানুষদেরকে দলিত বলা হয়ে থাকে। এই দলিতরা দীর্ঘদিন ধরে সামাজিকভাবে নিগৃহীত। অনেক উচ্চ বর্ণের হিন্দু এমনকি তাদেরকে ‘অস্পৃষ্য’ বিবেচনা করেন।