Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়া চ্যাম্পিয়নরা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে টানা বিশ্বকাপ জয়ের দৃড় প্রত্যয় নিয়ে রাশিয়ার পা রেখেছিল জার্মানি। কিন্তু লড়াই শুরু না হতেই দেশের বিমান ধরতে হয়েছে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। মেক্সিকো ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের গ্রæপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়েছে জার্মানিকে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলতে এসে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়ার ঘটনা অবশ্য এবারই প্রথম নয়। গত দুই আসরেও একইরকম তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল ইতালি ও স্পেনকে। গত পাঁচ আসরেই এরকম ঘটনা ঘটেছে চারবার। সব মিলে ছয়বার চ্যাম্পিয়ন দলের প্রথম পর্ব থেকেই বিদায় নেয়ার রেকর্ড আছে। চলুন জানা যাক সেই ছয়টি দলের বাদ পড়ার গল্প-

ইতালি : ১৯৫০
প্রথম রাউন্ড থেকেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিদায়ের প্রথম ঘটনার সাক্ষী হয় ১৯৫০ বিশ্বকাপের আসর। ব্রাজিলের মাটিতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলতে এসেছিল আগের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালি। আগের দুই আসরে সরাসরি নক আউট ফরম্যাটে খেলা হলেও বাণিজ্যিক স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফরম্যাটে বদল আনে আয়োজকেরা। ১৬ টি দলকে শুরুতে চারটি গ্রæপে ভাগ করা হয়। চার গ্রæপ থেকে একটি করে দল উঠবে পরের রাউন্ডে। তারপর চার গ্রæপের সেই চার দল নিজেদের মধ্যে রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে খেলে যে দল সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পাবে, তারাই হবে চ্যাম্পিয়ন। এটাই ছিল এই বিশ্বকাপের ফরম্যাট।
চার গ্রæপের মধ্যে গ্রæপ ‘সি’ তে সুইডেন, প্যারাগুয়ে ও ভারতের সাথে পড়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইতালি। ভারত অংশ না নেয়ায় তিন দল নিজেদের মধ্যে ম্যাচ খেলে। গ্রæপের সব ম্যাচ শেষে সুইডেনের পয়েন্ট দাঁড়ায় ৩, ইতালির ২ ও প্যারাগুয়ের ১। অর্থাৎ ফরম্যাট অনুযায়ী এই গ্রæপ থেকে পরের পর্বে উঠে যায় সুইডেন। আর প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে।

ব্রাজিল : ১৯৬৬
ইতালির মতো একই ভাগ্য বরণ করতে হয়েছিল ব্রাজিলকেও। ১৯৫৮ ও ১৯৬২, টানা দুটি বিশ্বকাপ জিতে ইংল্যান্ডের মাটিতে পা রেখেছিল ব্রাজিলিয়ানরা। চারটি গ্রæপের মধ্যে গ্রæপ ৩ এ পর্তুগাল, হাঙ্গেরি ও বুলগেরিয়ার গ্রæপ সঙ্গী হয় ব্রাজিল। নিজেদের প্রথম ম্যাচে পেলে ও গারিঞ্চার গোলে বুলগেরিয়াকে ২-০ গোলে হারালেও পরের দুই ম্যাচে হাঙ্গেরি ও পর্তুগালের কাছে ৩-১ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। ফলে তিন ম্যাচ শেষে মাত্র দুই পয়েন্ট নিয়েই সেবার বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। এই গ্রæপ থেকে পরের পর্বে উঠেছিল পর্তুগাল ও হাঙ্গেরি।

ফ্রান্স : ২০০২
মাঝে বেশ কয়েক আসর বিরতির পর আবার এমন ঘটনা ঘটে ২০০২ কোরিয়া/জাপান বিশ্বকাপে। ১৯৯৮ আসরের ফাইনালে ফেভারিট ব্রাজিলকে হারিয়ে ঘরের দর্শকদের সামনে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ যেতে ফ্রান্স। ২০০২ আসরের জন্যেও তারা ছিল অন্যতম ফেভারিট। মাঝে ২০০০ ইউরো ও ২০০১ কনফেডারেশন্স কাপও জিতেছে ফরাসিরা। কিন্তু এশিয়ার মাটিতে প্রথম বিশ্বকাপ যেন দুঃস্বপ্নই উপহার দিলো ফরাসিদের। ডেনমার্ক, সেনেগাল ও উরুগুয়ের সাথে গ্রæপ ‘এ’ তে পড়েছিল ফ্রান্স। সবাইকে অবাক করে দিয়ে গ্রæপ পর্বের তিন ম্যাচের একটিতেও জিততে পারেনি তারা। আরও আশ্চর্যের বিষয়, তিন ম্যাচে খেলেও তারা একটি গোলও করতে পারেনি! ফলাফল, গ্রæপে চার দলের মধ্যে সবার তলানিতে থেকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল ফ্রান্সকে।

ইতালি : ২০১০
আগের আসরে ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারানো ইতালি এই বিশ্বকাপে ছিল ‘এফ’ গ্রæপে। ¯েøাভাকিয়া, নিউজিল্যান্ড ও প্যারাগুয়ের সাথে এক গ্রæপে পড়ায় বেশ সহজেই গ্রæপ পার হয়ে যাবে ইতালি এমনটাই ভেবেছিলেন সবাই। কিন্তু গ্রæপে তিন ম্যাচ খেলে ইতালি জিততে পারেনি একটিতেও, দুই ড্রয়ের পাশাপাশি হেরেছিল এক ম্যাচে। ফলে ফ্রান্সের মতই গ্রæপে সবার তলানিতে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করতে হয়েছিল আজ্জুরিদের। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দু’বার গ্রæপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়ার রেকর্ডও কেবল ইতালির।

স্পেন : ২০১৪
বিশ্ব ফুটবলে তখন স্প্যানিশদের জয়জয়কার। চার বছর আগে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছে, ইউরো-বিশ্বকাপ-ইউরো জেতা একমাত্র দল হওয়ার গৌরবও অর্জন করেছে তারা। কিন্তু ব্রাজিল বিশ্বকাপ যেন প্রস্তুত ছিল স্পেনকে চরম বাস্তবতার মুখোমুখি করতে। ইকার ক্যাসিয়াসের দল প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের কাছে ৫-১ গোলে বিদ্ধন্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে চিলির কাছেও ২-০ গোলে হেরে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয়। শেষ ম্যাচে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের সান্ত¦নার জয় পায় তারা।

জার্মানি : ২০১৮
এমন দুর্ভাগা দলের তালিকায় সর্বশেষ ও সদ্য সংযোজিত নাম জার্মানি। টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের জন্য ফেভারিট হিসেবেই রাশিয়ায় এসেছিল জার্মানরা। কিন্তু আগের দুই আসরের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মেক্সিকো ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হারের ফলে গ্রæপ পর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয় জোয়াকিম লোয়ের দলের। ১৯৩৮ সালের পর এবারই প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়ল তারা। গ্রæপ পর্যায়ে দুই ম্যাচ হারার বিব্রতকর রেকর্ডও এবার সঙ্গী হয়েছে জার্মানির।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বকাপ

২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ