নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : ১৯৭৪ সালে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ভারতের বিপক্ষে। বেঙ্গালুরুতে প্রথম ইনিংসে ৯৩ রানে রান আউট হওয়া গর্ডন গ্রিনিজ দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ১০৭ রান। ১৭ বছর পর ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টেও ৭ রানের আক্ষেপে পুড়েছিলেন! নিজের খেলা শেষ টেস্টের শেষ ইনিংসে ৪৩ রান করে হয়েছিলেন রান আউট। খেলোয়াড়ি জীবনে ক্যারিবীয় এই ওপেনার খেলেছেন ১০৮ টি টেস্ট ও ১২৮ টি ওয়ানডে। দুই ফরম্যাট মিলে ৩০ সেঞ্চুরির মালিক গর্ডন গ্রিনিজের আন্তর্জাতিক রান ১২৬৯২।
ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের খেলোয়াড়ি স্বত্বার জন্য নয়, বরং কোচ হিসেবেই বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ আজীবন মনে রাখবে এই ক্যারিবিয়ানকে। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশকে কোচিং করানোর মধ্য দিয়েই গ্রিনিজের কোচিং ক্যারিয়ারের শুরু। তার তত্ত¡াবধানেই ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ জিতেছিল আইসিসি ট্রফি। যেই সাফল্যকে পুঁজি করে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে অংশ নেবার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। সুযোগ পেয়েই থেমে থাকেনি গর্ডনের তত্ত¡াবধানে থাকা বাংলাদেশ দল, পাকিস্তানকে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বে।
১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের কয়েকঘণ্টা আগেই তাকে কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি জিতলে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিল গর্ডন গ্রিনিজকে। ২০০০ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে বিসিবির আমন্ত্রণে বাংলাদেশে আসা গর্ডন গ্রিনিজ এর আগে শেষ বাংলাদেশে এসেছিলেন ২০০৪ সালে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নবায়নের জন্য। সেই গ্রিনিজ আবারও বাংলাদেশে। তবে এবার শুধু ক্রিকেট নয় গলফ সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলপরশু রাতে ঢাকায় পা রেখেছেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি। পাঁচদিনের সফরে ঢাকা এসে ক্রিকেট নিয়ে কথা বলবেন না তা কি করে হয়! তাও আবার এমন সময় এলেন যখন কোচ সঙ্কটে ভুগছে তারই হাত ধরে হাঁটতে শেখা বাংলাদেশ। আসার কারণ নিয়ে ধোয়াশায় থাকা সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরুর আগেই জানিয়ে দিলেন, ব্যক্তিগত কাজে এসেছেন। এরপর প্রথম প্রশ্নটিই ছোড়া হল আবারও বাংলাদেশের কোচ হতে আগ্রহী কি-না?
তাদের সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য হলেও একজন অভিজ্ঞ কোচ নিয়োগ দেয়া অতীব জরুরী। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দ্রæতই ব্যবস্থা নিবে বলে প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশের সাবেক এই কিংবদন্তী কোচ। গ্রিনিজ বলেছেন, ‘অবশ্যই তাদের নির্দেশনা দেয়ার মতো কাউকে প্রয়োজন। আশা করি তারা দ্রæতই একজন কোচ পাবে। কারণ এটি অনেক দরকার।’ অবশ্য বিসিবি চাইলে আবারো টাইগারদের কোচ হতে রাজি গ্রিনিজ এই কথাটি বলতে ভুল করেননি। যদিও সেই সম্ভাবনা নেই বললেই চলে বলেও মনে করেন তিনি, ‘আমি এটা (বিসিবির প্রস্তাব) নিয়ে ভাববো অবশ্যই। তবে আমার মনে হয় এমনটা হবে না।’
এর আগে গর্ডন গ্রিনিজের বাংলাদেশে আসা প্রসঙ্গে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান জানিয়েছিলেন মূলত ব্যক্তিগত কারণেই এসেছেন গ্রিনিজ, ‘তিনি ব্যক্তিগত কারণে এসেছেন। আমাদের সাথে অনেকদিন পর দেখা হবে। বাংলাদেশ দল আজকে যে পর্যায়ে আছে এখানে তার অবদান অনেক। শুধু একজন কোচ নয়, একজন অভিভাবক হিসেবে তিনি আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছেন। তাকে আমরা অন্য চোখে দেখি।’
কোচ হোক আর নাই হোক, বাংলাদেশ ক্রিকেট যার হাত ধরে হাঁটতে শিখেছে সেই কারিগরকে সংবর্ধনা দেবার সুযোগটি হারাতে চায়নি বিসিবিও। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বেশ ঘটা করেই গ্রিনিজের এবারের সফরটি স্মরণীয় করে রাখার ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থাটি। সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটার, বিসিবির কর্তাব্যক্তি এবং দেশের ক্রীড়া সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সাবেক এই কোচকে সংবর্ধনা দেয় বিসিবি। এসময় নিজের অনুভুতি জানাতে গিয়ে গ্রিনিজ বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট আমার হৃদয়ে ধারণ করি। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক উন্নতি করেছে। যেখানেই থাকি বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা দেখি। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভালো অবস্থানে পৌঁছেছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের ক্রিকেট ভবিষ্যতে শীর্ষে অবস্থান করবে। এই সংবর্ধনা দেয়ার জন্য বিসিবিকে ধন্যবাদ। বাংলাদেশে আসতে পেরে আমার ভালো লাগছে। এখানে আমি বারবার আসতে চাই।’ এসময় তার অবদান স্বীকার করে ধন্যবাদ জানান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট উত্থানের জন্য গ্রিনিজকে ধন্যবাদ। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার অবদান কখনোই ভোলার মত নয়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।