Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসরাইলি সমরাস্ত্রকে ভয় পাচ্ছে না গাজার বিপন্ন তরুণরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

একমাত্র জীবনের দাবিই পারে মৃত্যুকে উপেক্ষা করতে। কেবল তখনই মানুষ মৃত্যুভয়কে তুচ্ছজ্ঞান করতে পারে, যখন অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন সামনে আসে। গাজা উপত্যকার তরুণরাও লড়ছেন অস্তিত্বের প্রশ্নে। সেখানকার বিপন্ন তারণ্য এবার একেবারেই ইসরাইলি সমরাস্ত্রের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছে। ভূমি দিবসের কর্মসূচি ‘মার্চ ফর গ্রেট রিটার্ন’ সফল করতে প্রায় একমাস ধরে গাজার ইসরাইল সীমান্তে প্রতিদিন জড়ো হয়েছেন কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী । ক্ষুদ্র আয়তনের গাজার প্রায় ২ লাখ শরণার্থী নিজেদের ভূমিতে ফেরার দাবি জানাচ্ছেন। ১৯৪৮ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে উচ্ছেদ হওয়া ৭ লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনির মধ্যে ছিলেন তারাও। ভূমি দিবসের বিক্ষোভ ১৫ মে পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার কথা। তবে অনেক আন্দোলনকারীই বলছেন, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আন্দোলন ছাড়া কোনও বিকল্প তাদের সামনে নেই। ফলে ১৫ মে’র পরেও এই বিক্ষোভ অব্যাহত থাকতে পারে। ২০ এপ্রিল নারীদের নেতৃত্বে উত্তাল বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় ২৭ তারিখের ভূমি দিবসের কর্মসূচিতে ছিল তরুণদের প্রাধান্য। শিক্ষা ও চিকিৎসা বঞ্চিত ‘বিপ্লবী তরুণদের’ ওই শুক্রবারে ইসরাইলি গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ ফিলিস্তিনি। এদিনের কর্মসূচি সফল করতে গিয়ে আগত হয়েছেন সহস্রাধিক। সরেজমিন উপত্যকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আল-জাজিরার প্রতিবেদক জানিয়েছেন, তরুণরা আর ইসরাইলি সমরাস্ত্রকে ভয় পাচ্ছে না। কর্মসূচি সফল করতে তাজা গুলি উপেক্ষা করে তারা এগিয়ে যাচ্ছে সীমান্ত বেষ্টনীর দিকে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছে। হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। তবুও থামছে না ইসরাইলি মারণাস্ত্রের আঘাত। ভূমি দিবসের কর্মসূচি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ জনে। গাজা উপত্যকাকে বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর বৃহত্তম উন্মুক্ত কারাগার। সুদীর্ঘ ইসরাইলি অবরোধে ভেঙে পড়েছে সেখানকার অবকাঠামো। সেখানকার মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষা চিকিৎসাসহ যাবতীয় মৌলিক অধিকার থেকে। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের শিশুবিয়ষক সংস্থা ইউনিসেফ-এর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী সেখানে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি পরিবারের সংখ্যা ৪০ শতাংশ। আর ৭০ ভাগ মানুষ টিকে আছে মানবিক সহায়তার ওপর ভর করে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, গাজার মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের বয়স ২৪ বছরের কম। আর ১৫-২৯ বছর বয়সী গাজার জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশই বেকার। তরুণদের বেকারত্বের হারের বিবেচনায় এটিই বিশ্বে সর্বোচ্চ। এবারের বিক্ষোভের ৫ম শুক্রবারটি ছিল তরুণদের। এই বিক্ষোভের নাম দেওয়া বিপ্লবী তরুণদের শুক্রবার। বিক্ষোভের আগেই ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচায় আদ্রায়ি ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে ফিলিস্তিনি তরুণদের ঘরে থাকার হুমকি দিয়েছিলেন। তবে তার এই আহŸান প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ কর্মসূচি সফল করতে দলে দলে যোগ দেয় গাজা উপত্যকার তরুণরা। এদেরই একজন ২৫ বছরের বাশার আবু রাস। মিডল ইস্ট আইয়ের কাছে তিনি রেখেছেন, ‘কিসের ভবিষ্যতের কথা বলছেন আদ্রায়ি? ২০১৪ সালে তারা গাজা ধ্বংস করেছে, তারা কয়েক হাজার তরুণের শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য কোথাও যেতে দিচ্ছে না।’ আল-জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসরাইলি


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ