পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
মশার আক্রমণে বিপর্যস্ত জনজীবন
মশার অত্যাচার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কোনো হস্তক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। জনজীবনে যাবতীয় সমস্যাগুলোর মধ্যে এটিও একটি মারাত্বক সমস্যা। বর্তমানে যেভাবে মশার উপদ্রব দেখা যাচ্ছে, তা বিগত কয়েক বছরেও দেখা যায়নি। শার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। প্রতিটি কাজেই মশা এখন বাধা হয়ে দাড়ায়। মশার জন্য বিমান উড্ডয়নে পর্যন্ত ব্যঘ্যাত ঘটেছে। মশার এমন আক্রমনাত্বক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য দায়ী আমরা সকলেই। প্রতি বছর সিটিকর্পোরেশনকে মশা নিধনের জন্য বিরাট অংকের টাকা দেওয়া হয়। সিটিকর্পোরেশনের অধীনে মশা নিধনের জন্য বেতনভুক্ত কর্মচারীও রয়েছে অনেক। এরপরেও যদি নাগরীকগন মশার অত্যাচার থেকে রক্ষা না পায়, তবে এটা দুঃখজনক তো বটেই সাথে লজ্জারও বিষয়। উন্নত বিশ্বে এমনটা ভাবাই যায়না। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে মশা বাহিত রোগ চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষ দীর্ঘদিন রোগে ভূগেছে। নতুন করে আবার মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরবাসীর মনে সেই চিকুনগুনিয়ার আতংক দেখা দিয়েছে। এছাড়াও এই মশার মাধ্যমে মানুষ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং জিকা ভাইরাসের মতো মারাত্বক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। কচুরিপনা, ডোবা, নালা এবং অপরিষ্কার ড্রেন মশার জন্মস্থল। এগুলো পরিষ্কার রাখা অতীব জরুরী। এছাড়াও রাস্তার পাশে ময়লা আবর্জনা থেকেও মশার সৃষ্টি হয়। সকাল বিকেল মশার ওষুধ ছিটানোর কথা হলেও তা হয়না। এগুলো যথাযথ ভাবে হওয়া দরকার। সিটিকর্পোরেশন মশার যে ওষুধ ছিটায় তা আদৌ কাজ করে কিনা দেখার কেউ নেই। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক মনিটরিং। কিন্তু মশার ওষুধ ছিটানোর মধ্যেও বড় অনিয়ম ঘটছে। এই ওষুধ দিতে হয় বিশেষ করে প্রজনন স্থলে। বছরের উপযুক্ত সময়ে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে এ ওষুধ ছিটাতে হয়্ মশার ওষুধ একই দিনে দুবার প্রয়োগ করার নিয়ম। একবার ভোরে ও সকালে দিতে হয় মশার লার্ভা ধ্বংস করার জন্য। আবার বিকেল বা সন্ধ্যায় দিতে হবে প্রাপ্ত বয়স্ক মশা মারার জন্য। সর্বোপরি মশার ওষুধের গুনগত মান অবশ্যই হতে হবে যথাযথ। মশা নিধনে সিটিকর্পোরেশনের পাশাপাশি আমাদের নিজেদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। মনে রাখতে হবে জনসচেতনতাই সকল সমস্যার সমাধান। আমরা নিজেরা যদি সচেতন না হই তবে সিটিকর্পোরেশনের উপর হাজার দায় চাপালেও কোনো সমাধান হবে না। মশার প্রজননের ক্ষেত্রগুলো অনেকাংশই ঘরের মধ্যে থাকে। বাসা-বাড়ির আঙ্গিনা, ফুলের টব, ছাদের বাগান, ভবনের চৌবাচ্চা, এসি ফ্রিজের জমানো পানি থেকে মশার বংশ বিস্তার বেশী ঘটে। এগুলোতো আর সিটি কর্পোরেশনের লোক এসে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। তাই মাসে একবার হলেও নিজেদের বাসা-বাড়ি এবং ভবনের আশপাশ পরিষ্কার করা জরুরী। নিজেরা সচেতন না হলে শুধু সিটিকর্পোরেশনের কর্মসূচী দিয়ে মশার উৎপাত রোধ করা কখনোই সম্ভব হবে না। তাই আগে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমাদের সকলের মিলে মশা যেনো জন্মাতে না পারে সেই পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ মশা জন্মাতে না দিলে আমাদের আর মশা নিধন করার জন্য ওষুধ ছিটাতে হবেনা। সব ধরনের মশা নিধনের ওষুধ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক ব্যাক্তিদের জন্য। যাদের হাপানী ও শ্বাসকষ্ট রয়েছে তাদের জন্য বড় ধরনের অসুবিধা এসব ওষুধে। তাই মশার ক্ষেত্র যেমন ধ্বংস করতে হবে, তেমনি মশা যেনো আর না জন্মাতে পারে সেই ব্যপারে দায়িত্বশিল আচরণ সকলের কাম্য। তাই আসুন মশার হাত থেকে নিজে সুরক্ষা থাকি এবং অন্যদেরকেও সুরক্ষা রাখি।
আজহার মাহমুদ
শিক্ষার্থী, ওমরগনি এম.ই.এস কলেজ, চট্টগ্রাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।