Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবার মাশরাফির চারে চার

শান্ত, নাফিস, মেহরব জুনি. ও মার্শাল আইয়্যুবের শতক

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

শেষ ওভারে জয়ের জন্য অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। আবাহনী লিমিটেডের হয়ে এসময় বল হাতে আসেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রথম বলে আব্দুর রাজ্জাকের একটি সিঙ্গেল। এরপর টানা চার বলে চারজনকে আউট করে ইতিহাস গড়েন মাশরাফি। কোন বাংলাদেশী বোলারের যে কীর্তি এই প্রথম।
অগ্রণীর মূল ভরসা ধীমান ঘোষকে (২৭ বলে ৪৬) জয়রাজের কাছে ক্যাচ বানিয়ে শুরু করেন ম্যাশ। পরের বলে রাজ্জাক পরিনত হন নামজল হাসান শান্তর ক্যাচে। এরপর শফিউলকে সাইফ হাসানের ক্যাচে পরিণত করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন নড়াইল এক্সপ্রেস। তবে এখানেই থামেননি টাইগার দলপতি। পঞ্চম বলে ফজলে রাব্বিকে কট বিহাউন্ড করে ইতিহাসে নাম লেখান মাশরাফি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন ৫ বোলার। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে আছে আরো ৮টি। এর মধ্যে চলতি মৌসুমেই হয়েছে তিন হ্যাটট্রিক। মাশরাফির আগে এবারের মৌসুমে এই লিস্টে নাম লেখান আফিফ হোসেন ও মোহাম্মাদ শরীফ। হ্যাটট্রিকের ছড়াছড়ি থাকলেও বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ও লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে টানা চার বলে চার উইকেট এই প্রথম। সব মিলে ম্যাচে মাশরাফির শিকার ৪৪ রানে ৬ উইকেট। ম্যাচের আগেই চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন তিনি। এখন তার উইকেট বেড়ে হয়েছে ২৫টি। সেটাও মাত্র ৮ ম্যাচে।
তবে ফতুল্লায় শেষের নায়ক মাশরাফি হলেও আবাহনীর ১১ রানের জয়ের আসল নায়ক কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্ত। তার শতকের উপর দাঁড়িয়েই ২৯০ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে আবাহনী। ওয়ান ডাউনে নেমে ১২৩ বলে ১১চি চার ও ৩ ছক্কায় ১৩৩ রান করেন শান্ত। পঞ্চম উইকেটে মোহাম্মাদ মিথুনের সঙ্গে মাত্র ১৪ ওভারে গড়েন ১৪০ রানের জুটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮ বলে ৪৬ রান করেন মিথুন।
জবাবে আগের ম্যাচে ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা শাহরিয়ার নাফিসের শতকে জয়ের পথেই ছিল অগ্রণী। এক পর্যায়ে ২ উইকেটে তাদের রান ছিল ২০৯। এরপরই মাশরাফির নেতুত্বে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আবাহনীর বোলাররা। এক বল বাকি থাকতে অগ্রণী গুটিয়ে যায় ২৭৯ রানে। ১১৯ বলে ১৩টি চার ও ৩ ছক্কায় ১২১ রান করেন নাফিস।
নাফিসের মত বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে মেহরব হোসেন জুনিয়রের শতকে ¤øান হয়েছে মার্শাল আয়ুবের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। প্রাইম দোলেশ্বর স্পোটিং ক্লাবের ২৮৬ রানের জবাবে শেষ ওভারে ১ উইকেটের উত্তেজনাকর জয় পায় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। দোলেশ্বরের হয়ে ১২৮ বলে ১৪টি চার ও ২ ছক্কায় ১৩৫ রান করেন মার্শাল। প্রাইম ব্যাংকের উদ্বোধনী জুটির কাছেই হার মানে দোলেশ্বর। মেহরব ও মেহেদী মারুফের উদ্বোধনী জুটি যোগ করে ১৪৭ রান। ১২৫ বলে ১৩টি বাউন্ডারিতে ১০২ রান করেন মেহরব, ৯০ বলে ৮২ রান আসে মারুফের ব্যাট থেকে। হেরেও ম্যাচ সেরা হন মার্শাল।
তবে অষ্টম রাউন্ডে খেলায় বিষ্ময়কর ম্যাচ উপহার দিয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। মিরপুরে গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্সকে ১৩৭ রানে বেধে ফেলেও ম্যাচ জিততে পারেনি মোহামেডান। গাজীর বোলিং তোপে মাত্র ১০৮ রানে গুটিয়ে ২৯ রানে ম্যাচ হারে শামছুর রহমানের দল।
আট ম্যাচে আবাহনীর এটি সপ্তম জয়। পয়েন্ট তালিকাতেও শীর্ষে নাসির হোসেনের দল। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে মাত্র দুই জয়ে পয়েন্ট তালিকার তলানীতে অগ্রণী ব্যাংক। চারটি করে জয় ও পরাজয়ে ছয়ে উঠে এসেছে প্রাইম ব্যাংক। সমান জয় ও এক ড্রয়ে আবাহনীর পরেই রয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। তিন জয়ে ১২ দলের মধ্যে দশম অবস্থানে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রæপ। সমান জয় ও এক ড্রয়ে আটে মোহামেডান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী-অগ্রণী ব্যাংক, ফতুল্লা
আবাহনী : ৫০ ওভারে ২৯০/৬ (শান্ত ১৩৩*, নাসির ২৫, মিঠুন ৪৬; আল-আমিন ২/৫৫, শফিউল ১/৪২, সালমান ২/৪০)।
অগ্রণী ব্যাংক : ৪৯.৫ ওভারে ২৭৯ (শাহরিয়ার ১২১, রাজা ৬২, ধীমান ৪৬; মাশরাফি ৬/৪৪, মনন ১/৪২, আরিফুল ২/৫৭, সানজামুল ১/৪১)।
ফল : আবাহনী ১১ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : নাজমুল হোসেন শান্ত (আবাহনী)।

প্রাইম দোলেশ্বর-প্রাইম ব্যাংক, বিকেএসপি ৩
প্রাইম দোলেশ্বর : ৫০ ওভারে ২৮৬/৫ (মাহমুদ ৪৫, মার্শাল ১৩৫, ফরহাদ ৬৭; শরিফুল ১/৬২, নাহিদুল ১/২৬, পাঠান ১/১৯, মনির ১/৪৬)।
প্রাইম ব্যাংক : ৪৯.৪ ওভারে ২৮৭/৯ (মারুফ ৮২, মেহরাব জুনিয়র ১০২, সাজ্জাদুল ৫১; মামুন ২/৪৬, সানি ২/৫১, শরিফউল্লাহ ২/৪৭, রেজা ১/৫৫, জোহাইব ১/৩৭)।
ফল : প্রাইম ব্যাংক ১ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মার্শাল আইয়ুব (প্রাইম দোলেশ্বর)।

গাজী গ্রæপ-মোহামেডান, মিরপুর
গাজী গ্রæপ : ৩৫.৪ ওভারে ১৩৭ (শফিউল ১৮, নাদিফ ২৮, আসিফ ৩৫; বিপুল ১/১৭, তাইজুল ১/২৩, শামসুর ১/১৬, অনিক ৪/২৮, আজিম ৩/৩২)।
মোহামেডান : ৩৩.২ ওভারে ১০৮ (জনি ১৫, শামসুর ১৯, রকিবুল ২২; মেহেদি ২/১৭, নাঈম ৩/২৭, টিপু ২/২৭, রাব্বি ৩/৩৫)।
ফল : গাজী গ্রæপ ২৯ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : নাঈম হাসান (গাজী গ্রæপ)।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাশরাফি

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ