নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : কিংবদন্তির ক্যারিয়ারের ৬০০তম গোল বলে কথা। একটু স্পেশ্যাল না হলে কি হয়! লিওনেল মেসি মাইলফলক গোলটি করলেন কাঁটা-কম্পাসে মাপা অবিশ্বাস্য বাঁকানো অথচ বিদ্যুৎগতির এক ফ্রি-কিকে। যে ফ্রি-কিক শুধু গোলের মাইলফলকই পূর্ণ করল না, বয়ে আনল তার জন্যে আরো একটি রেকর্ড। গৌরবমাখা এই একটি গোলেই হয়তো লা লিগার শিরোপাটাও নির্ধারণ হয়ে গেল বার্সেলোনার।
ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে ডি বক্সের ঠিক মাঝ বরাবর ঢুকছিলেন মেসি। উপায়ন্ত না দেখে তাকে ফাউল করেই থামান অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ডিফেন্ডার থমাস প্রিতি। ম্যাচের ২৫তম মিনিটে ২৫ গজ দুর থেকে ফুটবল জাদুকর নিলেন অবিশ্বাস্য ফ্রি-কিক। কি ছিল না সেই ফ্রি-কিকেÑ দুর্দান্ত গতি, নিখুঁত বাঁক, আরো নিখুঁত প্লেসমেন্ট। বাঁ দিকে ঝাপিয়ে মনে হলো হাত প্লাস্টিকের মত লম্বা করে দিলেন গোলরক্ষক জান ওবলাক, চলতি মৌসুমে ২৭ ম্যাচে যার বিশ্বস্থ হাতকে বল ফাঁকি দিতে পেরেছে মাত্র ১২বার। সামান্য বলের নাগাল পেলেও তা থামানো সম্ভব হয়নি ওবলাকের।
ম্যাচের নায়ক মেসিতে তাই ম্যাচ শেষে আবারো মুগ্ধতা প্রকাশ করেন কোচ ভালভার্দে, ‘আগে যখন তার বিপক্ষে খেলতাম তখন কেবলই ভাবতাম এই বুঝি সে (মেসি) গোল করল। কিন্তু এখন চাই সে প্রচুর গোল করুক।’ ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক মেসিতে মুগ্ধ প্রতিপক্ষ কোচ ডিয়েগো সিমিওনেও, ‘আসল সত্যিটা হলো যদি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের একজন লিওনেল মেসি থাকত তাহলে আমরাই ম্যাচটা জিততাম। কিন্তু বাস্তবতা হলো বিশ্বের সেরা তারকা খেলে বার্সার হয়ে।’
আগের দুই ম্যাচেও ফ্রি-কিক থেকে গোল করেছিলেন মেসি। এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচে গোল করলেন ফ্রি-কিক থেকে। লা লিগায় যে কীর্তি নেই আর কারো। চলতি লিগে এটি তার ২৪তম গোল। অবশ্যই তা লিগ মৌসুমের সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ ১২বার গোলে সহায়তাও রেকর্ড ৫বারের বর্ষসেরার। সব মিলে তার ক্যারিয়ার গোল এখন ৬০০টি। যার মধ্যে ক্লাবের জার্সিতে করেছেন ৫৩৯টি, বাকি ৬১টি গোল আর্জেন্টিনার হয়ে। দুই জায়গাতেই তিনিই দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা।
আর্জেন্টাইন তারকার মাইলফলকের এই একটি গোলই শেষ পর্যন্ত লিগের শিরোপা নির্ধারক হয়ে যেতে পারে। তার এই একমাত্র গোলেই এদিন ন্যু ক্যাম্পে অ্যাটলেটিকোকে হারায় বার্সেলোনা। যার ফলে শিরোপা দৌড়ে প্রধান প্রতিদ্›িদ্ব দলটির সঙ্গে ব্যবধান বেড়ে হয়েছে আট। বাস্তবে তা ৯ বললেও ক্ষতি নেই। কারণ মুখোমুখি লড়াইয়ে তো এগিয়ে বার্সাই। প্রথম লেগের ম্যাচটি মাদ্রিদ থেকে ১-১ ড্র করে ফিরেছিল আর্নেস্তো ভালভার্দের দল।
ফলে স্পেনের একমাত্র দল হিসাবে ট্রেবল জয়ের সম্ভবনাও ধরে রেখেছে বার্সা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম লেগে চেলসির মাঠ থেকে ১-১ ড্র করে ফেরায় রয়েছে ভালো অবস্থানে। কোপা দেল রে’তেও দলটি ফাইনালে উঠে বসে আছে। আর লা লিগা তো বলতে গেলে নাগালের মধ্যে। এর আগে ২০০৯ সালে পেপ গার্দিওলা ও ২০১৫ সালে লুইস এনরিকের হাত ধরে ট্রেবল জিতেছিল বার্সা। ক্লাব ইতিহাসে যা একবারো জিততে পারেনি তাদের প্রধান প্রতিদ্ব›িদ্ব রিয়াল মাদ্রিদ।
তবে অ্যাটলেটিকো নিশ্চয় এখনি আশা ছাড়ছেন না লিগ শিরোপার। এজন্য অবশ্য তাদের বাকি ১১ ম্যাচের একটিতেও হারলে চলবে না। এর মধ্যে এপ্রিলের শুরুতে রয়েছে নগর প্রতিদ্ব›িদ্ব রিয়ালের বিপক্ষে একটি ম্যাচও। একই সঙ্গে তাদের কামনা থাকবে বার্সা যেন অন্তঃত ৩ ম্যাচে হারে। ডিয়েগো সিমিওনের দলের এমন চাওয়া অবশ্য হাস্যকর মনে হতে পারে। কারণ উইরোপের শীর্ষ লিগগুলোর মধ্যে একমাত্র দল হিসেবে এখনো অপরাজিত বার্সা। আগের মৌসুমের ৭ ম্যাচ মিলে নিজেদের রেকর্ড মোট ৩৪ ম্যাচে হারেনি কাতালান দলটি।
সব প্রতিযোগিতা মিলে টানা ৮ জয় নিয়ে এদিন মাঠে নেমেছিল অ্যাটলেটিকো। কিন্তু এদিন বলতে গেলে গোলের কোন সুযোগই তারা তৈরি করতে পারেনি। শেষ দুই ম্যাচে ৭ গোল করা অঁতোয়ান গ্রিজম্যানও যেন ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। স্যামুয়েল উমতিতি ও জেরার্ড পিকের সামনে কস্তা-গ্রিজম্যানদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি। অফসাইডের কারণে কস্তার একটি গোল বাতিল হয়। একই কারণে বাতিল হয় লুইস সুয়ারেজের একটি গোলও। স্কোরলাইন হয়ত তুমুল লড়াইয়ের কথাই বলবে। কিন্তু আদতে আধিপত্য বজায় রেখেই ম্যাচ শেষ করে বার্সা।
তবে একটা দুঃসংবাদ পেতেই হচ্ছে বার্সেলোনা ভক্তদের। তা হলো, অধিনায়ক আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার হ্যামিস্ট্রিং ইনজুরি। স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে অন্তঃত এক মাস সময় লাগতে পারে। তার মানে ন্যু ক্যাম্পে আগামী ১৫ মে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চেলসি মহারণে ইনিয়েস্তাকে পাচ্ছেন না ভালভার্দে।
বার্সেলোনা ১ : ০ অ্যাটলেটিকো
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।