নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : একদিকে শুরুর দুই ম্যাচে হারের পর তিন জয়ে কক্ষপথে ফেরা মোহামেডান, অন্যদিকে টানা ৫ জয়ের ধারায় থাকা আবাহনী আজ এক বিন্দুতে। দুই চিরপ্রতিদ্ব›দ্বীর এই মহারণ দিয়ে আজই মিরপুরে হতে যাচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের এবারের আসরের প্রথম ম্যাচ।
এক সময় এই দুই ক্লাবের নামে দুই ভাগে ভাগ হয়ে যেত দেশের ক্রীড়ামোদি মানুষেরা। সেটা হোক ফুটবল কিংবা ক্রিকেট। দু’দলের দ্বৈরথ নিয়ে মারামারির ঘটনাও শোনা যেত হরহামেশাই। এমনকী প্রাণহানিও হত। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে জৌলুস হারিয়েছে এই দ্বৈরথ। এখন আর সেই আগের মতো উত্তাপ ছড়ায় না। নব্বইয়ের দশকে নান্নু-বুলবুল, আকরাম-দুর্জয়রা আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথে যতোটা শিহরিত হতেন এখনকার ক্রিকেটাররা তেমনটা হন না। তারা আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই দেখেন আবাহনী-মোহামেডানের দ্বৈরথকে। তবে ক্লাব দুটির নামেই যে এখনো ঝাঝ রয়েছে। তাইতো খাঁ খাঁ গ্যালারি এখনো কিছুটা হলেও প্রাণ ফিরে পায় মোহামেডান-আবাহনীর ম্যাচে। জড়ো হয় হাজার খানেক দর্শক। এখনো ক্রীড়ামোদি মানুষেরা আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথের ফল জানতে চোখ-কান খোলা রাখে।
আজকের ম্যাচে তাই ব্যাটে বলে বাড়তি আলো ছড়ানোর অপেক্ষায় গতকাল কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের অধীনে একাডেমি মাঠে অনুশীল করে আবাহনীর খেলোয়াড়রা। ছিলেন দলকে টানা জয়ের ধারা নিয়ে আসা দুই তারকা মাশরাফি বিন মর্তুজা ও আনামুল হক বিজয়ও। ব্যাটসম্যানদের দিক দিয়ে সব থেকে বেশী রান করে এগিয়ে আছেন বিজয়। আর পেস বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী উইকেট মাশরাফির। পাঁচ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে পেস বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন তিনি। শেষ ম্যাচেই নিয়েছেন ৫ উইকেট। তাদের ফাঁকে সাংবাদিকদের নজর গেল গত আসরে দলকে চ্যাম্পিয়ন বানানো তারকা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দিকে। তরুন এই অলরাউন্ডারের কাছ থেকেই জানা গেল মোহামেডান-আবাহনীর দ্বৈরথের অল্প বিস্তার, ‘আমি যখন প্রথম বছর প্রিমিয়ার লিগ খেলি তখন মনে হয়েছিল আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ অনেক বেশি উত্তেজনার। এবার নিয়ে আমি ৫ বছর প্রিমিয়ার লিগ খেলছি। আমার কাছে এখন বিষয়টা অনেকটা নরমালের মতো। আগের পাঁচটা ম্যাচের মতো এটাও একটা ম্যাচ। আগেও যেভাবে অনুশীলন করেছি যেভাবে খেলে আসছি প্রস্তুতি ঠিক ওরকমই। মোহামেডানের সাথে খেলা, অনেক কিছু করতে হবে ওরকম কিছু না। আমাদের সেরাটা খেলতে পারলে আমরা এখান থেকে বের হয়ে যাব।’
চলমান লিগে আগের পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিতেই জিতেছে আবাহনী। আর মোহামেডান জিতেছে তিনটিতে। ঐতিহ্যবাহী দ্বৈরথে আবাহনীকেই এগিয়ে রাখছেন মোসাদ্দেক, ‘সব টিমই ভালো। আমাদের টিমটা একটু বেশিই ভালো, আমার কাছে মনে হয়। কাগজে-কলমে বা আমাদের টিমে যে নামগুলো আছে, নামের উপর যে রেপুটেশন আছে সেটা অনুযায়ী যদি খেলতে পারি টিমগুলোর কষ্ট হয়ে যাবে আমাদের সাথে ম্যাচ জেতা।’
জৌলুস হারিয়ে ফেলার বিষয়ে মোসাদ্দেকও একমত। আগের মতো এখন আর দর্শক হয় না- এমন কথা বলতে দ্বিধা করেননি আবাহনীর এই অলরাউন্ডার, ‘আবাহনী-মোহামেডান দুই টিমেরই ভাল দর্শক আছে। মাঠে খুব ভাল দর্শক হয়। আস্তে আস্তে এটা কমে যাচ্ছে। ঐতিহ্যটা ছিল সেই জিনিসটা আমরা হারিয়ে ফেলছি কিনা সেটা দেখার বিষয়। হয়ত মানুষ নানান কাজে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। যার যার কাজ নিয়ে। তারা আসলে ভালো লাগে। আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ হচ্ছে। দুটি দলই বড় নাম। সবাই চিন্তা করে একটা ভালো খেলা হবে। আমাদের কাজটা দর্শক নিয়ে না। আমাদের খেলাতেই ফোকাস করা ভালো।’
এখন পর্যন্ত ডিপিএলে শেষ হয়েছে মোট পাঁচটি রাউন্ড। আর এই পাঁচ ম্যাচের সবকয়টিতে জিতে এখন পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে মাশরাফি-নাসিরদের আবাহনী লিমিটেড। শীর্ষে থাকা খালেদ মাহমুদ সুজনের দলের ঝুলিতে ১০ পয়েন্ট। নেট রান রেটও সবথেকে বেশি আবাহনীর (১.৪৫৯)। টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে ৩টি জয় নিয়ে অবস্থান করছে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। তাদের রান রেট ০.৭৩০। ৫ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে থাকায় পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয়তে অবস্থান করছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ (০.৪৯৩)। এরপর চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব (০.৪০৭) এবং শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব (০.০০৪)।
পঞ্চম রাউন্ড শেষে পয়েন্ট টেবিল
দল ম্যাচ জয় হার পয়েন্ট নে.রা.রে
আবাহনী ৫ ৫ ০ ১০ ১.৪৫৯
শাইনপুকুর ৫ ৩ ২ ৬ ০.৭৩০
রূপগঞ্জ ৫ ৩ ২ ৬ ০.৪৯৩
মোহামেডান ৫ ৩ ২ ৬ ০.৪০৭
শেখ জামাল ৫ ৩ ২ ৬ ০.০০৪
দোলেশ্বর ৫ ৩ ২ ৬ -০.৪১০
গাজী গ্রæপ ৫ ২ ৩ ৪ -০.৩৬৯
ব্রাদার্স ৫ ২ ৩ ৪ -০.৪৬৮
অগ্রণী ব্যাংক ৫ ২ ৩ ৪ -০.৫১৭
খেলাঘর ৫ ২ ৩ ৪ -০.৭৮৩
প্রাইম ব্যাংক ৫ ১ ৪ ২ -০.০৫৬
কলাবাগান ৫ ১ ৪ ২ -০.৪৫৩
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।