Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ভাঙনের কবলে বসতবাড়ি

ধুনটে বাঙ্গালি নদীতে বালু উত্তোলন

| প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : বগুড়ার ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের জয়শিং ঘাটের বাঙ্গালী নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। এতে নদীর তীরবর্তী মানুষের বসতবাড়ী ও ভিটেমাটিসহ ফসলি জমি ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। তবে এসব বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না এলাকাবাসী। জানা গেছে, উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের জয়শিং গ্রামের আবু তাহের ফকিরের ছেলে ফরহাদ হোসেন জয়শিং ঘাটের বাঙ্গালী নদীতে গত ৬ মাস যাবত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর গভীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। নদীতে একাধিক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে পাইপের সাহায্যে নদীর পশ্চিম ও পূর্বপাশে জমা করা হচ্ছে। সেখান থেকে প্রতি ট্রাক বালু বিক্রি করা হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। তবে নদীর চর দখল করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করলেও ‘জয়শিং ফেরিঘাট বালু পয়েন্ট’ নামে ক্যাশ মেমো প্রদান করা হচ্ছে। এদিকে শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি কম থাকায় এবং নদীর গভীর তলদেশ থেকে এভাবে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর গভীরতা সৃষ্টি হয়ে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে নদীর তীরবর্তী মানুষের বসতবাড়ী ও ভিটেমাটিসহ ফসলী জমিগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে স্থানীয় শতাধিক এলাকাবাসী বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বালু ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন। এক পর্যায়ে ফরহাদ হোসেন ও তার লোকজন অভিযোগকারী ১০ গ্রামবাসীকে পিটিয়ে আহত করে। কিন্তু তারপরও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ফরহাদ হোসেন নদীতে একাধিক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। এছাড়া একই ইউনিয়নের সোনাহাটা নান্দিয়ারপাড়া ও চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের দিঘলকান্দি এলাকার বাঙ্গালী নদীতেও একই ভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। জয়শিং গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান, রফিকুল ইসলাম ও হামিদুর রহমানসহ অনেকে আক্ষেপ করে বলেন, বগুড়া জেলা যুবলীগের কয়েক প্রভাবশালী নেতার নাম ব্যবহার করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ফরহাদ হোসেন বাঙ্গালী নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ৬ মাস যাবত বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। অব্যাহত বালু উত্তোলনের কারণে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদীর তীরবর্তী তাদের বসতঘর গুলো এখন হুমকির মুখে পড়েছে। তবে এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেওয়ায় বালু ব্যবসায়ী ফরহাদ ও তার লোকজন ১০ গ্রামবাসীকে পিটিয়ে আহত করেছে। কিন্তু তারপরও প্রশাসন অজ্ঞাত কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তবে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে শেষ সম্বল ভিটেমাটি টুকুও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন বলেন, সরকারীভাবে বালু উত্তোলনের কোন অনুমোদন নেওয়া হয়নি। তবে জেলা যুবলীগের কয়েক নেতাকে সাথে নিয়ে ম্যানেজ করেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, বাঙ্গালী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বালু উত্তোলন করাকে কেন্দ্র করে মারধরের বিষয়টি কেউ অভিযোগ করেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বসতবাড়ি

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ