শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
প্রযুক্তি এখন নি:শ্বাস ফেলছে একুশের বইমেলায়। ফেসবুকের ব্যাপক ব্যবহারে পাঠক-লেখকরা বইপ্রীতি হারিয়ে ফেলছে বলা যায়। বইমেলায় প্রায় ত্রিশ বছরের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, আগে যেভাবে মানুষ বই কিনতো এখন তা অনেকখানি ভাটা পড়ে গেছে। কারণ, ফেসবুক। ফেসবুকেই পাঠকরা পেয়ে যাচ্ছে নতুন বই সম্পর্কে বিবিধ খবরা-খবর তবে ভাসাভাসা। একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক এ বিষয়ে মুখ খোলেন এভাবে, ‘মূর্খরা না বোঝে এখন বই কিনে আর এর বিপরীত গোষ্ঠী ফেসবুকে বইয়ের স্বাদ নেয়’। সেই স্বাদটা কিরকম, সেটা একটু খোলে বলি। কখনোই তারা ফেসবুকে একটি বইয়ের পূর্ণাঙ্গ স্বাদ পায় না। কিছু বাক্যের স্বাদ, বইয়ের প্রচারের কূটকৌশল, কয়েক লাইনের স্ট্যাটাস, সেই সঙ্গে বইমেলায় তার নিজের ছবি, অন্যদের ছবি, এসব নিয়ে তো আর একটি পূর্ণাঙ্গ বইয়ের স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। ফেসবুক ওপেন করলেই দৃশ্যমান হয়ে উঠে কিছু দুর্বল লেখকদের নিজের মুখ আর বইয়ের কাভার নিয়ে নির্লজ্জের মতো লাফালাফি। প্রকৃত লেখকদের মধ্যে এটা এতখানি দৃশ্যমান নয়। সাহিত্যচর্চা আড়ালের বিষয়, এখানে লেখাটাই মুখ্য। লেখক নয়। সৃষ্টিই তাকে বাঁচিয়ে রাখবে। লেখকের নাম-নিশানা যদি কোথাও না থাকে তবুও তার বইয়ের অক্সিজেন বহু পাঠককে উজ্জীবিত করবে কাল থেকে কালান্তর। প্রকৃত পাঠক প্রচ্ছদ-লেখককে নিয়ে যতখানিভাবে, তার চেয়ে অনেক অনেক বেশিভাবে বইয়ের অন্দর-মহল নিয়ে। কারণ, তার তৃষ্ণার্ত মনন শান্তি খোঁজেপায় একমাত্র বইয়ের ভেতরে মণিমুক্তার মধ্যে। প্রতিবারই মেলায় প্রচুর সংখ্যক বই বন্যার জলের মতো আছড়ে পড়ে। প্রচ্ছদ-ছাপা-বাঁধাই-কাগজের মান রোদের মতো ঝলমলে। কিন্তু ভেতরে লেখার মান...। তবে সব বইয়ের মান এক্ষেত্রে এমন তা বলা যাবে না। যেসব বইয়ের ক্ষেত্রে এমনটা বলা যাবে না, বিশেষ করে যারা মৌলিক ধারার লেখক। পাঠকদের কাছে আমার সুদৃঢ় অনুরোধ, ফেসবুক লেখক হন আর যাই হন, প্রকৃত পাঠকদের ঠকাবেন না।
আর একটা বিষয় নিয়ে না বললেই নয়, একশ্রেণীর প্রকাশক নানা কৌশলে লেখক হতে প্রাণপণে চেষ্টা করছে। টিভি চ্যানেল দেখলেই সেজেগুজে দৌড়ে ছুটে যায় নিজের বই নিয়ে, পাশেই বসে প্রকৃত লেখক। যার বই বের করেছে ঐ প্রকাশক। এই দৃশ্য দেখে লেখক বেচারা তো হতাশ। উচিত, যার বই তিনি বের করেছেন তার বই এবং তাকে চ্যানেলের সামনে উত্থাপন করা, আসলে এসব কারণে আমাদের বইয়ে মান দিন দিন কমে যাচ্ছে। জীবনানন্দ দাশের সেই চিরসত্য উচ্চারণ : অন্ধরাই বেশি দেখি। এরা সেই অন্ধ।
আগের বইমেলা ছিলো সংক্ষিপ্ত পরিসরে। তবু মানুষ বই কিনতো। হইহুল্লোর করতো। এটা নানা কারণে এখন মলিন।
আর একটা কথা না বললেই নয়। ‘প্রচারই প্রসার’ বলে একটা কথা চালু আছে। কথাটা ধ্রব সত্য তবে ক্রিয়েটিবিটির ক্ষেত্রে নয়। তাহলে টিভিতে যারা ঘনঘন মুখ দেখান তাদের বই-ই মেলায় বেশি বিক্রি হত। যাক ঐসব লেখকদের আর লজ্জা দিতে চাই না। তাদের দুর্বলতার কথা তারা নিজেরাও জানে কিন্তু নেশাতো তাকে ছাড়ে না। এরা সাহিত্যের জন্য সত্যি ইতিবাচক কিছু নয়।
ফেসবুক বিজ্ঞানের অমর দান। এর অনেক উপকারিতার সঙ্গে মন্দও কিছু আছে। এটা ভুলে গেলে চলবে না। ফেসবুকের নিম্নচাপে বই মেলায় এবার বিক্রি কম। যদিও প্রকাশকরা এটা শিকার করতে চান না। এসব ভাবতে কেমন জানি লাগে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।