Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টি-২০ : টু কি টা কি

| প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিশেষ কয়েনে টস, প্রথম বল রাহীর
প্রথমবারের মতো সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। একইসাথে শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলেরও এটা প্রথমবারের মতো সিলেটের মাঠে নামা। এই স্মরণীয় মুহুর্তকে আরো স্মরণীয় করে রাখতে সিলেটে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের টস হয়েছে বিশেষ কয়েনে। বিশেষ এই কয়েনটি সংরক্ষিত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সংশ্লিষ্টরা। কয়েনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)-এর লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া এ ম্যাচের খেলোয়াড়দের জন্য দু’দলের অধিনায়কের হাতে স্মারকও তুলে দেওয়া হয়। দিনটি আরো মহিমান্বিত হল রাহীর জন্য। ঘরের মাঠে অভিষেকের দিনটি ‘ভরসা’ মাখা এক স্মৃতি জড়িয়ে রইলো তার জীবনে। অভিষেক ম্যাচে রাহীর হাতে নতুন বল তুলে দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

নগরীর ৪ স্থানে বড়পর্দায় খেলা
আসন যে সীমিত! অনেকেই টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়েছেন। দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পাননি আরোও হাজারো দর্শক। তারা অভিযোগ সিলেটে যেকোন বড় আয়োজন হলেই আগেভাগেই এক শ্রেণীর টিকিট ব্যবসায়ীরা টিকিট হাতিয়ে নেয়। বঞ্চিত হতে হয় ক্রীড়াপ্রেমী দর্শকদের। তবে সিলেটের মাঠে বাংলাদেশের অভিষেককে স্মরণীয় করে রাখতে বিকল্প ব্যবস্থারও আয়োজন করা হয় সিলেটে। টিকিট না পেয়ে মাঠে গিয়ে খেলা দেখতে বঞ্চিতদের জন্য নগরীর চার স্থানে বড় পর্দায় বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচ দেখানোর ব্যবস্থা করে সিলেট সিক্সার্স। এসব স্থানেও উপচে পড়া ভিড় ছিল ক্রীড়াপ্রেমীদের। নগরীর উপশহর আবুল মাল আব্দুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সের সামনে, ক্বিনব্রিজের নিচে আলী আমজদের ঘড়ির সামনে, রিকাবীবাজার জেলা স্টেডিয়ামের সামনে এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বড় এলইডি পর্দায় খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন সিলেট সিক্সার্সের চেয়ারম্যান শাহেদ মুহিত।

বাংলাদেশের অভিষেক
সিলেটবাসীর জন্য দিনটি ঐতিহাসিক বললে ভুল হবে না। প্রথমবারের মত এখানে খেলতে নামছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। ২০১৪ সালে সিলেট স্টেডিয়ামে প্রথমবারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ম্যাচ হয়েছিল। সেবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডের কয়েকটি ম্যাচ হয় সিলেটে। এরপর দীর্ঘ প্রায় চার বছর কেটে গেলেও নান্দনিক এ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোনোও ম্যাচ হয়নি। সেই অপেক্ষা ঘুচে গিয়ে এবার সিলেটের মাঠে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ। এ ম্যাচের জন্য সিলেটের ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। স্টেডিয়ামের গ্যালারি ক্রমেই দর্শকে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠছে।

ঘরের ছেলের অভিষেক
এই ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হলেন সিলেটের ছেলে আবু জায়েদ রাহী। গেল নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেট দিয়ে নজর কাড়েন উদীয়মান এই পেসার। এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটেও ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তাকে নিয়ে আসে পাদপ্রদীপের আলোয়। নিজের ভালো পারফরম্যান্সের পুরস্কারস্বরূপ এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে ডাক পান রাহী। আশায় ছিলেন, ম্যাচে খেলার সুযোগ পাবেন। সেই সুযোগ নিজের ঘরের মাঠেই পেয়ে গেলেন রাহীর। এ ম্যাচে রাহীর সাথে অভিষেক ঘটেছে অফব্রেক বোলার মেহেদি হাসানেরও। অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান টুপি দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। আবু জায়েদকে সন্মানের টুপিটি পড়িয়ে দিয়েছেন আরেক পেসার রুবেল হোসেন। দলে সব মিলিয়ে চারটি পরিবর্তন। চোট কাটিয়ে ফিরেছেন তামিম ইকবাল। মাসল ইনজুরির কারনে খেলতে পারেন নি প্রথম টি-২০। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি খেলতে নামছেন মোহাম্মদ মিঠুন। প্রথম টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়েছেন রুবেল হোসেন, সাব্বির রহমান, জাকির হাসান ও আফিফ হোসেন।

টিকিট কালোবাজারে!
ঘরের মাঠে এই প্রথম খেলছে ঘরের ছেলেরা। এই ম্যাচকে কেন্দ্র করে সিলেটের ক্রিকেট প্রেমীদের মধ্যে অনেক উৎসাহ। যার প্রমাণ মেলে অনলাইনে টিকিট ছাড়ার ১ ঘন্টার মধ্যেই ১৭ হাজার টিকিট বিক্রি হওয়া থেকে। শুক্রবার রাতে অনলাইনে টিকিট ছাড়ার এক ঘন্টার ভিতরেই সব টিকিট ‘সোল্ড আউট’ দেখিয়েছে। সিলেটে টিকিট যেন সোনার হরিণ। এই ম্যাচে টিকিটমূল্য ধরা হয়েছে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড ১ হাজার, ক্লাব হাউস ৩০০, গ্রিন গ্যালারি ১৫০, ইস্টার্ন গ্যালারি ১০০, ওয়েস্টার্ন গ্যালারি ১৫০ টাকা।
তবে, অনলাইনে টিকিট দিয়েও ঠেকানো যায়নি টিকিট কালোবাজারীদের। অনলাইন থেকে টিকিট সংগ্রহ করে তারা সেই টিকিটগুলো বিক্রি করছে চড়া দামে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নজন টিকেটের চড়া দাম চেয়ে পোস্ট করছেন। ক্রিকেটপাগল অনেকেই সেখান থেকে টিকিট কিনেছেন। ১০০টাকার টিকিট ৬০০/৭০০ টাকা, ৩০০ টাকার টিকিট ১২০০-১৫০০টাকা দাম চাওয়া হয়। একইভাবে অন্য টিকেটের বেলায়ও ৮ থেকে ১০ গুণ দাম চাওয়া হয়। কালোবাজারী রুখতে এবারে ধারণক্ষমতার ১৮হাজার টিকেটের ১৭ হাজার টিকিট অনলাইনে দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। মাত্র ১ ঘন্টায় শেষ হয়ে যায় সব টিকিট। টিকিট না পাওয়া হতাশ ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য শনিবার ১২টায় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করা হয়। সেখানেও লাইনে দাঁড়িয়ে অনেককেই ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। কালোবাজারীরা আগেভাগে সেখান থেকেও হাতিয়ে নেয় টিকিট। এতো কিছুর পরেও কালোবাজারী রুখতে না পারায় হতাশ সিলেটের প্রকৃত ক্রিকেটপ্রেমী দর্শক। তারা শাস্তি দাবী করেছেন কালোবাজারীদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টি-২০

১৩ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ