Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পাকিস্তানের কাছে গোপনে বড় আকারের কমব্যাট ড্রোন বিক্রি করেছে চীন!

| প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : পাকিস্তানের কাছে সম্ভবত গোপনে একটি বড় আকারের কমব্যাট (ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালাতে সক্ষম) ড্রোন বিক্রি করেছে চীন। নতুন স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা এ কথা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাড কলেজের ‘সেন্টার ফর স্ট্রাডি অব দ্য ড্রোন’ প্রথম এই বিষয়টি নজরে আনে। ২০১৭ সালের নভেম্বরে তোলা স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে গত ৫ জানুয়ারি এই সেন্টার এক রিপোর্টে জানায় যে, পাকিস্তানের মিনাওয়ালিতে আলম বিমান ঘাঁটির কাছে একটি মাঝারি-উচ্চতায় চলতে সক্ষম দূর-পাল্লার ড্রোন উড়তে দেখা গেছে।
রিপোর্টে বলা হয়, ছবি দেখে মনে হচ্ছে এটা একটি চীনের তৈরি ‘উইং লুং-ওয়ান’। ড্রোনের ডানার বিস্তার পরিমাপ করে এই সিদ্ধান্তে আসা যায়। এই ড্রোনগুলোর ডানার বিস্তার ১৪ মিটার এবং এর লেজ ‘ভি’ আকৃতির। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে তোলা উইং লুং-ওয়ানের স্যাটেলাইট ইমেজের সঙ্গে পাকিস্তানে তোলা ইমেজ মিলিয়ে দেখা হয়েছে।
সেন্টারের ওই রিপোর্টের সত্যতা স্বীকার করেছে প্রতিরক্ষা সাময়িকী- আইএইচএস জেনিস। একই সময়ে বিভিন্ন স্যাটেলাইট থেকে একই ইমেজ তোলা হয়।
এই উইং লুং ড্রোনের নির্মাতা হলো এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন অব চায়না (এভিআইসি)। মাঝারি উচ্চতায় এই ড্রোনগুলো দীর্ঘ সময় উড়তে সক্ষম এবং ক্ষেপনাস্ত্র ছোঁড়ার উপযোগী। এটি লম্বায় নয় মিটার এবং প্রায় ২৫,০০০ ফুট উপর দিয়ে উড়তে পারে। ঘন্টায় এর সর্বোচ্চ গতি ২৮০ কিলোমিটার। ড্রোনটি টানা ৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে।
আইএইচএস জেনিস জানায়, এর সর্বোচ্চ টেক-অফ ওজন ১,১৫০ কেজি। এর সর্বোচ্চ পে-লোড ক্যাপাসিটি ২০০ কেজি। পে-লোডগুলো ইন্টার্নাল ও এক্সটার্নাল উইপন স্টোরে সমানভাবে বিন্যাস্ত। একে আমেরিকার প্রিডেটর ড্রোনের চীনা সংস্করণ বলে মনে করা হয়।
পাকিস্তান পরীক্ষামূলকভাবে এই ড্রোন মোতায়েন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেন্টারের বিশ্লেষণে বলা হয়, স্যাটেলাইট ইমেজে পাকিস্তানের ঘাঁটিতে আর কোন ড্রোন বা সাপোর্টিং ইকুইপমেন্ট দেখা যায়নি। এতে মনে হয় নভেম্বরের শেষ দিকে কোন এক সময় আলম এয়ারবেজে এই ড্রোনের আগমন ঘটেছে। এই ড্রোনের রংটিও সাদা এবং তা যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন করা ড্রোনের মতো ধুষর নয়। মোতায়েন করা উইং লুং ড্রোন দেখে মনে হচ্ছে এটি একটি টেস্ট প্লাটফর্ম, কোন অপারেশনাল প্লাটফর্ম নয়।
ড্রোন সেন্টারের রিপোর্ট ঠিক হলেও পাকিস্তান বিমান বাহিনী এই প্রথম উইং লং-ওয়ান ড্রোন ব্যবহার করছে না। ২০১৬ সালের জুনে পরীক্ষা চালানের সময় আলম বিমান ঘাঁটির কাছে যে ড্রোন বিধ্বস্ত হয় সেটিও উইং লুং-ওয়ান ছিলো বলে মনে করা হয়।
পাকিস্তান সম্ভবত চীনের সহায়তায় অনেক বছর ধরে সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহার করছে। ইসলামাবাদ প্রথম ২০১৩ সালে ড্রোন হামলা চালানোর কথা স্বীকার করে। সেসময় সেনাবাহিনীর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে তারা বোরাক ও শাহপার নামে দুটি ড্রোন তৈরি করেছে। তবে বিদেশী বিশেষজ্ঞরা তখন দেশীয়ভাবে পাকিস্তানের ড্রোন তৈরির ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।
বোরাক এবং শাহপার দেখতে অনেকটা ছিলো চীনের সিএইচ-৩ ইউএভির মতো। তবে, পাকিস্তানের দাবি ছিলো যে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান গেøাবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড ডিফেন্স সল্যুশন (জিআইডিএস) এবং ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড সাইন্টিফিক কমিশন (নেসকম) মিলে ড্রোন দুটি তৈরি করে।
উৎস যাই হোক না কেন, ২০১৫ সাল থেকে পাকিস্তান তার উপজাতীয় এলাকায় জঙ্গী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে হামলা চালানোর কাজে ড্রোন ব্যবহার করে আসছে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

Show all comments
  • আমিনুল ইসলাম ১৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১:৩৭ এএম says : 0
    কী হতে যাচ্ছে ................
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ