নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
তার ব্যাটও যে ঝলসে উঠতে জানে তা অজানা নয় ক্রিকেট বিশ্বের। যারা ভুলে গিয়েছিলেন তাদের একদিন আগেই মনে করিয়ে দিয়েছেন ১৭ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে। তিনে নেমে দলকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। গতকালও তার ব্যাটে ছোট্ট কিন্তু কার্যকরী এক তান্ডব বয়ে গেল জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। এবার সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে সাতে নেমে রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক মাঠ ছাড়লেন দলকে জিতিয়ে। গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেটে জিতেছে রংপুর। সিলেটের দেয়া ১৭৩ রানের চ্যালেঞ্জ ম্যাশ ঝড়ে দুই বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে যায় তারা।
যখন ক্রিজে আসেন তখন পেন্ডুলামের মতো দুলছে ম্যাচ। ২৪ বলে রংপুরের প্রয়োজন ৪৪ রান। তখনও ক্রিজে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রংপুরের ম্যাচ উইনার মাশরাফি। ভরসা করা যে যায়, সেটি আগেও দেখেছে বিপিএল। শেষ পর্যন্ত দুই ছক্কায় ১০ বলে অপরাজিত ১৭ রানের ইনিংসে ম্যাচ নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন অধিনায়ক। তার ছোট্ট কিন্তু কার্যকর ইনিংসে আবার রংপুরের কাছে হেরেছে নাসির হোসেনের সিলেট।
ব্যাট হাতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি সিলেট সিক্সার্সের। ১৪ রানেই নাজমুলের বলে এলবিডবিøউ হয়ে ফেরেন নুরুল হাসান (৫)। অধিনায়ক নাসির হোসেনও (৪) সুবিধা করতে পারেননি। নাজমুলের বলে মিথুনের স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। দলকে টেনে নিয়ে যেতে থাকা ওপেনার ফ্লেচারও বেশিদূর যেতে পারেননি। সামিউল্লাহর ক্যাচ হয়ে নাজমুলের তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে ফ্লেচার দু’টি চারের সাহায্যে ১৭ বলে করেন ২৬ রান। চতুর্থ উইকেটে বাবর আজম ও সাব্বির রহমান ৭৪ রানের জুটি গড়ে দলকে তিন অংকের ঘরে নিয়ে যান। ওই লম্বা জুটি গড়ার সময় নিজের ফিফটিও পূর্ণ করেন বাবর আজম। ৩৪ বলে একটি বিশাল ছক্কা ও চারটি চারের সাহায্যে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। অবশ্য আর চার রান যোগ করেই রান আউটের শিকার হন এই পাকিস্তানী। দলীয় ১৫০ রানে রংপুর দলপতি মাশরাফির বলে বোল্ড হয়ে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৩৭ বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে ৪৪ রান করেন সাব্বির রহমান। এরপর দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান রস হোয়াইটলি (১১ বলে ১৭ রান) ও টিম ব্রেসনানের (৫ বলে ১৬ রান) ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৩ রানের ফাইটিং স্কোর গড়ে সিলেট সিক্সার্স।
জয়ের জন্য ১৭৪ রান ক্রিস গেইল-ম্যাককুলামদের জন্য কঠিন কোনো টার্গেট নয়। তবে ব্যাট হাতে খুব বেশি ছন্দে নেই এই দুই তারকা। দলীয় সাত রানেই সোহেল তানভীরের বলে ব্রিজনানকে ক্যাচ দিয়ে তারই যেন প্রমাণ দিলেন গেইল (৫)। অফ ফর্মে থাকায় গতকাল গেইলের সঙ্গে ম্যাককুলামকে ওপেনিংয়ে পাঠায়নি রংপুর। ম্যাককুলামের পরিবর্তে ওপেন করতে নামেন জিয়াউর রহমান। টিম ম্যানেজমেন্ট এই পরিবর্তন এনে বেশ সুফলও পেয়েছে। জিয়া তার স্বভাবগত ব্যাট চালিয়ে ১৮ বলেই দু’টি ছক্কা ও পাঁচটি চারের সাহায্যে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। দুর্ভাগ্য তার। বেশ ভালোই খেলছিলেন। নাবিল সামাদের একটি বল খেলতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে পারেননি। পা ক্রিজের বাইরে থাকায় উইকেট কিপার বল গ্রিপে নিয়েই দ্রুত স্ট্যাম্পিং করে দেন তাকে। ওয়ান ডাউনে নেমে ম্যাককুলামও রানের দেখা পেয়েছেন। দলকে ১১৭ রানে নিয়ে গিয়ে আবুল হাসানের বলে হোয়াইটলিকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ম্যাককুলাম দু’টি ছক্কা ও চারটি চারের সাহায্যে করেন ৪৩ রান। দু’দুবার লাইফ পেয়েও ৩৩ রান করে রান আউট হন টুর্নামেন্টের সেরা স্কোরার রবি বোপারা। শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক মাশরাফি (১৭) ও নাহিদুল (১৪) অবিছিন্ন ৩১ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৩ রানে হারিয়ে চট্টগ্রামে পা রেখেছিল তারকা খচিত দল রংপুর রাইডার্স। অবশ্য বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের উদ্বোধনী ম্যাচেই খুলনার কাছে ৯ রানে হেরে গিয়ে হোঁচট খায় মাশরাফি-গেইলদের দলটি। তবে চট্টগ্রাম ভেন্যুতে পরের ম্যাচেই হারের বৃত্ত থেকে বের হয়ে স্বাগতিক চিটাগং ভাইকিংসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফেরে রংপুর। গতকাল একই ভেন্যুতে সিলেট সিক্সার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলের শেষ চারে উঠতে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল রংপুর রাইডার্স। ৯ ম্যাচে ৫ জয়ে এখন ঝুলিতে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে তারা। নিজেদের বাকি তিন ম্যাচের মধ্যে একটিতে জিতলেই বিপিএলের সুপার ফোর নিশ্চিত হবে রংপুরের।
পক্ষান্তরে শেষ চারে উঠার ক্ষীণ সুযোগ থাকলেও চট্টগ্রাম পর্ব থেকে শূণ্য হাতে বিদায় নিতে হলো সিলেট সিক্সার্সকে। চট্টগ্রাম পর্বের দু’টি ম্যাচের প্রথমটি হেরেছে তারা চিটাগাং ভাইকিংসের কাছে ৪০ রানের ব্যবধানে। আর গতকাল রংপুরের কাছে হারল তারা ৪ উইকেটে। সিলেট নিজেদের মাটিতে পরপর তিন ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে যে চমক সৃষ্টি করেছিল, সেই চমক তারা ধরে রাখতে পারেনি ঢাকা ও চট্টগ্রাম ভেন্যুতে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম ভেন্যুতে তাদের ৭টি ম্যাচের মধ্যে একটি বৃষ্টির কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি। বাকি ছয়টি ম্যাচই হেরে গেছে তারা। এরফলে বলা যায়, বিপিএলে বিদায় ঘন্টাই বেজে গেছে তাদের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিলেট সিক্সার্স : ২০ ওভারে ১৭৩/৫ (ফ্লেচার ২৬, নুরুল ৫, নাসির ৪, বাবর ৫৪, সাব্বির ৪৪, হোয়াইটলি ১৭*, ব্রেসনান ১৬*; মাশরাফি ১/৩৯, নাজমুল ৩/১৮, রুবেল ০/২৬, সামিউল্লাহ ০/২৮, মালিঙ্গা ০/৪৫, বোপারা ০/১৫)।
রংপুর রাইডার্স : ১৯.৪ ওভারে ১৭৭/৬ ওভারে (গেইল ৫, জিয়া ৩৬, ম্যাককালাম ৪৩, মিঠুন ১৮, বোপারা ৩৩, সামিউল্লাহ ০, মাশরাফি ১৭*, নাহিদ ১৪*; তানভির ১/৪৪, নাবিল ১/৩১, ব্রেসনান ১/৪০, হাসান ১/২৫, রাব্বি ০/৩২)।
ফল : রংপুর রাইডার্স ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : নাজমুল ইসলাম (রংপুর)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।