নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসের অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত বলেছিলেন, ‘চট্টগ্রামের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক। এখানে আমরা ভালো রান পাবো এবং জয় নিয়েই মাঠ ছাড়বো।’ কথা রেখেছেন তিনি ও তার দল বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটস। গতকাল চট্টগ্রাম ভেন্যুতে স্বাগতিক চিটাগং ভাইকিংসকে কাঁদিয়ে সাত উইকেটের জয় তুলে নিয়েছেন সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন ঢাকার দলটি। চট্টগ্রামে যখন এই দলটি আসে তখন আট ম্যাচে নয় পয়েন্ট নিয়ে বিপিএলের পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান ছিল তৃতীয়। চিটাগং ভাইকিংসকে হারিয়ে নয় ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে এখন ঢাকার অবস্থান। এনামুল হক বিজয়ের ৭৩ রানের ইনিংসের ওভর ভর করে ১৮৭ রানের ফাইটিং স্কোর গড়েছিল চিটাগং ভাইকিংস। কিন্তু তারপরও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি তারা। গতকাল ওপেনার লুইসের ৭৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের ওপর ভর করে সাত বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ঢাকা। যা বিপিএলে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়!
ওয়ান ডাউনে নাম ডেনলির সঙ্গে ওপেনার লুইসের ১১৮ রানের পার্টনারশিপ চিটাগাং ভাইকিংসকে ম্যাচ থেকে সিটকে দেয়। দলের জয়ে অন্যন্য ভূমিকা রেখে ম্যাচ সেরা হয়েছেন ঢাকা ডায়নামাইটসের ওপেরার লুইস। শুধু এই ম্যাচ থেকেই নয়, বিপিএল থেকেই ছিটকে পড়েছে ভাইকিংস! কাগজে কলমে শেষ চারে যাওয়ার সুযোগ এখনও থাকলেও বাস্তবের চিত্রটা ভিন্ন তাদের। নয় ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট মাত্র পাঁচ। পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকায় ভাইকিংসের হাতে রয়েছে আর তিনটি ম্যাচ। চিটাগাং ভাইকিংস দলপতির চোখেমুখে হতাশার গ্লানি। ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের সামনে অকপটে শিকারও করলেন তা, ‘দল হিসেবে পুরোপুরি জ্বলে উঠতে পারিনি আমরা। অনেকগুলো ক্লোজ ম্যাচেই আমরা হেরে গেছি। ওই ম্যাচগুলোতে যদি ফলাফল বের করে আনতে পারতাম, তাহলে আরো ভালো অবস্থানে থাকতাম। ঢাকার বিপক্ষে আমরা ভালো স্কোর করেও জিততে পারিনি। ওদের বেশ কয়েকজন ভালো ব্যাটসম্যান থাকায় জয় তুলে নিতে পেরেছে তারা।’
টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন চিটাগাং ভাইকিংস অধিনায়ক লুক রনকি। ফিফটির ইনিংস খেলে দলকে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দেন তিনি। ওয়ান ডাউনে নামা এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে ১০৭ রানের পার্টনারশিপ করে দলকে বড় স্কোরের দিকে নিয়ে যান রনকি। ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক সাকিবের বলে শহীদ আফ্রিদিকে ভাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে রনকি যখন ফিরে আসেন তখন তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছিল ৬৯ রানের ইনিংসটি। ৪০ বলে চারটি ছক্কা ও চারটি চারের সাহায্যে এই চমৎকার ইনিংসটি খেলেন তিনি। এর আগে মাত্র ২৭ বলেই ফিফটি পূরণ করেন ভাইকিংস দলপতি। এরপর দলকে টেনে নেয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন এনামুল। সম্ভাবনা জাগাচ্ছিলেন এবারের বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করারও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিন অংকে পৌঁছতে পারেননি তিনি। দলকে ১৪৮ রানে রেখে আবু হায়দারের বলে ডেলপোর্টের ক্যাচ হওয়ার আগে এনামুল ৪৭ বলে ছয়টি ছক্কা ও তিনটি চারের সাহায্যে ৭৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। ফিফটি আসে তার ৩১ বলে চারটি ছক্কা ও দু’টি চারের সাহায্যে। অধিনায়ক রনকি ও এনামুলের দু’টি ফিফটির ইনিংসের ওপর ভর করে চিটাগাং ভাইকিংস নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে পাঁচ উইকেটে ১৮৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর করে।
জবাবে শুরুতেই তারকা ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদিকে হারিয়ে বসে ঢাকা ডায়নামাইটস। দলীয় ১ রানের মাথায় তাসকিনের তৃতীয় বলেই শূণ্য রানে রনকির ক্যাচ হয়ে ফেরেন আফ্রিদি। অবশ্য শুরুর এই ধাক্কা বুঝতেই দেননি আরেক ওপেনার লুইস। ওয়ান ডাউনে নামা ডেনলিকে সঙ্গী করে ১১৮ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে জয়ের শক্ত ভিত গড়েন তিনি। অল্পের জন্য ডেনলি (৪৪) ফিফটির দেখা না পেলেও লুইস ঠিকই ফিফটি পূর্ণ করেন। মাত্র ২৪ বলে ছয়টি ছক্কা ও তিনটি চারের সাহায্যে ফিফটি করেন লুইস। রায়াত এমরিদের বলে নাজিবুল্লাহর ক্যাচ হওয়ার আগে ৩১ বলে নয়টি ছক্কা ও তিনটি চারের সাহায্যে ৭৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি। আর একজনের উইকেটই শুধু নিতে পেরেছিল চিটাগাং ভাইকিংসের বোলাররা। ডেননিকে সিকান্দার রাজার ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তানভির হায়দার। কিন্তু তাতে ঢাকার জয়রথ থামাতে পারেননি তাসকিন-তানভিররা। ফলে আরো একটি পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় চিটাগং ভাইকিংসকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চিটাগং ভাইকিংস : ২০ ওভারে ১৮৭/৫ (রনকি ৫৯, বিজয় ৭৩, নাজিবুল্লাহ ১৬, সিকান্দার ২৬*; সাকিব ১/৫১, নারাইন ১/১১, রনি ১/৩৫, শহিদ ১/২৮)।
ঢাকা ডায়নামাইটস : ১৮.৫ ওভারে ১৯১/৩ (লুইস ৭৫, ডেনলি ৪৪, সাকিব ২২*, ডেলপোর্ট ৪৩*; তাসকিন ১/৩৫, এমরিট ১/২৪, তানবির ১/১৮)।
ফল : ঢাকা ডায়নামাইটস ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : এভিন লুইস (ঢাকা)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।