নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শেষ ওভারে দরকার ১০ রান। ডোয়াইন ব্রাভোর প্রথম বলেই আউট শুভাগত। বাউন্ডারি লাইনে এসময় দেখা গেল সহাস্য কামালকে। একটু দূরে চিন্তামগ্ন নাসির। পরের বলে নুরুল হাসানের এক ছক্কায় উল্টে গেল চিত্র। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) টানা দ্বিতীয় জয়ের জন্য নাসিরের সিলেট সিক্সার্সের দরকার তখন ৪ বলে চার। পঞ্চম বলে থার্ড ম্যান দিয়ে বল ঠেলে দিয়েই শূন্যে নুরুলের উল্লাসিত ঘুষি! ওদিকে উল্লাসের ঢেউ গ্যালারিতেও।
প্রথম ম্যাচে অনায়াসে জয় পেলেও এবার রোমাঞ্চকর ৪ উইকেটে জিতেছে সিলেট। ২০১৫ সালের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের যাত্রা শুরু হলো হার দিয়ে।
১৪৬ রানের লক্ষ্যে ফ্লেচার-থারাঙ্গার ৮.৩ ওভারে ৭৩ রানের উদ্বোধনী জুটি সিলেটের সহজ জয়ের কথাই বলছিল। কিন্তু ম্যাচ শেষ ওভারে নিয়ে অমন হাবুডুবু খেয়ে জয়ের কারণ হলো মিডিল অর্ডারের ব্যর্থতা। ধ্বসের শুরুর ফ্লেচারের (২৯ বলে ৩৬) রান আউটরে মধ্য দিয়ে। তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০২ রানে থারাঙ্গাকে ফেরানোর মধ্য দিয়ে ম্যাচে ফেরে কুমিল্লা। মাঝে মোহাম্মাদ নবীর বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন সাব্বির রহমান (৫ বলে ৩)। ২০ বলে ১৮ রান করে রশিদ খানের বলে স্টাম্পিং হওয়ার আগ পর্যন্ত স্বস্তিতে ছিলেন না নাসিরও। ইংলিশ অল-রাউন্ডার রস হুইটলিও ফেরেন দৃষ্টিকটু রান আউটে কাটা পড়ে। ফলে ছোট লক্ষ্যও হঠাৎ করে পাহাড়সম হয়ে পড়ে সিলেটের সামনে। কিন্তু শেষ ওভারে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসানের এক ছক্কা ও চারে হাসি ধরে রাখে মাঠভরা স্বাগতিক দর্শকরা। তার আগে ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলে গেছেন থারাঙ্গা। ৪০ বলে ৫১ রান করে দ্বিতীয় ম্যাচেও সিলেটের জয়ের নায়ক এই শ্রীলঙ্কান। ম্যাচ শেষে থারাঙ্গা বলেন, ‘যেভাবে ব্যাটিং করেছি তাতে আমি খুশি। এজন্য আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে।’
টানা দ্বিতীয় জয়ে উচ্ছ্বাস আটকে রাখতে পারেননি সিলেট অধিনায়ক নাসিরও, ‘টানা দুই জয় অসাধারণ। এর কৃতিত্ব আমার ছেলেদের, যারা এজন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে। নুরুলকে ধন্যবাদ। আমরা চেয়েছিলাম পুরো ২০ ওভার ব্যাট করতে।’ পরাজিত দলের অধিনায়ক মোহাম্মাদ নবী হারের জন্য স্বল্প পুঁজিকেই দায়ী করলেন, ‘এই পিচে আমরা ১০-১৫ রান মত কম করেছি। সিলেট ভালো ব্যাট ও বল করেই জিতেছে।’
ইনজুরির কারণে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স প্রথম ম্যাচেই পায়নি তাদের আইকন খেলোয়াড় তামিম ইকবালকে। তার অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেন আফগান রিক্রুট নবী। টস হেরে ব্যাট করতে নামা ভিক্টোরিয়ান্সের লিটন-ইমরুলের ৫ ওভারের মধ্যে ৩৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা মোটামুটি মানের হলেও ৪ রানের ব্যবধানে দুজনকেই ফিরিয়ে ম্যাচের রাশ টেনে ধরেন বোলার নাসির ও তাইজুল। ৪ রানের ব্যবধানে মারকুটে নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যান জস বাটলারকে ফিরিয়ে সবচেয়ে বড় আঘাতটাও হানেন তাইজুল। এরপর মারলন স্যামুয়েলস (৪৭ বলে ৬০) কেবল দাঁড়াতে পেরেছেন। অলক কাপালি-মোহাম্মাদ নবীরাও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। মারকুটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যান ডোয়াইন ব্রাভোও ৯ বল খেলে করেন ১১* রান। দলীয় সংগ্রহটা তাই ৬ উইকেটে ১৪৫ রানে আটকে যায় ভিক্টোরিয়ান্সের। সিক্সার্সের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন তাইজুল ও উইন্ডিজ মিডিয়াম পেসার ক্রিসমার সান্তোকি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
কুমিল্লা : ২০ ওভারে ১৪৫/৬ (লিটন ২১, স্যামুয়েলস ৬০, কাপালি ২৬; সান্তোকি ২/৩০, তাইজুল ২/২২)।
সিলেট : ১৯.৫ ওভারে ১৪৮/৬ (থারাঙ্গা ৫১, ফ্লেচার ৩৬, নাসির ১৮; ব্রাভো ২/৩৪)।
ফল : সিলেট ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : উপুল থারাঙ্গা (সিলেট)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।