Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বৈষম্য এশিয়ায় সামাজিক বিভাজন আনতে পারে : বিশ্বব্যাংক

| প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : এশিয়ার শহরগুলোয় ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ঝুঁকিপূর্ণ একটি সামাজিক বিভাজন ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি শহুরে দরিদ্রদের জন্য আরো বেশি উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য সরকারগুলোকে আহŸান জানায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্ধেক অধিবাসী শহরে থাকে এবং দ্রæত নগরায়ণ-এর ৬৫ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করেছে বলেও এক নতুন প্রতিবেদনে জানায় বিশ্বব্যাংক। গোটা দুনিয়ার শহুরে জনগোষ্ঠীর তিন ভাগের এক ভাগ বা ১২০ কোটি মানুষ এ অঞ্চলে বসবাস করে এবং তা বছরে ৩ শতাংশ হারে বাড়ছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ কোটি বস্তিতে থাকে। এর একটি বড় অংশ চীন, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে। বেশির ভাগ বস্তিতেই বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম সুবিধাও নেই। এ বসতিগুলোর অবস্থা ভয়াবহ। কম জায়গায় গাদাগাদি করে থাকা এ কলোনিগুলোয় পানি, বিদ্যুত্, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা শোচনীয়। প্রতিবেদনটিতে আরো উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিষয়ক পাঠগুলোয় বেশির ভাগ সময় শহর আর গ্রামের পার্থক্য নিয়ে আলোচনা হলেও শহরের ভেতরেই নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য একটি বড় সমস্যা। ইন্দোনেশিয়ার ইগোয়াকার্তা বস্তিতে মাথাপিছু আয় মাসে ৮২ মার্কিন ডলার, অন্যদিকে দেশটির আনুষ্ঠানিক খাতে এর পরিমাণ ২১৬ ডলার। জাকার্তার বস্তিগুলোর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা পানিদূষণ ও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়ানোর জন্য বড়সড় হুমকি। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, এ রকম এক বস্তিতে প্রতি এক হাজারের মধ্যে ৩৪২ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এবং অন্তত ৪৩ শতাংশ শিশু কোনো না কোনো রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত। ইন্দোনেশিয়ার শতকরা ২৭ ভাগ শহুরে মানুষ স্যানিটেশন সুবিধা পায় না, ফিলিপাইনে এ হার ২১ ভাগ। বেশির ভাগ বস্তি এলাকার রাস্তাগুলো সরু থাকায় গণপরিবহন ব্যবস্থার অবস্থা শোচনীয়। তদুপরি জাকার্তাতে রিকশা ও চীনের উহানে ত্রিশওয়া (অতিরিক্ত আসনসহ রিকশা) নিষিদ্ধ করায় গরিব মানুষের খরচ আরো বেড়েছে। শহরগুলোর ট্রাফিক ব্যবস্থাও প্রাইভেট কার ও এর মালিক তথা ধনী ব্যক্তিদের সুবিধা মাথায় রেখে করা হয় বলেও জানানো হয়। মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোরে অপ্রতুল জনপরিবহন ব্যবস্থার কারণে নিম্ন আয়ের অনেক মানুষকে তাদের আয়ের শতকরা ৩৬ ভাগ যাতায়াতের জন্যই খরচ করতে হয়। ব্যাংকটির পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক্টোরিয়া কোওয়াকওয়া বলেন, গ্রাম থেকে শহরে আসার পর বেশির ভাগ মানুষ মৌলিক সুবিধাগুলোও পায় না, যা শহরের ধনী ও গরীবদের পার্থক্য বাড়াচ্ছে। প্রতিবেদনটির প্রধান গবেষক ও ব্যাংকটির নগর বিশেষজ্ঞ জুডি বেকার বলেন, ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের ফলে যে সামাজিক বৈষম্য হচ্ছে, সেটি শহর অঞ্চলের জন্য বেশি বিপজ্জনক, কারণ বেশির ভাগ সময়ে বস্তিতে থাকা দরিদ্রদের ঠিক পাশেই ধনীরা বসবাস করে। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের অবস্থা দুনিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি করেছে। বিশ্বব্যাংক জানায়, সরকারগুলোর উচিত তাদের নীতিমালা পুনর্নির্ধারণ করা, যাতে শহুরে দরিদ্ররা আরো বেশি বেতন ও নিরাপদ চাকরির পাশাপাশি সুযোগ-সুবিধা পায়। এএফপি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বৈষম্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ