নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে তিনশ পেরিয়ে বাংলাদেশ, উচ্ছ¡াসের গল্পই শোনায়। দ্বিতীয় দিনে এসেই সেটি রূপ নিয়েছে হাতাশায়। সেটিও আবার অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের বদৌলতে। সিরিজের প্রথম টেস্টে মিরপুরে যেখানে রাজত্ব করেছিল বোলারা, সেখানে চট্টগ্রাম টেস্টে এসেই ভোল পাল্টেছে উইকেট! সেই হতাশা আরেকটু বাড়িয়েছেন দু’বার জীবন পাওয়া ওয়ার্নার। দ্বিতীয় দিনের পোস্টমর্টেম করতে এসে এমন উচ্ছ¡াস মেশানো হাতাশার গল্পই শোনালেন নাসির হোসেন।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩০৫ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন সকালেই মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং। ৬২ রানে দিন শুরু করা মুশফিক ফিরেছেন শুরুতেই, আর মাত্র ৬ রান যোগ করে (৬৮) পরিনত লায়নের আরেক শিকারে। ১৯ রানে থাকা নাসিরও দেখাচ্ছিলেন ব্যাটে ঝলক। তবে ফিরেছের ফিফটির খুব কাছ থেকে, ৪৫ করে। বলের হিসেবে ভালোই খেলছিলেন মিরাজও, তবে সঙ্গীর অভাবে ৫৮ বলে ১১ রানেই থেমেছেন এই অলরাউন্ডারও। তাইজুলের ব্যাট থেকে এলো ৯ রান। সব মিলিয়ে কোনো রকমে তিনশ ছাড়িয়েই শেষ বাংলাদেশ। শেষ চার উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দিন সকালে আর মাত্র ৫২ রান যোগ করতে পেরেছে দল। এটিই নাসিরের হতাশার মূল কারণ, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করছি, যে ধরনের উইকেট তাতে আমরা একশ থেকে দেড়শ রান কম করেছি। প্রথম ইনিংসে আমাদের চারশ থেকে সাড়ে চারশ রান করা উচিত ছিল।’ যে উইকেটে স্বচ্ছন্দ ব্যাটিং করে গেছেন ওয়ার্নার-স্মিথ-হ্যান্ডসকম্বরা সেখানে নিজেদের ব্যর্থকার কারণ হিসেবে কোন অজুহাতই দাঁড় করাতে চাননি দুই বছর পর টেস্টে ফেরা এই অলরাউন্ডার, ‘চেষ্টা ছিল কমপক্ষে লাঞ্চ পর্যন্ত ব্যাটিং করার। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, অপরপ্রান্তে থাকা মিরাজের সঙ্গে একটা দারুণ জুটি গড়েছিলাম। আসলে আমরা দুজনই ছিলাম শেষ ব্যাটিং জুটি। আমরা যত রান করব, শেষ পর্যন্ত সেটাই দলের জন্য উপকার হবে। তবে তা আর হয়ে ওঠেনি। আসলে আমরাই পারিনি।’ তবে দিন শেষে বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখছেন নাসির, ‘এ মুহূর্তে আমরা ৮০ রানে এগিয়ে আছি। তবে এটাও ঠিক যে আমরা তেমন উইকেট নিতে পারিনি। সেক্ষেত্রে আমি বলব, আমরা কিছুটা ব্যাকফুটে আছি। তবে টেস্ট ক্রিকেট আপনি আগ থেকে কিছু বলতে পারেন না। একটা সেশন কিংবা, একটা ঘন্টা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। আমরা সেই প্রত্যাশাতেই আছি।’
দুটি জীবন পাওয়া ওয়ার্নারই এখন সবচেয়ে বড় কাঁটা হয়ে আছেন বাংলাদেশের। প্রসঙ্গটি টেনে প্রশ্ন উঠেছিল নিজেদের ফিল্ডিং এবং উইকেট কিপিং নিয়েও। অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের যেভাবে সামলেছেন এ ব্যপারটিও নাসির সামলালেন দক্ষ হাতে, ‘সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে অবশ্যই ভালো হতো। আপনি যদি দেখেন, ক্যাচটা (মুমিনুলের) আসলে ফিফটি-ফিফটি চান্স। এ ধরনের ক্যাচ আসলে ধরাটা একটু কঠিন। আর স্ট্যাম্পিংয়ের কথা যদি বলেন, তাহলেও সেটা ফিফটি-ফিফটি ছিল। কারণ, বলটা মাটিতে পড়ে অনেক নীচু হয়ে গিয়েছিল। এ ধরনের বল ধরে স্ট্যাম্পিং করাও খুব সহজ না।’
তারপরও আশায় বুক বাঁধছেন টেস্টকে ৫ দিনে নেয়ার, স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশকে জেতানোর। স্বপ্ন দেখার মূল ভরসা হিসেবে কাজ করছেন মুস্তাফিজ-সাকিব-তাইজুল-মিরাজদের বোলিং, ‘মিরপুরে উইকেটে ভালো সাহায্য পেয়েছিল স্পিনাররা। এখানে তারা তেমন বাউন্স কিংবা, টার্ন পাচ্ছে না। বিশেষ করে স্ট্যাম্পের ওপর বল টার্ন করছে না। স্ট্যাম্পের বাইরে যেসব জায়গা রাফ হয়ে গেছে, সেখান থেকে কিছু টার্ন পাচ্ছে। যদি স্ট্যাম্পের বল টার্ন করতো তাহলে আমাদের সুবিধা হতো। তারপরও আমাদের বোলাররা ভালো বোলিং করেছে। যদি খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন, ওয়ার্নার কিন্তু সাধারণত এত ¯েøা ব্যাটিং করে না। তার মানে, আমরা ভালো বল করেছি। কিন্তু দুভার্গ্যজনক ওদের তেমন উইকেট পড়েনি। প্যাট কামিন্স ভালো বোলিং করলেও, সে কিন্তু একটা উইকেটও পায়নি। সেখানে মুস্তাফিজ একটা উইকেট পেয়েছে। তাছাড়া এ ধরনের উইকেটে বোলিং করা একটু কঠিন। বল তেমন বাউন্স কিংবা, পেসে আসছে না। তাই এখানে পেসারদের মোকাবেলা করতে যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়।’
সেয়ানে সেয়ানে লড়াইয়ের চট্টগ্রাম টেস্টটি ৫ দিনে গড়াবে বিশ্বাস নাসিরের, ‘টেস্ট ক্রিকেটের যে ধরন তাতে যেকোন মুহূর্তে ম্যাচের পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। ম্যাচের ফল আজ হবে না, কিংবা কাল দুই-তিন দিনেও হবে না। এই ম্যাচ পুরো পাঁচ দিনই গড়াবে। তবে এসব নিয়ে এখনই চিন্তা করছি না। আমাদের হাতে যা করার আছে, তাই করতে হবে।’
স্কোর কার্ড
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া, ২য় টেস্ট (২য় দিন)
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম ২০১৭
টস : বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: (১ম দিন শেষে ২৫৩/৬)
রান বল ৪ ৬
মুশফিক ব লায়ন ৬৮ ১৬৬ ৫ ০
সাব্বির স্টা. ওয়েড ব লায়ন ৬৬ ১১৩ ৬ ১
নাসির ক ওয়েড ব আগার ৪৫ ৯৭ ৫ ০
মিরাজ রান আউট (ওয়ার্নার) ১১ ৪৫ ০ ০
তাইজুল ক স্মিথ ব লায়ন ৯ ১২ ০ ১
মুস্তাফিজ অপরাজিত ০ ৭ ০ ০
অতিরিক্ত (বা. ৫) ৫
মোট (১১৩.২ ওভার, অল আউট) ৩০৫
বোলিং : কামিন্স ২২-৫-৪৬-০, লায়ন ৩৬.২-৭-৯৪-৭, ও’কিফে ২৩-০-৭৯-০, আগার ২৩-৯-৫২-২, ম্যাক্সওয়েল ৪-০-১৩-০, কার্টরাইট ৫-১-১৬-০।
উইকেট পতন : ১-১৩ (তামিম), ২-২১ (ইমরুল), ৩-৭০ (সৌম্য), ৪-৮৫ (মুমিনুল), ৫-১১৭ (সাকিব), ৬-২২২ (সাব্বির), ৭-২৬৫ (মুশফিক), ৮-২৯৩ (নাসির), ৯-২৯৬ (মিরাজ), ১০-৩০৫ (তাইজুল)।
অস্ট্রেলিয়া ইনিংস রান বল ৪ ৬
রেনশ ক মুশফিক ব মুস্তাফিজ ৪ ৭ ১ ০
ওয়ার্নান অপরাজিত ৮৮ ১৭০ ৪ ০
স্মিথ ব তাইজুল ৫৮ ৯৪ ৮ ০
হ্যান্ডসকম্ব অপরাজিত ৬৯ ১১৩ ৫ ০
অতিরিক্ত (বা ৪, লে বা ২) ৬
মোট (৬৪ ওভার, ২ উইকেট) ২২৫
বোলিং : মিরাজ ২০-২-৫৩-০, মুস্তাফিজ ১০-০-৪৫-১, সাকিব ১৫-০-৫২-০, তাইজুল ১৫-১-৫০-১, নাসির ১-০-৪-০, মুমিনুল ২-০-৬-০, সাব্বির ১-০-৯-০।
উইকেট পতন : ১-৫ (রেনশ), ২-৯৮ (স্মিথ)।
*২য় দিন শেষে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।