বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঈদুল আযাহ টিসিবি’র কার্যক্রম মাত্র ৪ দিন
খুলনাঞ্চলে মোটা চালের বাজারে আগুন। চাল আমদানীতে ১০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের আশায় এ অঞ্চলের স্থল বন্দর দু’টিতে প্রায় চারশ ট্রাক কৃত্রিম সংকট তৈরী করে আটকে আছে। চালের অগ্নি মূল্যে এ অঞ্চলের নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা হাপিয়ে উঠেছে। আর পেঁয়াজের ঝাঁঝে বাজার ঝাঁঝলো। গতবারের ২০ টাকার পেয়াজ এখন খুচরা বাজারে ৬০ টাকা কেজি। খোদ খুলনা নগরীর ২৬টি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ খুবই কম। খুলনার কদমতলায় স্থানীয় আড়তগুলোতে ফরিদপুর, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া থেকে পেঁয়াজ আসছে। তাও প্রয়োজনের তুলনায় কম।
সূত্রমতে, বৃহত্তর খুলনাঞ্চল মূলত এক ফসলী অঞ্চল বলে খ্যাত। এখন কৃষক ব্যস্ত আমন রোপনে। চাষীরা গত এক মাস ধরে চাষাবাদ ও রোপনে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োগ করেছে। আর ঠিক সেই মুহুর্তে মোটা চালের দাম গত বছরের তুলনায় দ্বিগুন। ৩৬ টাকার মোটা চাল এখন ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য চাল ৫৫ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি হচ্ছে। ধান চালের এবারের এই অগ্নি মূল্য এ অঞ্চলের রেকর্ড। গত এক সপ্তাহে দু’টি স্থল বন্দর দিয়ে প্রায় ১৩ হাজার মে:টন চাল আমদানী হলেও শুল্ক প্রত্যাহারের আশায় বর্তমানে শত শত ট্রাক বোঝাই আমাদানীকৃত চাল খালাসের অপেক্ষায় আটকে আছে। লাভের আশায় আমদানীকারকরা চাল খালাস বন্ধ রেখেছে। চাল আমদানীতে শুল্ক হার ২৮ শতাংশ থেকে নামিয়ে ১০ শতাংশে আনায় চাল আমদানী বেড়ে যায়। গত বুধবার মন্ত্রণালয় চাল আমাদানীতে শুল্ক হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমদানীকারকরা তাদের চাল খালাস করছে না। তারা ঘোষণার এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাইছে। ফলে বন্দরগুলোতে আমাদানীকৃত চালের মজুদ থাকলেও বাজারে তার প্রভাব পড়ছেনা। আর চালের দামও কমছে না।
এদিকে সাতক্ষীরার ভোমরা শুল্ক স্টেশন দিয়ে শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য পরিমনা পেঁয়াজ আসেনি। হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ এসেছে সামান্য পরিমান। স্থানীয় বাজারে চাহিদার তুলনায় মাত্র ৭০ শতাংশ সরবরাহ হচ্ছে। পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গেল বছরের আগস্টে প্রতি কেজি আমদানিকৃত পেঁয়াজের মূল্য ২০-২২ টাকা আর দেশি পেঁয়াজের মূল্য ছিল ৩০-৩২ টাকা।
এদিকে, ঈদুল আযহা উপলক্ষে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্যক্রম নেই বললেই চলে। কেননা পণ্য বিক্রির জন্য মাত্র ৪ দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তাও খুলনায় টিসিবি’র রমজান মাসের বিতরণহীন মজুদ পণ্য দিয়েই চলবে এ কার্যক্রম। নতুন বরাদ্দে খুলনায় টিসিবি’র গুদামে জমা রয়েছে ১৫ মেট্রিক টন ডাল। এই ঈদে টিসিবি’র পণ্য কতটুকু জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাবে তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে চলতি মাসের ২৭ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে বলে জানা গেছে। কিন্তু আসন্ন ঈদুল আযহায় কী পরিমাণ পণ্য জনসাধারণের মাঝে বিক্রি করা হবে তার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তাছাড়া টিসিবি এবার ন্যায্য মূলে পেঁয়াজ সরবরাহ করছে না। ফলে কোরবানীর ঈদের আগে আর এক দফা পেঁয়াজের দাম বাড়তে পারে।
টিসিবি খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের অফিস প্রধান মোঃ রবিউল মোর্শেদ বলেন, রমজান মাসের মজুদকৃত পণ্য আসন্ন কোরবানির ঈদে জনসাধারণের মাঝে বিক্রি করা হবে। ঈদে নতুন করে খুলনার জন্য ডাল বরাদ্দ দিয়েছে। আর যে পণ্য মজুদ রয়েছে তা ৪ দিনের কর্মসূচির জন্য ঘাটতি হবে না বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা। তবে ৪ দিনের কর্মসূচিতে পণ্য বিক্রির জন্য ৫টি ট্রাক সেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ট্রাক সেলের অগ্রাধিকার থাকবে। তাছাড়া নতুন করে খুলনার জন্য কোন পণ্য আসার সম্ভাবনা নেই খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ে। এদিকে টিসিবি পণ্য বিক্রির সময় টিসিবি কর্মকর্তাদের মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
স্থানীয় পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাজ ট্রেডিংয়ের ব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, এক সপ্তাহ ধরে নগরীর কদমতলা পাইকারি বাজারে আমদানিকৃত পেঁয়াজ আসছে তুলনা মুলক কম। আর যা আসছে দামও বেশি। ক্রমেই এ অঞ্চলে পেঁয়াজের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
নগরীর মোকামে ফরিদপুরের পাংশা উপজেলার বিতরাঙ্গা গ্রাম থেকে আসা ফড়িয়া মোয়াজ্জেম মল্লিক জানান, সে অঞ্চলের কৃষকের ঘরে দেশি পেঁয়াজের মজুদ কমে এসেছে। পাংশা ও তার আশপাশের এলাকায় চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে জানা গেছে, আঞ্চলিক কার্যালয়ের নিবন্ধিত ৪৮২ জন ডিলার ও টিসিবি’র নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে এ পণ্য জনসাধারণের মাঝে বিক্রি করা হবে। কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য চিনি গুদামে মজুদ রয়েছে ১০ মেট্রিক টন, সয়াবিন তেল মজুদ ৫০ হাজার লিটার। এছাড়া মসুরির ডাল মজুদ রয়েছে ১৮০ মেট্রিক টন। তার সাথে নতুন করে গত ১৩ আগস্ট ১৫ মেট্রিক টন ডাল খুলনার টিসিবি গুদামে যুক্ত হয়েছে। ফলে গুদামে মজুদকৃত অন্য পণ্যদ্বয়ের তুলনায় ডালের পরিমাণ তিনগুণেরও বেশি। এদিকে আসন্ন কোরবানির ঈদে মসুরির ডালের মূল্য পূর্বের দামের চেয়ে কমতে পারে বলেও জানা গেছে। মহানগরীর ৫টি পয়েন্টে ট্রাক সেলের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ করা হবে। পয়েন্টগুলো হলো- ময়লাপোতা মোড়, জেলাপ্রশাসকের কার্যালয়, নিউমার্কেট, বয়রা বাজার ও দৌলতপুর নতুন রাস্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।