নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে মিরপুরে তখন চলছিল বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি ম্যাচ। ড্রেসিংরুমের সামনে সীমানাদড়ির কাছে দাঁড়িয়ে ছাত্রদের প্রস্তুতি দেখছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, কোর্টনি ওয়ালশ ও মারিও ভিল্লাভারায়ন। হঠাৎ সেখানে হাজির আরেকজন। তাকে দেখে সহাস্যে বুকে জড়ালেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। হাত বাড়িয়ে দিলেন কোর্টনি ওয়ালশ। ছুটে এসে বুকে বুক মেলালেন ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন। এসে গেছেন চম্পকা রামানায়েকে!
কিছুদিন আগেই বিসিবি জানিয়েছিল চম্পকাকে নিয়োগ দেওয়ার খবর। সেই খবর সত্যি করে বেলা ১১টায় এসেছেন ঢাকায়। দুপুরেই চলে এসেছেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশে তাঁর দ্বিতীয় অধ্যায়ের শুরুতেই পরিচিত হলেন বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফের সঙ্গে। না, এবার জাতীয় দলের বোলিং কোচের দায়িত্বে নয়, চম্পকা বাংলাদেশে এসেছেন বিসিবির হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) দলের বোলিং কোচ হিসেবে। শ্রীলঙ্কার সাবেক এই বোলিং কোচ অবশ্য জাতীয় দলের পেসারদেরও সাহায্য করবেন। প্রথম দিনেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ব্যাখ্যা করলেন তার দায়িত্ব, ‘উঠতি ক্রিকেটারদের হাই পারফরম্যান্স ফাস্ট বোলিং কোচ হিসেবে থাকছি। আগের বার কয়েক মাস একাডেমিতে কাজ করে পরে জাতীয় দলে কাজ করেছি। এবার তরুণদের নিয়ে কাজ করব। সঙ্গে হয়ত যারা জাতীয় দল থেকে বাদ পড়বে বা ‘এ’ দলে থাকবে এমন ক্রিকেটারদের নিয়ে।’
বাংলাদেশ দলের পেস আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করতে পাইপলাইন আরও সমৃদ্ধ থাকতে হবে- এ ভাবনাতেই চম্পকাকে এইচপি বোলারদের দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি। শ্রীলঙ্কার সাবেক এই পেসার তাই জানালেন, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিভাবান পেসারদের খুঁজে তাঁদের জাতীয় দলের জন্য তৈরি করাই হবে তাঁর কাজ, ‘(আগেরবারের তুলনায়) পার্থক্য বলতে, অনেক তরুণ আছে যাদের অনেককে আগে দেখিনি। তাদের ভালোভাবে চিনতে হবে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁচা প্রতিভা খুঁজে বের করতে হবে। এই দেশে ক্রিকেট এখন প্রধান খেলা। তাই অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় থাকবে। আমি সেই প্রতিভাবানদের খুঁজে বের করার অপেক্ষায়।’
আগের মেয়াদে এভাবেই চম্পকা উপহার দিয়েছিলেন রুবেল হোসেনকে। এখন অভিজ্ঞ রুবেলকে দেখে খুঁজে পান তৃপ্তি। কোচ হিসেবে আগের মেয়াদে চম্পকা বারবার বলতেন, কারও সহজাত ব্যাপারগুলি বদলে দিতে চান না তিনি। ¯্রফে আরও শাণিত করে তুলতে চান। জানালেন তার কোচিং দর্শন পাল্টায়নি এখনও, ‘সহজাত সামর্থ্যে খুব বেশি বদল আনা উচিত নয়। এটিই আমার দর্শন। শ্রীলঙ্কায় অনেক ক্রিকেটারই উঠে আসে তাদের সহজাত প্রতিভার কারণে। অনেকে চায় অনেক কিছু বদলে দিতে, তাতে সহজাত সামর্থ্য হারিয়ে যায়। জগতে সবাই আলাদা, তাদেরকে আলাদাভাবেই সামলাতে হয়।’
প্রথমবার যখন বোলিং কোচ ছিলেন চম্পকার কাজে খুশি ছিল সবাই। মেয়াদ বাড়াতেও চেয়েছিল বোর্ড। কিন্তু কাজে সফল চম্পকা স্বাভাবিকভাবেই নতুন মেয়াদে চাইছিলেন একটু বেশি পারিশ্রমিক। সেটি নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় দেশে ফিরে যান ২০১০ সালে।
এর পর থেকে বোলিং কোচ হিসেবে তার ভাবমূর্তি ভালো হয়েছে আরও, বেড়েছে খ্যাতি। কিছুদিন আগে বোর্ড প্রধানকে তার কথা আবারও বলেন জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা। এরপর থেকেই মূলত তাকে ফেরাতে চাইছিল বিসিবি। এবার তাই চাহিদা পূরণ করেই আনা হয়েছে তাকে। তার প্রতি প্রত্যাশাও তাই আকাশচুম্বি। সেটি জানেন চম্পকাও।
আপাতত দু বছরের জন্য পেয়েছেন দায়িত্ব। উঠতি ক্রিকেটারদের পাশাপাশি প্রয়োজনে কাজ করবেন জাতীয় দলের পেসারদের সঙ্গেও। কাজ করতে হবে তাই ওয়ালশের সঙ্গে মিলেও। সেটি নিয়েও বেশ রোমাঞ্চিত চম্পকা, ‘সে তো জিনিয়াস। আমার সময়কার ক্রিকেটার, পাঁচশর বেশি উইকেট নিয়েছে। মানুষ হিসেবেও দারুণ। তার সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছি।’
আপাতত তাঁর চুক্তি ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। সব যদি ঠিক পথে থাকে, ওয়ালশ ও চম্পকার হাত ধরে বাংলাদেশে পেস বোলিংয়ে আরও সুসসময় আসছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।