পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান বলেছেন, ইসরায়েল জেরুজালেম নগরীর ইসলামি চরিত্র বদলে দিতে চাইছে। তারা মুসলমানদের বিভক্তির সুযোগ নিচ্ছে। তবে ইসলামের পবিত্র স্থাপনাগুলো রক্ষা করা শুধু ফিলিস্তিনিদের দায়িত্ব নয়, এটা পুরো মুসলিম উম্মাহ’র দায়িত্ব। আমরা অবশ্যই মুসলিমদের জন্য আল আকসা মসজিদের দরজা বন্ধ করতে দেবো না। গত বুধবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় ওয়ার্ল্ড ইসলামিক কংগ্রেস-এ দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। ভাষণে ইসরায়েলকে মানবাধিকার এবং জেরুজালেমের প্রচলিত রীতিনীতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহŸান জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, আল-আকসা মসজিদের প্রবেশপথ থেকে ইসরায়েলি মেটাল ডিটেক্টর সরিয়ে নেওয়া একটা সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে এটা যথেষ্ট নয়। এ অঞ্চলে আগুন ছড়িয়ে দেয়-এমন যে কোনও নীতি গ্রহণ থেকে ইসরায়েলকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
একইদিন আঙ্কারায় তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমন্ট পার্টির বৈঠকেও আল-আকসা মসজিদ নিয়ে কথা বলেন এরদোগান। তিনি বলেন, আল-আকসায় নামাজ পড়তে যাওয়া মুসলিমদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। নামাজ আদায়ে বিধিনিষেধ তুরস্ক সহ্য করতে পারে না।
রজব তাইয়্যেব এরদোগান বলেন, সবাই জানে ইসরায়েল শুধু নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেয়নি। তারা মুসলিমদের কাছ থেকে আল-আকসা ছিনিয়ে নিতে চায়। আমি সব মুসলিমদের বলতে চাই, যাদের সুযোগ আছে তারা জেরুজালেমে আসুন। সবাই মিলে এ মসজিদ রক্ষা করতে হবে।
এর আগে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায়ে ইসরায়েলি বিধিনিষেধ এবং মুসল্লিদের ওপর ইহুদিবাদী তাÐবের নিন্দা জানিয়েছে তুরস্কের পার্লামেন্ট। গত সোমবার তুর্কি পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে ইসরায়েলি আচরণের তীব্র সমালোচনা করেন দেশটির এমপিরা।
তুর্কি পার্লামেন্টের স্পিকার ইসমাঈল কাহরামান বলেন, ইসরায়েল মানবাধিকার ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার ওপর আঘাত করেছে। এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। ফিলিস্তিনি ভাইদের ব্যাপারে আরও সংবেদনশীল হওয়ার জন্য বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহŸান জানাচ্ছি।
পার্লামেন্টের আলোচনায় অংশ নিয়ে একই রকম প্রতিক্রিয়া জানান ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি এবং বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির এমপিরা। এসময় তারা ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের প্রতি প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতি নিজেদের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায়ে প্রায় মাসখানেক ধরে ইসরায়েলি বিধিনিষেধের কবলে পড়ছেন মুসল্লিরা। গত শুক্রবার জুমআহ নামাজের পর ইসরায়েলি বাহিনী ও অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় হতাহত হন অর্ধসহস্রাধিক ফিলিস্তিনি। এর ক’দিন আগে আল-আকসা মসজিদের ইমাম ইসরায়েলি বাহিনীর তাÐবে আহত হন। ৪৮ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মসজিদটিতে জুমার নামাজ আদায় নিষিদ্ধ করে দখলদার বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থানের জানান দেয় তুরস্ক।
১৯৬৭ সালে যখন ইসরায়েল এই এলাকায় প্রবেশাধিকার পায় তখন শুধু মুসলিমরাই আল-আকসায় নামাজ পড়তে পারতো। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় প্রার্থনার সুযোগ পেত ইহুদিরা। মেনে চলতে হতো অনেক নিয়ম। বিগত ৫০ বছরে এই চিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছে। ইসরায়েল এখন আল-আকসার ওপর পূর্ণ দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গত ২০ জুলাই আল-আকসা মসজিদে প্রবেশে ইসরায়েলি বিধিনিষেধ নিয়ে কথা বলেন ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গিলাদ এরদান। ইসরায়েলি আর্মি রেডিও’কে তিনি বলেন, আল-আকসায় প্রবেশে যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে; গত এক সপ্তাহে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে কোনও প্রতিবাদ এমনকি কোনও নিন্দাও আসেনি। সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।