নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইমরান মাহমুদ : বাংলাদেশের ক্রিকেট আর মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম যেন এক সুঁতোয়া গাথা। শুধু বাংলাদেশের না বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত স্টেডিয়ামগুলোর একটি মিরপুরের এই হোম অব ক্রিকেট। টাইগারদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সিরিজসহ ঘরোয়া খেলা থাকায় বছরের প্রায় সব সময়ই ক্রিকেটারদের পদচারণায় মুখরিত থাকে ক্রিকেটের এই প্রাণ কেন্দ্রটি। তবে গেল মাস কয়েক ধরে অনেকটাই নির্জিব শেরে বাংলা স্টেডিয়াম। চলতি বছর ফেব্রæয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই চলছে আউটফিল্ডের সংস্কার ও পরিচর্যার কাজ। পুরোপুরি শেষ না হলেও এরই মধ্যে অনেকটাই গুছিয়ে এনেছে সংস্কার কাজ।
আউটফিল্ড এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য মাঠের উপরিভাগ থেকে ছয় ইঞ্চির মতো মাটি তুলে ফেলা হয়েছে। মাঠের নিচ দিয়ে যেসব পাইপ বৃষ্টির পানি বাইরে সরিয়ে দেয় সেগুলো পরিষ্কার ও প্রয়োজনে মেরামত করে নতুন করে ফেলা হবে বালু মাটি (সিলেট স্যান্ড)। তার ওপর লাগানো হবে বারমুডা ঘাস। গঠন কাঠামো অনুযায়ী শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের তলার অংশে ৭৫ মিমি ঘনত্বে ছড়ানো আছে পাথর কণা। এর ওপর আরও ৭৫ মিমি ঘনত্ব নিয়ে আছে বালি ও মাটির (সিলেট ও অরগানিক স্যান্ড) স্তর।
এবার আউটফিল্ডের কাজে হাত দেওয়ার আগে নতুন করে কালো মাটি ফেলা হয়েছে উইকেটেও। পুরোনো মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে দুই ইঞ্চির মতো। বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির ম্যানেজার সৈয়দ আবদুল বাতেন জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার ল্যাবোস্পোর্ট নামে একটি পরামর্শ দাতা প্রতিষ্ঠানের পরামর্শে নিয়ে চলছে মাঠ উন্নয়নের কাজ। বিসিবির হয়ে কাজটি করছে অনীক ট্রেডার্স নামে স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আজকের শেরে বাংলার অবস্থা হলো- ঘাস লাগানো শেষে মাঠের ৩০ গজে নতুন সবুজ মিহি দূর্বা ঘাস গজাতে শুরু করেছে। বিসিবি পরিচালক ও গ্রাউন্ডস কমিটি চেয়ারম্যান হানিফ ভুঁইয়া জানালেন, ‘আমরা হুট করেই কাজে হাত দেইনি। একটা সুদুরপ্রসারি লক্ষ্য ও পরিকল্পনায় মাঠের কাজ শুরু করেছি। কাজ শুরুর পর আমরা স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগিয়েছি এবং সবচেয়ে বড় কথা, এই প্রথম দেশি দূর্বা ঘাসের ব্যবহার করা হয়েছে মিরপুর স্টেডিয়ামে।’
অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞ পরিকল্পনা জমা দেয়ার আগে স্থানীয় মাঠ পরিচর্যা ও সংস্কার নির্মাতা এক প্রতিষ্ঠান এই কাজে সাড়ে চার কোটি টাকা মূল্য হাঁকিয়ে বসেছিল; কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিন ভাগের এক ভাগ অর্থে এ কাজ সম্পাদিত হচ্ছে। কিছু দিন আগেও কক্সবাজার স্টেডিয়ামে ঘাস লাগানো বাবদ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ২২ লাখ টাকা খরচ দেখিয়েছে। আর শেরে বাংলার বিশাল আউটফিল্ডে ঘাস লাগাতে কোন বাড়তি অর্থই খরচ হয়নি বলতে গেলে। এবার অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড কিংবা ভারতীয় ঘাস নয়, কোটি টাকা সাশ্রয় করে লাগানো হয়েছে দেশী ঘাস। রাজধানীর রায়ের বাজার এলাকা থেকে আনা ঘাসের উপর এবার হবে আর্ন্তজাতিক ম্যাচ। বিসিবি গ্রাউন্ডস কমিটি প্রধান জানালেন, ‘সব মিলিয়ে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার মত খরচ হচ্ছে।’
এখন পর্যন্ত ১৫টি টেস্ট, ৯৮টি ওয়ানডে ও ৩৬টি টি-টোয়েন্টি হয়েছে এই মাঠে। গত ২০১১ বিশ্বকাপের আগে সংস্কার করা হয়েছিলো গ্যালারীসহ মাঠের ড্রেনেজ ব্যবস্থার। আর তাতেই হয়েছে হিতে বিপরীত। মাঠের ঘাস সম্পূর্ণ না সরিয়ে কাজ করায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার অনেক ক্ষতি হয়েছে। ২০১৭ সালে টাইগারদের অধিকাংশ খেলা দেশের বাইরে হওয়ায় মিরপুর স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজ শুরু করেছিল বিসিবি। মাঠের ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারের তত্ত¡াবধানে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞ কিউরেটর কিথ।
এমনই এক নতুন মিরপুরে নতুন করে শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের যাত্রা। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আগামী ১৮ আগস্ট ঢাকায় আসার কথা অস্ট্রেলিয়ার। এই সিরিজ শেষেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাবে বাংলাদেশ। টাইগারদের সামনে তাই কঠিন পরীক্ষা। যে পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাচ্ছে আজ থেকে, কন্ডিশনিং ক্যাম্প দিয়ে। এদিন সকাল ৯টায় জাতীয় দলের ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়েনের তত্ত¡াবধানে শুরু হবে ক্যাম্প। প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ছুটিতে থাকায় ভিল্লাভারায়েনের কাঁধেই আপাতত ক্যাম্পের দায়িত্ব। ২৮ জুলাই হাথুরুসিংহের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফেরার কথা। প্রধান কোচ ফেরার পরই অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করবেন নির্বাচকরা।
ঈদের আগে ২৯ ক্রিকেটারের নাম ঘোষণা করলেও আজ ক্যাম্পে যোগ দিচ্ছেন ২২ জন। তামিম ইকবাল টি-টোয়েন্টি বøাস্ট খেলতে ইংল্যান্ডে। অন্যদিকে লিটন দাস, এনামুল হক বিজয়, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আবুল হাসান ও তানভীর হায়দার এইচপি দলের সঙ্গে আছেন অস্ট্রেলিয়ায়। এছাড়া ইনজুরির কারণে এখনই ক্যাম্পে যোগ দিতে পারছেন না রুবেল হোসেন।
মিরপুরে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া প্রথম টেস্ট শুরু হবে ২৭ আগস্ট। ঈদুল আজহার পর দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ৪ সেপ্টেম্বর, চট্টগ্রামে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাবে টাইগাররা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।