Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মতলব-নারায়ণপুর-কালিকাপুর সড়কে অন্তহীন ভোগান্তি

| প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা : চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর-কালিকাপুর সড়ক অত্যন্ত ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ। পাশ্ববর্তী ল²ীপুর, গোবিন্দপুর, ডাটিকারা, চারটভাঙ্গা, তুলপাই, প্রসন্নকাপ, দৌলতপুর, হরিদাসপাড়াসহ আশেপাশের এলাকার প্রায় ৫০ সহগ্রাধিক মানুষসহ পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষ এ সড়ক দিয়েই নারায়ণপুর বাজার, উপজেলা, জেলা সদর এমনকি রাজধানীতে যাতায়াত করেন। এ এলাকার ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি হাইস্কুল, ১টি মাদ্রাসা, ১টি ডিগ্রি কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ছাড়াও অফিস আদালতের লোকজনের এ সড়কে চলাচল ছাড়া বিকল্প পথ নেই।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম আসলে সড়কটিতে যান চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের ফলে বৃষ্টির সময় যান চলাচল অনেকটা বন্ধ থাকে। বর্ষাকালে লোকজন কাদা মাড়িয়ে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্য দিয়েই চলাচল করছে। বর্ষায় রাস্তা খারাপের কারণে বয়স্ক পথচারী, রোগী নারী শিশুদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে নৌকা দিয়ে চলাচল করে অধিকাংশ মানুষ। সড়কটির দুই তৃতীয়াংশ কাঁচা হওয়ায় এতো খারাপ অবস্থা যে, স্বচোখে না দেখলে বুঝা যাবে না এর বাস্তব চিত্র। এসব কারণে স্থানীয় অভিভাবকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উদ্বিগ্ন অভিভাবক সেলিম আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে অথচ নারায়ণপুর ইউনিয়নে ছিটেফোঁটাও লাগলো না। বছরের পর বছর ধরে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে বারবার ধর্ণা দিয়েও কোনো সুফল মেলেনি। এতে সরকারেরই ভাবমূর্তি রক্ষা হচ্ছে না।’ অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে পাকা করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্যথায় আগামী নির্বাচনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য।’ সড়কে চলাচলকারী অটেরিক্সাচালক বশির মিয়া, আবদুল কাদের, ফখরুল ইসলাম, প্রবাসী আবদুল মুহিত ও কালিকাপুর বাজারের ডা. আবুল কাশেম বলেন, ‘প্রতিদিন সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে এ পথে যাতায়াত করতে হয়। এটিকে সড়ক না বলে চষাক্ষেত বললে ভুল হবে না।
মতলব দক্ষিণ উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন নারায়ণপুর। প্রায় ৩০ হাজার মানুষ অধ্যুষিত এ ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় গ্রাম কালিকাপুর। নারায়ণপুর ইউনিয়ন আগে চাঁদপুর-৩ সংসদীয় আসনের অন্তভুক্ত ছিলো। বর্তমান সরকারের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ ইউনিয়নকে চাঁদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করে নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায় নারায়ণপুরবাজার থেকে কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ৩ হাজার ২শ’ মিটার। গত কয়েক বছর আগে এ সড়কের মাত্র ৫শ’ মিটার রাস্তা পাকাকরণ করা হয়। বর্তমানে আরো ৫শ’ মিটার রাস্ত পাকা করণের কাজ চলছে। এখনো ২ হাজার ২শ’ মিটার রাস্তা কাঁচা রয়েছে।
নারায়ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মবিন সুজন জানান ২০১৫ সালে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম এমপি কালিকাপুরে স্প্রিডবোটযোগে এসেছিলেন। তিনি স্ব চোখে এ সড়কের দুরাবস্থা দেখেছেন।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জিএম মজিবুর রহমান জানান, মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যগণের ডিও লেটারের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে অনেক পাকা সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে, কিছু চলমান রয়েছে। বৃহত্তর কুমিল্লার ৩ জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রয়োজনীয় নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ওই প্রকল্পটি এলজিইডির সদর দপ্তর হয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালে জমা পড়েছে। একনেকে অনুমোদনের পর মন্ত্রী কিংবা সংসদ সদস্যগণের সুপারিশকৃত প্রকল্পগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভোগান্তি


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ