পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিজানুর রহমান তোতা : এ যেন জেনেশুনে বিষ পানের মতো। আবাদী জমি অল্প। ফসল উৎপাদন করতে হবে বেশী। এতে কার কি ক্ষতি হলো, এর ভবিষ্যতই বা কি, এর বাছবিচার করা হচ্ছে না। অতিমাত্রায় ব্যবহৃত হচ্ছে রাসায়নিক সার। অনন্তকাল যে জমি ফসল দিচ্ছে, দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে না তার ভবিষ্যত ফলাফলের দিকে।
যার ফলে আবাদী জমির সর্বনাশ ঘটছে নীরবে। একথা কৃষি বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীদের। তাদের কথা, দেশে অতীতের মতো জৈব সার ব্যবহারের পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। তাতে ফলনও হয় ভালো। নেই কোন পাশ্বপ্রতিক্রিয়া। কিন্তু উদ্যোগ নেই, নেই জোরদার কোন পরিকল্পনাও। রাসায়নিক সারের নির্ভরতায় কৃষকের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে মানব স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র। উদ্বেগজনকহারে হ্রাস পাচ্ছে জমির উর্বরতা শক্তি।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র জানায়, দেশে জৈব সার তৈরীরও বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে সরকারীভাবে জোরদার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। উদ্যোগ নেওয়া হলে দেশের সবখানে জৈব সার তৈরীর মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে নতুন বিপ্লব সৃষ্টি হতো। এতে সার আমদানীর জন্য কাড়ি কাড়ি টাকা ব্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেত দেশ। ফসল বৃদ্ধিতে একদিকে রাসায়নিক সার ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে ফসল রক্ষার্থে ব্যবহার হচ্ছে কীটনাশক। বিকল্পপন্থা বের করা হচ্ছে না। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের প্রোগ্রাম মুখ থুবড়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত মানুষ যেন সবজি বিষ খাচ্ছে। সুত্রমতে, দেশে আবাদী জমি বাড়ছে না, অথচ বাড়ছে জনসংখ্যা। খাদ্য চাহিদা মিটাতে তাই ফসল দ্রæত ও বেশী ফলনের জন্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে। এর বিপরীতে জৈব সারের ব্যবহার হলে মাটির ক্ষয়রোধ বিশেষ করে উপকারী পোকা-মাকড় ও কেঁচো যা প্রাকৃতিক লাঙ্গল হিসেবে পরিচিত তা ধ্বংসের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। কৃষি বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা সারাদেশে সরকারীভাবে জৈব সার তৈরীর প্রকল্প হাতে নেয়ার জন্য জোরালো পরামর্শ দিয়ে আসছেন বেশ আগে থেকেই। কিন্তু হচ্ছে হবে-এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট ও বিএডিসি’র দায়িত্বশীল একাধিক সুত্র জানায়, প্রতিবছর গড়ে সারা দেশে ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো, ৫৪ লাখ হেক্টর জমিতে রোপা আমনও আরো প্রায় ৩০ লাখ হেক্টর জমিতে রবিশস্য, পাট ও আউশ আবাদ হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে প্রতি বছর সরকারী ও বেসরকারীভাবে এমওপি সার ৪লাখ মেট্রিক টন, টিএসপি সার ৪ লাখ মেট্রিক টন, ডিএপি সার ১লাখ মেট্রিক টন ও ইউরিয়া ১৩ লাখ মেট্রিক টন সার আমদানী করতে হয় বিদেশ থেকে। আমদানীকারক, বিএফএ ও বিএডিসিসহ সংশ্লিষ্ট সুত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, সর্বসাকুল্যে বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার সার আমদানী করতে হয়। অথচ দেশের ৬৮ হাজার গ্রামে সিংহভাগই কৃষকের বসবাস। তাদের একটা অংশ যদি ঘর-গৃহস্থালীর আবর্জনা, কচুরীপনা, লতাপাতা ও গরু, ছাগল, মুরগী ও পশু-পাখীর মল পচিয়ে জৈব সার তৈরী করে, তাহলে জৈব সারের ঘাটতি অনায়াসেই সিংহভাগ পুরণ করা সম্ভব।
মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জৈব সার কৃষি উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখতে সক্ষম হবে। কৃষকরা বর্তমানে রাসায়নিক সারের জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে তার চেয়ে অনেক বেশী কম খরচ হবে জৈব সারে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কোন কোন কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় যশোর, ফরিদপুর, রংপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্বল্প পরিসরে জৈব সার তৈরী হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।