নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : ক্রিকেটের তিন সংস্করণে ব্যাটিংয়ের প্রায় সব রেকর্ড নিজের অধিকারে নিয়েছেন তামিম ইকবাল। গতকাল ওভালে আরেকটি রেকর্ড স্পর্শ করলেন বাঁহাতি ওপেনার। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার রেকর্ডটা ছিল শুধু শাহরিয়ার নাফীসের। তাঁর ১১ বছরের পুরোনো এই রেকর্ডে শুধু ভাগ বসিয়ে থামেননি তামিম, টপকে গেছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের হয়ে শাহরিয়ারের করা সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডও।
শুধু কি তাই? ব্যাটিংয়ে রেকর্ড গড়া এক দিনই কাটিয়েছে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরের (১২৮) রেকর্ড গড়েছেন তামিম। মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে গড়েছেন জুটির রেকর্ড (১৬৬)। দলীয় স্কোরের রেকর্ডও (৩০৫ রান) হয়েছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এত রান বাংলাদেশ কখনো করেনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০০-ই হলো প্রথম। এশিয়ার বাইরে কোনো দলকে ৩০০-র বেশি লক্ষ্যও দিল মাত্র দ্বিতীয়বার।
তবে সবকিছিুকে ছাপিয়ে দিনটি হয়ে রইলো তামীমময়। ইংল্যান্ডের সঙ্গে তামিমের ‘ভালোবাসার সম্পর্ক’ বেশ পুরোনো। ক্যারিয়ারের গৌরবোজ্জ্বল একট অধ্যায় রচনা করেছিলেন এখানেই, ২০১০ সালে। লর্ডসে অসাধারণ সেঞ্চুরির পর নজর কেড়েছিলেন আকাশ ছোঁয়া লাফের সেই উদযাপনেও। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পরের টেস্টেও আরেকটি অসাধারণ সেঞ্চুরি। এবার সেই ইংল্যান্ডেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি।
সেবার ইংল্যান্ড সফরের আগেও ইংলিশদের বেশ ভুগিয়েছিলেন তামিম। দেশে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ঝড় তুলেছিলেন। তবে দুবার আশি ও আরেকবার পঞ্চাশ পেরিয়েও সেঞ্চুরি পাননি, যেটি পান ওয়ানডেতে। মিরপুরে করেছিলেন ১২০ বলে ১২৫। সেটির পর আরও ১০ বার ব্যাট করেছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে। পঞ্চাশও ছুঁতে পারেননি। সব হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে নিলেন ইংল্যান্ডের মাটিতেই। ঘোচালেন একটি আক্ষেপও। এর আগে তিনটি বিশ্বকাপ ও তিনটি এশিয়া কাপ খেললেও ওয়ানডের বড় আসরে কোনো সেঞ্চুরি ছিল না তামিমের। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম ম্যাচেই দারুণ সেঞ্চুরি করে সেই অপেক্ষার অবসান। সেঞ্চুরির পর ছক্কা মেরেছেন মইন ও উডকে। ছাড়িয়ে গেছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের সর্বোচ্চ ১২৫ রানকে। একটু ক্লান্তি ভর করেছিল শেষ দিকে। প্লাঙ্কেটের বলে পুল করে আউট হলেন ১২৮ রানে। ৩ ছক্কার পাশে মেরেছেন ১২টি চার।
গতকালের ইনিংসের আগে আইসিসির ওয়ানডে টুর্নামেন্ট মানে যেন একটা অভিশাপ ছিল তামিমের জন্য। ২০০৭ বিশ্বকাপ ফিফটি দিয়ে শুরু করেছিলেন। পুরো টুর্নামেন্টে সেবার ৪০-এর কোটাই আর পেরোতে পারলেন না। ২০১১ বিশ্বকাপও শুরু করেছিলেন ফিফটি দিয়ে। সেবারও প্রতিপক্ষ ভারত। কিন্তু ৭০ রানের সে ইনিংসের পর আবারও ফর্ম হারালেন। কোনো ফিফটি নেই, উল্টো দুটো শূন্য।
২০১৫ বিশ্বকাপেও সেই ধারাটাই চলল। ৬ ম্যাচে মাত্র এক ফিফটি। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৫ রানের সে ইনিংসটি না থাকলে টুর্নামেন্টটা ভুলে যেতেই চাইতেন তামিম। সব মিলিয়ে তিন বিশ্বকাপে ২১ ম্যাচে ৪৮৩ রান। গড় ২৩! আইসিসির আরেক ওয়ানডে টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এর আগে তো খেলাই হয়নি।
তামিমের নামের সঙ্গে একেবারেই যায় না এ সংখ্যাগুলো। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একটি সেঞ্চুরি করে সে ধারা কাটানোর আশ্বাস দিচ্ছিলেন। কিন্তু মূল প্রতিযোগিতাতেই আবার ফর্ম হারিয়ে বসলেন তামিম। বড় টুর্নামেন্ট যেন এক ধাঁধা হয়ে উঠেছিল তামিমের জন্য।
সে ধাঁধাটা গতকাল কেটে গেল। ১২৪ বলে যখন সেঞ্চুরিটা পেলেন তামিম, তখন জমে থাকা একটা দীর্ঘশ্বাসও ফেলল বাংলাদেশের ক্রিকেট। এটা যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের মাত্র দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এত দিন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের একমাত্র সেঞ্চুরিটা ছিল শাহরিয়ার নাফীসের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১২৩ রানের ওই ইনিংস অবশেষে একটা সঙ্গী পেল। অবশ্য একটি যুক্তি আছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে সে ম্যাচের পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের এটাই যে প্রথম ম্যাচ!
আর বদলে যাওয়া তামিমকেও চিনল আইসিসির ইভেন্ট। ২০১৫ সাল থেকে এটি ওয়ানডেতে তাঁর পঞ্চম সেঞ্চুরি। এর আগের ৮ বছরে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি ছিল মাত্র চারটি!
কিন্তু এমন দিনেও কি নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে বাংলাদেশ? কেনিংটন ওভালে যে এ রান টপকানোর বেশ নজির আছে। স্বাগতিক ইংল্যান্ড নিজেরাই সে দুর্ভাগ্যের শিকার। ২০০৭ সালে ইংল্যান্ডের ৩১৬ রান ২ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে গেছে ভারত। আর গত বছর ঠিক ৩০৫ রান করেও লাভ হয়নি শ্রীলঙ্কার। জেসন রয়ের ১১৮ বলে ১৬২ রানের ঝড়ে ১১ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ করে দিয়েছে ইংল্যান্ড। ও বলা ভালো, সে ম্যাচটা কিন্তু ছিল ৪২ ওভারের!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।